লেখক শেখ হাসিনা

লেখক শেখ হাসিনা
‘খুব ভোরে
ঘুম থেকে উঠে সমবয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নদীর ধারে বেড়ানো, শীতের দিনে নদীর উষ্ণ পানিতে
পা ভেজানো আমার কাছে ভীষণ রকম লোভনীয় ছিল। নদীর পানিতে জোড়া নারকেল ভাসিয়ে অথবা কলাগাছ
ফেলে সাঁতার কাটা, গামছা বিছিয়ে টেংরা, পুঁটি, খল্লা মাছ ধরা। বর্ষাকালে খালে অনেক
কচুরিপানা ভেসে আসতো। সেই কচুরিপানা টেনে তুললে তার শেকড় থেকে বেরিয়ে আসতো কই আর বাইনমাছ।
একবার একটা সাপ দেখে খুব ভয় পেয়েছিলাম।’ লিখেছেন লেখক শেখ হাসিনা। তাঁর প্রধান পরিচয়
বঙ্গবন্ধুকন্যা এবং বাংলাদেশের সফলতম প্রধানমন্ত্রী। এই পরিচয়ের মধ্যে আড়াল হয়নি তাঁর
লেখক পরিচয়ও।
১৯৪৭ সালের
২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তাঁর জন্ম। বাংলার অপার উদার প্রকৃতির মাঝে
তাঁর বেড়ে ওঠা। হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি ও লোকঐতিহ্যের অন্যমত মুগ্ধ পৃষ্ঠপোষক
ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি তিনি।
শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনা
করেছেন। তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির একনিষ্ঠ পাঠক। ১৯৮৮ সালে সাপ্তাহিক রোববারে
‘স্মৃতির দখিন দুয়ার’ নামে একটি লেখা প্রকাশিত হলে অনেকে তার প্রশংসা করেন। ইতোপূর্বেই
তিনি স্বনামধন্য রাজনীতিক হিসেবে পরিচিতি। শেখ হাসিনার লেখকসত্তায় যুক্ত হয়েছে একদিকে
যেমন অগ্রসর রাজনৈতিক চিন্তা অন্যদিকে তেমন বাংলা শিল্পসাহিত্যের প্রতি প্রবল প্রেম।
শেখ হাসিনার আত্মজৈবনিক স্মৃতিকথামূলক লেখা বাংলাদেশের ইতিহাস চর্চার অনন্য দলিল হিসেবে
স্বীকৃত। তাঁর রাজনৈতিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক চিন্তার মধ্যে লুকিয়ে আছে আদর্শ বাংলাদেশ
গঠনের রূপরেখা। ফলে তিনি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে যেমন জনগণের কাছে দায়বদ্ধ, লেখক হিসেবে
তেমন দেশের ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধ।
এ পর্যন্ত
তাঁর রচনা ও সম্পাদনা মিলে ৪০টির মতো গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের
ইতিহাসে তাঁর অনন্য অবদান হলো, তাঁর সম্পাদনায় বঙ্গবন্ধুর উপর পাকিস্তানি গোয়েন্দা
প্রতিবেদন ধারাবাহিকভাবে গ্রন্থাকারে প্রকাশ। এছাড়াও তাঁর কারণে আমরা বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত
আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’ গ্রন্থাকারে পেয়েছি।
শেখ হাসিনার মৌলিক ও মননশীল বইয়ের মধ্যে ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ শেখ
হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ একটি বই। এখানে তিনি কন্যা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা
