Loading..

ম্যাগাজিন

২৮ জুলাই, ২০২০ ০৮:৩৯ অপরাহ্ণ

পানি সংরক্ষণ

কথায় আছে পৃথিবীর দুই তৃতীয়াংশ জল এবং বাকি টুকু স্থল। তবুও আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপদ জলের জন্য ভাবতে হচ্ছে, ভবিষ্যত প্রজন্মদের সুষ্ঠুভাবে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এবং জীবজগতকে সুস্থ্ পরিবেশ  টিকিয়ে রাখার জন্য।


সাধারণভাবে জলকে আমরা গৃহস্থালী – যেমন পানীয়, রান্না, স্নান, শৌচ কাজ, জামা কাপড় কাচা, বাসনপত্র ধোয়া, গৃহপালিত জীবজন্তু প্রতিপালন, কৃষিকাজ ও কল কারখানার কাজে ব্যবহার করি। দেখা যাচ্ছে কৃষিকাজে, খাদ্যশস্য উত্পাদনের জন্য কমপক্ষে শতকরা আশিভাগ (৮০%) জল, কলকারখানা ও তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য শতকরা দশ ভাগ (১০%) জল, পানীয় হিসেবে শতকরা পাঁচ ভাগ (৫%) জল ও বাকিটা অন্যান্য বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়।



পরিকল্পনাহীন ভাবে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করার দরুন জলের তল নেমে যাচ্ছে। কিভাবে তা সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা যায় তা আমাদের ভাবতে হবে। জল সমস্যার মধ্যে প্রধান সমস্যা হল তার গুণগতমান। কারণ পৃথিবীতে রোগের সংখ্যা যদি একশো হয় তাহলে তার মধ্যে আশিটি রোগের বাহক হচ্ছে জল। শিল্প কারখানায় ও মানুষের বসতিতে ব্যবহৃত অপরিশোধিত জল দূষিত করে চলেছে ব্যবহারযোগ্য জলকে। থাকছে ব্যাকটেরিয়া, লোহা, তামা, সীসা, পারদ দস্তা, ক্যাজমিয়াম, ফ্লোরাইড, কার্বোনেট ইত্যাদি এবং তাপবিদ্যুত কেন্দ্র থেকে নির্গত গরম জল। গুণগতমানে ভূগর্ভস্থ জলে আরও কয়েকটা যৌগ থাকছে যেমন- আর্সেনিক, ফ্লুরাইড।ব্যবহারযোগ্য জলকে সরকারী উদ্যোগে পরিশোধন করা ছাড়াও আমাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে বা সমষ্টিগতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে জল পরিশোধন ও সংরক্ষণের জন্য। বিশেষভাবে মহিলাদের সক্রিয় সহযোগিতার খুবই দরকার জলের সুষ্ঠু পরিচালন ও সংরক্ষণের জন্য।


ব্যক্তিগতভাবে ভূপৃষ্ঠ বা ভূগর্ভস্থ জলকে ফিটকিরি ও কলসীর মাধ্যমে পাতন প্রক্রিয়ার পদ্ধতিতে ও সমষ্টিগত ভাবে ধীরগামী পাতন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জল পরিশ্রুত করা সম্ভব। অবশ্য দুটি ক্ষেত্রেই ব্লিচিং পাউডারের মধ্য দিয়ে জীবানুমুক্ত করা হয়ে থাকে। ফ্লুরাইড বা আর্সেনিকের ক্ষেত্রে ফিটকিরির মাধ্যমে থিতানো বা ভূগর্ভস্থ জলকে সরাসরি পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার না করে, অপেক্ষা করে বাসী করে পান করা – তাতে আর্সেনিক বা ফ্লুরাইড দুটোর প্রভাবই অনেকাংশ কমে যায়।


ভূপৃষ্ঠ বা ভূগর্ভস্থ জল যা পাওয়া যাচ্ছে তার পরিমান কিন্তু অসীম বা অনন্ত নয়। জলের তল নেমে যাওয়া ছাড়াও আর্সেনিক, ফ্লুরাইড জাতীয় যৌগকল্পের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে ফলে ধান, গম এবং সব্জীতেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এখন দরকার ভূগর্ভস্থ জলের পুনর্নবীকরণ ও সংরক্ষণ। বৃষ্টির জল রাখার সুষ্ঠু পরিকল্পনা – কখনো পুকুর, কখনো ইঁদারা বা কুয়ো, কখনও ছোট ছোট বাঁধ দিয়ে, এমনকি বাড়ির ছাদের ক্ষেত্রটিকেও বৃষ্টিধারা সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। পাহাড়ি ঝরণার ক্ষেত্রে ছোট ছোট বাঁধের মাধ্যমে জলকে ধরে রেখে ভূগর্ভস্থ জলের পরিমান বাড়ানো যেতে পারে। এই রকম বিভিন্ন পদ্ধতিতে জলের সংরক্ষণ ও পরিচালনের মাধ্যমে জলের জীবনদায়ীনি শক্তিকে আমরা পরম্পরায় সচল রাখতে পারি।

পানি ছাড়া মানুষ অচল।সেই প্রাচীন কাল থেকেউ দেখা গিয়েছে, নদীর ধার ঘেঁষে সভ্যতা গড়ে উঠেছে, তা পানির সহজলভ্যতার জন্যই। আজ মানুষ বিশুদ্ধ পানি নিয়ে চরম সংকটে আছে।তাই পানির অপচয় রোধে সাবধান হওয়ার সময় এখনই!

পানির অপচয় রোধে আমাদেরকে সকল জায়গায় পানির ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে যেন প্রয়োজনাতিরিক্ত পানি খরচ না হয়।

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করলেও অনেক কাজে লাগে।

তাছাড়া বাড়িতে বা সকল জায়গায় পানির অপচয়নিরোধী পার্টস ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি