সহকারী প্রধান শিক্ষক
১৯ অক্টোবর, ২০২০ ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন ক্লাস
অনেক সময়ই দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে যোগ দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আপনি হয়তো ভাবছেন অমুক শিক্ষার্থী মন দিয়ে আপনার কথা শুনছে, কিন্তু আদতে হয়তো সে আপনার ক্লাসেই নেই। এই অনিশ্চয়তা দূর করতে শিক্ষার্থীদের নাম ধরে প্রশ্ন করতে পারেন। সেটি হতে পারে লেকচার সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন, কিংবা অন্য কিছু। পুরো ক্লাসে হয়তো আপনি পাঁচজন শিক্ষার্থীকে নাম ধরে প্রশ্ন করলেন। এতে বাকি শিক্ষার্থীরাও সচেতন থাকবে, যেকোনো সময় তাকেও আপনি প্রশ্ন করতে পারেন। এতে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে সম্পৃক্ততা বাড়বে।
বিজ্ঞাপন
বুদ্ধিদীপ্ত ক্লাস-লেকচার তৈরি করুন
স্বাভাবিক সময়ে অনেক শিক্ষকেরাই প্রতিটি ক্লাস দেড় ঘণ্টা করে নিয়ে থাকেন। করোনাকালে এই নিয়ম থেকে একটু সরে আসার চেষ্টা করুন। মোবাইল কিংবা ল্যাপটপের সামনে বসে দীর্ঘক্ষণ ক্লাস করে মনোযোগ ধরে রাখা শিক্ষার্থীদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে প্রতিদিন লম্বা সময় ধরে ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ব্যবহারের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিও দেখা দিতে পারে। সবকিছু বিবেচনা করে তাই এমনভাবে ক্লাস-লেকচার তৈরি করুন, যেন আপনার শিক্ষার্থীরাও মনোযোগ না হারায়, আবার আপনিও কাঙ্ক্ষিত উপায়ে ক্লাস পরিচালনা করতে পারেন।
দলগত কাজের ওপর গুরুত্ব দিন
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে অনেক শিক্ষকই শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ওয়ার্ক বা দলগত কাজ দিয়ে থাকেন। এতে এক দিকে যেমন শিক্ষার্থীদের দলগতভাবে কাজ করার দক্ষতা বাড়ে, তেমনি ক্লাসে সম্পৃক্ততাও নিশ্চিত করা যায়। অনলাইনেও এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। জুম অ্যাপের মতো বেশির ভাগ ভিডিও কনফারেন্সিং টুলেই ‘ব্রেকআউট রুম’ এর অপশন রয়েছে, যেখানে আপনি শিক্ষার্থীদের কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে দিয়ে আলাদা আলাদা কাজ দিতে পারেন। একটানা লেকচার দেওয়ার বদলে এই কৌশল অবলম্বন করলে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া শুনুন
লেকচার শেষে শিক্ষার্থীদের কাছে সেদিনের ক্লাস সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানার জন্য ৫-১০ মিনিট সময় বরাদ্দ রাখুন। এতে একই সঙ্গে দুটো কাজ হবে। শিক্ষার্থীরা আপনার লেকচার বুঝতে পারছে কি না সেটি বুঝতে পারবেন, আবার অংশগ্রহণমূলক (Participatory) ক্লাসও নিশ্চিত হবে।
শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিন
করোনার এই বিভীষিকাময় সময়ে অনেক শিক্ষার্থীই শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই দুর্যোগের সময়ে মানসিকভাবে তাদের পাশে থাকা শিক্ষকদের কর্তব্য। ক্লাস শুরুর আগে তাই নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিন। তাদের সমস্যার কথা জিজ্ঞেস করুন। শিক্ষক হিসেবে আপনি কীভাবে তাকে সহায়তা করতে পারেন তা জানতে চাইতে পারেন। এতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে চাঙা হবে এবং ক্লাসেও তুলনামূলক বেশি মনোযোগ দিতে সক্ষম হবে।
*সঞ্জয় বসাক : প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)
তথ্য সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো