Loading..

ম্যাগাজিন

০৫ আগস্ট, ২০২০ ১০:৫৪ অপরাহ্ণ

পরিশীল আচরন,মোঃ আহসান হাবিব,এস পি পি এম উচ্চ বিদ্যালয়,ছাতক,সুনামগঞ্জ।

পরিশীলিত জীবনাচরণ নিয়ে

আসবে পরিপূর্ন সুস্থতা

মানুষ প্রতিনিয়ত পুরাতন ও নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এন্থ্রাক্স,জিকা নিপাহ,ওয়েষ্ট নিল ভাইরাস,সোয়াইন ফ্লু,বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। মানূশ সরাসরি পশু পাখির সংস্পর্শে না এলে অনেক সংক্রামক রোগের ঝুকি কমবে। তাই গবেষকরা মনে করেন প্রানী কিংবা মানবদেহে নতুন কোন রোগের সংক্রামণ ঘটল কিনা,তা নজরদারিতে রাখতে হবে নতুন ভাইরাসের খোজ পাওয়া মাত্র প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে

কিন্তু আমরা বিশ্ববাসী কতটা সতর্ক হয়েছি বা এখনো হচ্ছি অনেক ক্ষেত্রে সতর্কতার বিষয়গুলো আমলেই নেয়া হচ্ছেনা সভ্যতার চাকা যখন সম্মুখপানে চলছে তখন আমাদের জীবন যাপন,খাদ্যভ্যাসের কিছু কিছু বিষয় দেখে মনে হয় আমরা আদিম যুগে ফিরে যাচ্ছি। অনেক দেশে জ্যান্ত বানরের মাথা কেটে ফুটো করে ভেতরে মসলা মরিচ দিয়ে আমরা যেভাবে কদবেল খাই তেমন করে ওরা বানরের মগজ খাচ্ছে। কুকুর বিড়াল সাপ ও বিভিন্ন কীটপতঙ্গ ফুটন্ত পানিতে ছেড়ে দিচ্ছে,ধড়ফড়করা প্রনীগুলোকে ছুরি দিয়ে কেটে কেটে খাচ্ছে। এ বিষয়্গুলো দেখলে গা ঘিন ঘিন করে। আমরা কোথায় যাচ্ছি?পৃথিবীতে কি ভোজ্য খাদ্যের অভাব পড়েছে? কেন এসব জীবজন্তুকে এভাবে খেতে হবে?

হাদিসে কোন কোন জীবজন্তু ও পশুপাখির মাংস খাওয়া যাবেনা তা উল্লেখ আছে। যেসব প্রানীর দাত তীক্ষ্ণ ও ধারালো,নখও অনুরোপ এবং দাঁত ও নখ দিয়ে মাংস  ছিড়ে খায়,এসব প্রানীসহ কাক,চিল,প্যাচার মাংস খাওয়া হারাম। কীন্তু বৈজ্ঞানিক, সামাজিক  ও ধর্মীয় দৃষ্টিভংগিকে উপেক্ষা করে অন্য  দেশ ও জাতি,গোষ্ঠীর মানুষজনের দেখা দেখি আমরাও ওইসব জীবজন্তু ধরছি,শিকার করছি ,হাড়িতে চড়াচ্ছি এবং নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছি।

এধরনের বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যেও অনেক সচেতন মানুষ আছেন তারাভালোমন্দ বিচার বিবেচনা করেন। পদ্ধতিগতভাবে জীবনযাপন ও সুষ্ঠু খাদ্যভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। তাইত স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই হালাল খাদ্যের দিকে ঝুঁকছেন। বারাক ওবামা যকজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তখন তার স্ত্রী মিশেল ওবামা এক অনুষ্টানে ইসলামের হালাল খাদ্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। এবং সবাইকে তা অনুসরন করার ও অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

এখন পোশাকের ফ্যাশনেও পরিবর্তন আসছে,তার সবই কি গ্রহনযোগ্য? অনেকে সংক্ষিপ্ত পোশাক পরছেন,শরীরে উল্কি আকছে,ভ্রু উৎপাটন করছে। অনেকে পোশাক না পড়ে শরীরের বিশেষ অঙ্গে পেইন্টিং করে বেআব্রুভাবে জন সম্মুখে উপস্থিত হন। অনেক সমুদ্র  সৈকতে পোশাক পড়ে ঢুকার কোনো অধিকার নেই। ক্যালিফোনিয়ার ব্লাক্স বিচ,অস্ট্রেলিয়ার লেডি বিচ,গ্রীসের রেড বিচ অন্যতম। হায়রে নিয়ম হায়রে নিয়তি, আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি, কোন সভ্যতা আমরা লালন করছি?পৃথিবীর  অনেক দেশ আছে যেখানে মহিলাদের কোন গুরুত্ব নেই।

