সহকারী শিক্ষক
১৮ জুলাই, ২০২০ ১১:৪২ অপরাহ্ণ
কবিতাঃ " কালু মিয়া" । মোঃ সাইফুল ইসলাম সহকারী শিক্ষক (গণিত) সারমারা নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, ডাকঘরঃ রামরামপুর, উপজেলাঃ বকশীগঞ্জ,জেলাঃজামালপুর। মোবাইল নম্বরঃ 01722703727
“ কালু মিয়া ”
কালু! সে যতই গরীব হোক
নম্র স্বভাব অনেক ভালো লোক।
জমি গেছে নদী গর্ভে
সম্বল এখন জালী,
ছেড়া টোনার ভিতর কালু
রাখছে দিয়ে তালি।
মৎস বেঁচে যোগায় পেটের ভাত,
বাড়লে পানি মাথায় পড়ে হাত।
অসুখ হলে সেদিন তাহার
খাবার নাহি জোটে,
ছেলে - মেয়ে ক্ষুধার জালায়
মাটির ওপর লোটে।
রাত দুপুরে বৃষ্টি পড়ে
মেঘের গুরু গুরু,
কালু মিয়ার মৎস ধরা
তখন হল শুরু।
শ্রোতের টানে ভাটির দিকে গতি,
অন্ধকারে হারায় চোখের জ্যোতি।
নিত্য রাতে পানির ভীতর
অনেক সময় কাটে,
ভোর ফজরে আজান হলে
ফিরত নদীর ঘাটে।
অতি শ্রমে গর্তে ঢোকে চোখ
কালু! সে যতই গরীব হোক,
নম্র সভাব অনেক ভালো লোক।
পানির ভিতর ঠান্ডা লেগে
শরীর যেত ফুলে,
মাছের নেশায় রাতের গভীর
আপনি যেত ভূলে।
ভিজা লুঙ্গি চিপা দিয়ে
রোদে দারায় কালু,
অতি সরল বড় ভায়ের
নামটা ছিল জালু।
কষ্ট তাহার সারা জীবন সাথী,
সন্ধা রাতে ঘরে কুপির বাতি।
ঢেয়ের সাথে হেলে দুলে
আসত কাছে পানা,
বালার ভিতর মাছ ধরেছে
কালুর ছিলো জানা।
গভির রাতে মাছের আসায়
থাকত নদীর চরে,
চিন্তা ফিকির করতে তাহার
চোখের পানি ঝড়ে।
পানার তলে ঠেলে দিত জালী,
নিয়ে যেত পার্শে টিবি বালী।
বাইম, কেরালু, বেতল, পুইয়া
ছোট চিংড়ি পোনা,
যতন করে নিত তুলে
যেমন টুকরো সোনা।
হাতে পায়ে পচন ধরে নোখ
কালু! সে যতই গরীব হোক,
নম্র স্বভাব অনেক ভালো লোক।
প্রতি দিনই সকাল বিকাল
মাছের বাজার বসে,
ক্ষুধার জ্বালায় কালুর দেহের
শক্তি রোজই খসে।
মান কচুর বড় পাতায়
করত মাছের ভাগ,
জুগী চিংড়ি লাফা লাফি
উঠত কালুর রাগ।
ভেঙ্গে দিত লম্বা দুটি পা,
বলত হেসে কোথায় যাবি যা।
টেংরা মাছে কাটা দিত
শিংরের পোনা জম,
বাকি গুলি যাইত মরে
যাদের আয়ু কম।
পায়ে তাহার ধরত বড় জোকঁ
কালু! সে যতই গরীব হোক,
নম্র স্বভাব অনেক ভালো লোক।
পানি হতে অনেক অাগে
উঠছে কালু টানে,
অাগের মতই চাউল কিনে
বাজার থেকে আনে।
কাছের স্বজন ছক্কা মেরে
গেছে তারা জিতে,
শুধু কালুর শরীর কাপে
পৌষ-মাঘের শীতে।
তিরিশ বছর হয়ে গেল
হায়রে গরীব কালু,