Loading..

খবর-দার

১০ নভেম্বর, ২০২০ ১১:৪৪ অপরাহ্ণ

ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট ৭২ বছরের রওশন আলী
  • পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএর সান্ধ্যকালীন কোর্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম মো. রওশন আলী। ছবি : সংগৃহীত


লেখাপড়ার বয়স নেই। ইচ্ছা থাকলেই সফল হওয়া যায়। মো. রওশন আলী তা প্রমাণ করেছেন। বাহাত্তর বছর বয়সে পড়তে গিয়ে চমৎকার ফল করেছেন পাবনার এই সন্তান।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর সান্ধ্যকালীন কোর্সের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। এবার চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হলে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। 

রওশন আলীর বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের বান্নাইপাড়া গ্রামে। জন্ম ১৯৪৮ সালে। তিনি সুজানগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি এবং পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর সুজানগরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামে প্রতিষ্ঠিত শহীদ দুলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এরই মধ্যে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন। আরও পড়ার ইচ্ছা থাকলেও কর্মজীবনে প্রবেশ করায় সম্ভব হয়নি। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসর নেন রওশন আলী। এমন সময় সিদ্ধান্ত নেন এমএ পাস করবেনই তিনি। মূলত সেই ইচ্ছাশক্তি থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

রওশন আলীর দুই ছেলে। বড় ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বর্তমানে পাবনার একটি কলেজে বাংলা বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন একটি কলেজ থেকে লেখাপড়া শেষ করে চিকিৎসা পেশায় রয়েছেন। শেষ বয়সে এসেও সফলতার সঙ্গে এমএ পাস করায় তার স্ত্রী, ছেলেরা, নাতি-নাতনি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ স্থানীয়রা রওশন আলীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে রওশন আলী বলেন, জীবনে সফল হতে প্রত্যেকের পড়াশোনা সম্পন্ন করা উচিত। জ্ঞান থাকলে তবেই সফল হওয়া যায়। যে কোনো ব্যক্তি শিক্ষাজীবনে সাফল্য আনার পাশাপাশি দেশকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।


তিনি আরও বলেন, আজ আমার জীবনের সব সাধ পূর্ণ হয়েছে। এখন মরেও শান্তি পাব। সবার উদ্দেশে বলেন, ইচ্ছা থাকলে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়, তার প্রকৃত দৃষ্টান্ত আমি। এখন প্রযুক্তির নানা বিষয়ের সঙ্গে আরও পরিচিত হতে চান তিনি।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ধ্যাকালীন কোর্সের সমন্বয়কারী ড. মোহাম্মদ কামরুজ্জান বলেন, মানুষের চেষ্টার অসাধ্য কিছু নেই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকোর্সের ছাত্র রওশন আলী এটার যথার্থতা প্রমাণ করেছেন।