কথা তুলে ধরেছেন। উঠে এসেছে রাজনীতির প্রসঙ্গও। ‘ওরা টোকাই কেন’ বইটি বহুল আলোচিত
ও সমাদৃত। বইটি শিশুদের নিয়ে লেখা। বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনৈতিক বাস্তবতার নিরিখে
বঞ্চিত অবহেলিত শিশু-কিশোরদের কথা উঠে এসেছে। ‘সবুজের মাঠ পেরিয়ে’ বইটি লিখেছেন
কারাগারে বসে। পিতার মতো শেখ হাসিনাও জেলের দিনগুলো লেখালেখি করে কাজে লাগিয়েছেন। বন্দীজীবনের
কথা উঠে এসেছে। উঠে এসেছে সমকালীন রাজনীতি ভাবনা। এই প্রবন্ধের বইটি রচনাশৈলী ও
ভাষার কারণে লেখক শেখ হাসিনাকে আলাদা করে চেনা যায়। ‘বন্যাদুর্গত মানুষের সঙ্গে’ প্রবন্ধগ্রন্থে
১৯৮৮ সালের বন্যার দুর্ভোগের নানাচিত্র তুলে ধরেছেন।
‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ গ্রন্থটি শেখ হাসিনার বাল্যস্মৃতি, বেড়ে ওঠার
কথা, শৈশব, কৈশোর প্রভৃতি উঠে এসেছে। নিজের জন্ম ও গ্রামীণ প্রকৃতি নিয়ে তিনি
লিখেছেন: “আশ্বিনের এক সোনালি রোদ্দুর ছড়ানো দুপুরে...টুঙ্গিপাড়া গ্রামে আমার
জন্ম।...আমার শৈশবের স্বপ্ন-রঙিন দিনগুলো কেটেছে গ্রাম-বাংলার নরম পলিমাটিতে,
বর্ষায় কাদা-পানিতে, শীতের মিষ্টি রোদ্দুরে, ঘাসফুল আর পাতায় পাতায় শিশিরের ঘ্রাণ
নিয়ে, জোনাকজ্বলা অন্ধকারে ঝিঁঝির ডাক শুনে, তাল-তমালের বৈঁচির ঝোপে, দীঘির শাপলা
আর শিউলি-বকুল কুড়িয়ে মালা গেঁথে, ধুলামাটি মেখে, বর্ষায় ভিজে খেলা করে।”
শেখ হাসিনা সেই অল্প সংখ্যক বিরল রাষ্ট্রপ্রধানদের
একজন যিনি একাধারে লেখক ও রাজনীতিবিদ। তাঁর লেখকসত্তা নিয়ে তাঁরই শিক্ষক বাংলাদেশের
বাতিঘর জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন: ‘ত্রিশ বছর আগে শেখ হাসিনার প্রথম গ্রন্থ
ওরা টোকই কেন-এর ভূমিকা লিখেছিলাম আমি। তখন ভাবিনি রাজনীতির প্রবল দাবি মিটিয়ে তিনি
লেখালেখি অব্যাহত রাখতে পারবেন। কিন্তু আমাদের বিস্মিত করে দিয়ে রাজনীতির পাশাপাশি
লেখালেখিতেও শেখ হাসিনা সমান সক্রিয়তার পরিচয় দিয়ে চলেছেন। তাঁর রচনায় দারিদ্র্য দূরীকরণ,
শিক্ষাবিস্তার এবং গণতন্ত্রের প্রসার-জনমানুষের সাথে সম্পৃক্ত এই তিনটি বিষয় মূল প্রতিপাদ্য
হিসেবে ধরা দেয়।’
বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান
খান বলেন, ‘রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রনায়ক ও বিশ্বনেতা শেখ হাসিনা লেখক হিসেবেও বিশিষ্টতার
দাবিদার। এ পর্যন্ত প্রকাশিত তার গ্রন্থসমূহ ধারণ করেছে নিজের ঘটনাবহুল জীবনের ইতিহাস,
বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের অজানা কথা, দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসা, সর্বোপরি
একজন অসাম্প্রদায়িক-প্রগতিশীল মানুষের স্বপ্ন ও সংকল্প। শেখ হাসিনার রচনা-কুশলতা, ভাষাভঙ্গি,
গদ্যশৈলী প্রমাণ করে লেখক হিসেবেও তিনি অনন্য ও স্বতন্ত্র।’

মতামত দিন


সাইফুল ইসলাম
০৮ জানুয়ারি, ২০২১ ০৩:৩৮ অপরাহ্ণ অনেক সময়, শ্রম ও চিন্তা ভাবনা করে নির্মিত কনটেন্টটি সত্যিই অপূর্ব, শ্রেণি উপযোগি ও বাস্তব সম্মত হয়েছে। এটি শ্রেণিকক্ষে সঠিক ভাবে উপস্থান করলে শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবে। আপনার অনিন্দ্যসুন্দর কনটেন্ট এর জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা রইল।

মোঃ গোলাম কিবরিয়া
লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো। এ পাক্ষিকে আমার আপলোডকৃত কনটেন্ট দেখে লাইক ও রেটিংসহ আপনার মতামত দেওয়ার জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি।

মোহাম্মদ আমির হোসেন
লাইক ও পূর্ণ রেটিং সহ অভিনন্দন ও শুভকামনা। আমার এ পাক্ষিকের কনটেন্ট দেখে আপনার মূল্যবান মতামত, রেটিং ও লাইক প্রদান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।

শাহানাজ বেগম
পূর্ণ রেটিংসহ অভিনন্দন ।আমার এ পাক্ষিকের কনটেন্ট দেখে আপনার মূল্যবান মতামত ও রেটিং দেওয়ার জন্য বিনীত অনূরোধ করছি । মন্তব্য করুন

তাছলিমা আক্তার
পূর্ণ রেটিংসহ অভিনন্দন ।আমার এ পাক্ষিকের কনটেন্ট দেখে আপনার মূল্যবান মতামত ও রেটিং দেওয়ার জন্য বিনীত অনূরোধ করছি ।

সুমাইয়া আক্তার
লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ অসংখ্য শুভকামনা । আমার কনটেন্টগুলো দেখে আপনার মূল্যবান মতামত ও রেটিং প্রদান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।

মোঃ ইউনুছ আলী
লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ অসংখ্য শুভকামনা । আমার কনটেন্টগুলো দেখে আপনার মূল্যবান মতামত ও রেটিং প্রদান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।

মোসাঃশারমিন আক্তার
লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ অসংখ্য শুভকামনা । আমার কনটেন্টগুলো দেখে আপনার মূল্যবান মতামত ও রেটিং প্রদান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।

মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান
লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ অসংখ্য শুভকামনা । আমার কনটেন্টগুলো দেখে আপনার মূল্যবান মতামত ও রেটিং প্রদান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।

মোঃ নুরুল ইসলাম তরফদার
লাইক ও রেটিংসহ শুভকামনা। আমার কনটেন্টগুলো দেখে আপনার মূল্যবান মতামত ও রেটিং প্রত্যাশা করছি।ভাল থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।

মোঃ গোলাম ওয়ারেছ
সুন্দর উপস্থাপনার জন্য শুভকামনা এবং সেই সাথে পূর্ণ রেটিং । আমার নভেম্বর ২০২০ ইং ১ম পাক্ষিক কন্টেন্ট ও ব্লগ 'ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম (Wireless Communication System) দেখার ও রেটিংসহ মতামত প্রদানের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। ধন্যবাদ

মোঃ জালাল উদ্দিন
পূর্ণ রেটিংসহ শুভকামনা। আমার কনটেন্টগুলো দেখে আপনার মূল্যবান মতামত ও রেটিং প্রদান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।

হাবিবুর রহমান
পূর্ণ রেটিং সহ শুভকামনা । আমার কন্টেন্ট দেখার বিনীত অনুরোধ করছি এবং আপনার মূল্যবান লাইক কমেন্ট ও রেটিং প্রত্যাশা করছি।

দিলারা খানম
সুন্দর ও শ্রেনী উপযোগী কন্টেন্ট আপলোড করে বাতায়নকে সমৃদ্ধ করার জন্য লাইক , রেটিংসহ আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

শেখ মোঃ সোহেল রানা
পূর্ণ রেটিং সহ শুভকামনা । আমার কন্টেন্ট দেখার বিনীত অনুরোধ করছি এবং আপনার মূল্যবান লাইক কমেন্ট ও রেটিং প্রত্যাশা করছি।

মাহবুবুল আলম (তোহা)
শুভ কামনা স্যার,http://teachers.gov.bd/content/details/754865

মাহবুবুল আলম (তোহা)
শুভ কামনা স্যার,http://teachers.gov.bd/content/details/754865


মোঃ তারেক হাসান
খুবই চমৎকার। ধন্যবাদ ম্যাডাম। রেটিং সহ শুভকামনা রইল ।



মোছাঃ শিরীন সুলতানা
খুবই চমৎকার। ধন্যবাদ ম্যাডাম। রেটিং সহ শুভকামনা রইল ।

মো: মিজানুর রহমান
বাহ! খুবই চমৎকার। ধন্যবাদ ম্যাডাম। রেটিং সহ শুভকামনা রইল ।

সাম্প্রতিক মন্তব্য