Loading..

প্রকাশনা

১৭ অক্টোবর, ২০২০ ০১:৩৯ পূর্বাহ্ণ

একগ্লাস দুধের মূল্য

দরিদ্র পরিবারের এক বালক স্কুলে যাওয়া আসার পথে বাড়িতে বাড়িতে টুকটাক কিছু জিনিস পত্র বিক্রি করে স্কুলের খরচ চালাতো।একদিন তার কাছে বেচার মতো কিছুই ছিলো না আর পকেটেও কোন টাকা ছিলো না।স্কুলে যাওয়ার পথে ক্ষিদা সহ্য করতে না পেরে সে সিদ্ধান্ত নিলো কোন এক বাড়িতে গিয়ে কিছু খাবার চাইবে।একটি বাড়ির দরজায় কড়া নাড়লো সে।এক মধ্যবয়সী মহিলা দরজা খুললে ছেলেটি একটু থতমত খেয়ে খাবার না চেয়ে এক গ্লাস পানি চেয়ে বসলো।

কিন্তু মহিলাটি ঠিকই বুঝেছিলেন যে বালকটি ক্ষুধার্ত।তিনি তাকে পানির পরিবর্তে একটি বড় গ্লাসে এক গ্লাস দুধ খেতে দিলেন।
 ছেলেটি সম্পুর্ন দুধটুকু এক চুমুকে খেয়ে বললো,“আমি আপনার কাছে ঋণী হয়ে গেলাম।““উঁহু,তোমার কোন ঋন নেই।“মহিলাটি বলে উঠলেন।আরো বললেন, “আমার মা আমাকে শিখিয়েছিলেন যে কোনো উপকারের বিপরীতে কখনো কিছু গ্রহন না করতে।যখন সত্যিকারের কিছুর প্রয়োজন হবে তখন ঠিকই আমি এর প্রতিদান পাবো।“

ছেলেটি তাকে আন্তরিক ভাবে ধন্যাবাদ জানিয়ে বিদায় নিলো।এই এক গ্লাস দুধে সে যেমন শারীরিক ভাবে শক্তি পেলো তেমনি ঈশ্বরের উপর তার বিশ্বাসটাও বাড়লো বহুগুণে।অনেক দিন পরে ততোদিনে মহিলাটি বৃদ্ধা হয়েছেন,মারাত্মক ভাবে অসুস্থ হয়ে গেলেন।স্থানীয় ডাক্তারেরা ব্যার্থ হয়ে তাকে শহরে পাঠালেন।তার রোগটা ছিলো একটু বিরল।স্পেশালিষ্টরা তার রোগ নিয়ে স্টাডি করার পর বিখ্যাত ডাঃহাওয়ার্ড কেলী কে নিয়োগ করা হলো।

হাওয়ার্ড কেলী ও ছিলেন সেই শহরেরই যেখান থেকে মহিলাটি এসেছিলেন। শহরের নাম শোনার পর কেলী দ্রুত মহিলাটিকে দেখতে গেলেন।তিনি তার কনসাল্টেশন রুমে ফিরে এসে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেন এই বৃদ্ধার বেঁচে থাকার জন্য তিনি তার সর্বোচ্চটুকু করবেন।সেই দিন থেকেই কেলী অত্যান্ত মনোযোগের সাথে তাকে খেয়াল রাখা শুরু করলেন।বহু সংগ্রামের পর ডাঃকেলী জয়ী হলেন।মহিলাটি সুস্থ হয়ে উঠলেন।

ডাঃ কেলীর হাত ঘুরে হাসপাতালের বিলটি যখন মহিলার কাছে এসে পৌঁছালো,মহিলাটি তখন ভয়ে ভয়ে কাগজ খুললেন।মনে মনে ভাবলেন,তার বাকী জীবনটা এই বিলের কিস্তি পরিশোধ করতে করতেই কেটে যাবে।শেষমেশ তিনি বিলটা দেখলেন।কাগজটির ডান কোণায় তার চোখ আটকে গেলো।সেখানে লেখা ছিলো"সম্পুর্ন বিলটি এক গ্লাস দুধের দামে পরিশোধিত হলো।"

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি