Loading..

খবর-দার

০৫ অক্টোবর, ২০২০ ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ

বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সম্মানিত সকল শিক্ষকের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা

শিক্ষক মানে প্রাণের গুরু আর্দশের প্রতীক তার দেখানো পথে হেঁটে-চলা, শিক্ষার্থীরা হল পথিক মায়ের কাছে শিশুর শিক্ষা জন্ম থেকেই শুরু মায়ের পরে শিক্ষক হলেন জ্ঞানের অন্য গুরু, তাইত শিক্ষক সত্যিই মহান

আজ ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস,  ১৯৪৬ সালে ইউনেস্কো শিক্ষকদের পেশাগত স্বাধীনতা, অধিকার এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও নৈতিক ভিত্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্ব শিক্ষক সনদ নামক একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে আর এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৬ সালের ৫ অক্টোবর ইউনেস্কোর উদ্যোগে প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তঃসরকার সম্মেলনে শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদা সংক্রান্ত বিশেষ সুপারিশমালা গ্রহণ করা হয়। সম্মেলন অনুষ্ঠানের তারিখটি অর্থবহ ও স্মরণীয় করে তোলার লক্ষ্যে ইউনেস্কোর সাধারণ সভায় ২৬তম অধিবেশনে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সাথে সাথে শিক্ষকতার মহান পেশাকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের ৫ তারিখ বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব শিক্ষক দিবসের প্রচলন করে, এরপর ১৯৯৫ সাল থেকে ৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদা, তাৎপর্য ও গুরুত্বসহকারে শিক্ষকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। যা জনসচেতনতা বৃদ্ধির সাথে সাথে শিক্ষকতা পেশার অবদানকেও স্মরণ করিয়ে দেয়। এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল বা ইআই (Education International - EI) তার সহযোগী ৪০১টি সদস্য সংগঠন এ দিবসটি পালনে মূল ভূমিকা রাখে। দিবসটি পালন উপলক্ষে ইআই প্রতিবছর একটি প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করে দেয়। এ দিবসে গোটা বিশ্বের সম্মানিত সকল শিক্ষককে অভিনন্দনসহ জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।

জাতি গঠন এবং জাতির উন্নয়নের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হলো শিক্ষা, শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষকের ভূমিকাই প্রধান। কারণ শিক্ষক হচ্ছেন শিক্ষা ব্যবস্থার চালিকা শক্তি, আর সেই শিক্ষকদের জন্য বছরে একটি দিন বাছাই করার মধ্য দিয়ে মর্যাদার স্বীকৃতি প্রকাশ পায়।

জ্ঞানই হচ্ছে প্রকৃত আলো, এই জ্ঞানের আলো ছড়ায় শিক্ষক, তাই শিক্ষকতা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম ও মহান আদর্শ পেশা হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে শিক্ষক হল মানুষ গড়ার কারিগর-মহাবীর আলেকজান্ডার বলেছিলেন, আমার জীবনের জন্য, আমার জন্মের জন্য আমি আমার পিতা-মাতার কাছে ঋনী আর আমার মনুষ্যত্বের জন্যে, কৃতিত্ব, বীরত্ব ও গৌরবের জন্য ঋনী হচ্ছি আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের কাছে

শিক্ষকের প্রধান কাজ হলো শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করা, একজন শিক্ষক শুধু  শ্রেণিকক্ষেই শিক্ষক নন তিনি শিক্ষক খেলার মাঠে, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে, বাচনভঙ্গীতে , আচার-আচরণে,পোশাক-পরিচ্ছদে, ন্যায়-পরায়নতায় এবং এর পাশাপাশি মানবিক বিপর্যয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিনির্মাণে শিক্ষকের ভূমিকা রয়েছে অনেক। একারণে একজন শিক্ষার্থী তাঁর একজন আদর্শ শিক্ষকের  বৈশিষ্ট্য গুলো মেনে চলে, তাই একজন শিক্ষক হল জাতীর রোল মড়েল একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীর জীবনে চলার পথে পরামর্শ দেবেন, ব্যর্থতায় পাশা দাঁড়িয়ে উৎসাহিত করবেন, সাফল্যের দিনে নতুন লক্ষ্য স্থির করে দেবেন সর্বোপরি একজন ভাল মানুষ হতে শেখাবেন।

শিক্ষকতা একটি মহান পেশা, শিক্ষক একটা জাতীর বিবেক এবং দেশে আলোকিত জাতি গঠন এবং মানবসম্পদ গড়ে তোলার কারিগর। একজন শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে কতটুকু ন্যায় নীতিবান, আদর্শবান, চরিত্রবান হবে কিংবা দেশ, জাতি, সমাজের প্রতি কতটুকু দায়িত্বশীল হবে কতটুকু দায়িত্ব পালন করবে এটি অনেকাংশেই নির্ভর করে তাঁর সুশিক্ষার উপর শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন, শিখন প্রক্রিয়ার উন্নয়ন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ বিনির্মাণে শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে পাঠ বুঝিয়ে দিলেই শিক্ষকের দায়িত্ব শেষ নয়, পাঠ্যবিষয়ের বাইরে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধের আলোকে শিক্ষার্থীর আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা শিক্ষকের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সর্বোপরি  দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে গতিশীলবেগবান ও সম্প্রসারণে শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি করতে পারে না তাই আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবসে আমরা শিক্ষক সমাজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই দেশের সুশিক্ষার উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখব।

লেখকঃ শামছুল হক

সহকারি শিক্ষক

সৈয়দপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ

সৈয়দপুর-নীলফামারী।