সভ্যসমাজে আমরা অনেকেই গৃহকর্মীকে ঠিকভাবে খেতে দিইনা। চরম শীতেও তাদের মেঝেতেই ঘুমাতে হয়।আর কুকুর বিড়ালের জন্য বেহিসেবি অর্থ অপচয় করছি, তাদের জন্য আলাদা ফোমের বিচানা,দামি খাবার,আরো কত আয়জন। অনেকেই আবার এদের বিছানায় বুকের ভেতর নিয়ে ঘুমাচ্ছে। এভাবে আর কত? পরিশুদ্ধ জীবনযাপন কি নির্বাসনে যাবে? আবার কি আদিম যুগে ফিরে যেতে  হবে?

বর্তমান যুগে মানুষের জীবনযাপন,শিল্পপ্রযুক্তির উৎকর্ষ ও সভ্যতার বর্তমান অবস্থা দেখে বোঝার উপায় নেই- প্রাগৈতিহাসিক যুগে শহর বন্দর গ্রাম হিসেবে কোন এলাকাকে আলাদা করা যেতনা। পুরো পৃথিবী ছিল জংলাকীর্ন এবং নদী নালা খাল বিলে ভরপুরমানুষ গাছের ওপরে বা মাটির ঘুহায় একসময় বসবাস করতো।পোশাক পরতোনা,উলংগ হয়া চলাফেরা করতো,ষীতে গ্রীষ্মে গাছের ছা;,লতাপাতা ও পশুর চামড়া দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতো।আগুনের ব্যবহার জানার আগে পশু পাখির মাংস কাচা খেতো। কৃষি কাজ শিখল,বন জংগলসাফ করে চাষাবাদের জমিও আবাসস্থল তৈরী করলো,আত্নমর্যাদা তৈরী করলো নিজের আব্রু রক্ষা করা শুরূ করলো। মানুষ খাদ্য সংগ্রহ করতে জীব জন্তুর সাথে লড়াইয়ের বিকল্প ছিলনা। ধীরে ধীরে মানুষ এগুলোকে অতিক্রম করেছে। প্রতিদিনই মানুষ একটু একটু করে উন্নত হয়েছে, নিজেকে শারিরীকভাবে সুস্থ ও নিয়োগ রাখতে এবং রোগবাহী জীবজন্তু এবং পশুপাখির সংশ্রব ও সংশ্লিষ্টতা কমিয়ে এনেছে। জীবন যাত্রাকে আরামদায়ক ও উন্নত করেছে। কিন্তু কেন জানি সভ্যতার অগ্রগতিকে আবার উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। মানব জাতির জীবন যাপঙ্কে বিপদসংকুল অস্থির ও কঠিন করে তোলা হচ্ছে। নিরোগ,সুস্থ ব্যাক্তি ও সামাজিক জীবনকে সংকটের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। লাখো বছরের মানবজাতির  অর্জংগুলো নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে।

পৃথীবির বিখ্যাত গবেষকগন মনে করেন ভবিষ্যতে প্রানী থেকে আরো অনেক ভাইরাস মানবদেহে ছড়াতে পারে। তাই আমদের উচিত আরো সতর্ক হওয়া। ভেকসিন আবিস্কার হলেও আমাদের পরিচ্ছন্ন ও মানবিক আচরনে আরো সচেষ্ট হওয়া উচিত। জীবন বাচাতে মানবতা বাচাতে সভ্যতা বাচাতে আমাদের পরিচ্ছন্ন,পরিশীলিত ও স্বীকৃত জীবনাচরন ছাড়া কোনপথ নেই।আসুন আমরা আরো পরিশীল হই,আচরনে উন্নত হই।

লেখক

মো আহসান হাবীব

সহকারী শিক্ষক

এস পি পি এম উচ্চ বিদ্যালয়

ছাতক,সুনামগঞ্জ।

  

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি