Loading..

ভিডিও ক্লাস

১৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ

বন্যরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে || ভাবসম্প্রসারণ || রায়হান উদ্দিন || বাংলা ২য় পত্র || BY NIDM

এ প্রেক্ষাপটে তত্কালীন স্বনামধন্য সাহিত্যিক ও ক্ষুরধার লেখক বঙ্কিমচন্দ্রের সহোদর সঞ্জিব চন্দ্রের কথা এসে পড়ে। সেই সময় তিনিও একজন উঁচু দরের সাহিত্যিক ছিলেন। কবি সঞ্জিব স্বাধীনচেতা ও গবেষণাধর্মী লেখক ছিলেন। তিনি সব সময় কিছু না কিছু নতুন চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। যাহোক, একবার সঞ্জিব বাবু বন বিহারের লক্ষ্যে আসামের “পালাম” শাল বনে গিয়েছিলেন। সেখানে যেয়ে তিনি লক্ষ্য করেন যে, সেখানে প্রকৃতির বৈচিত্রময় ও অপরূপ খেলা। ভয়াল বন্য পশুরা থাকলেও তিনি সাহসে ভর করে শালবনের কিছুটা ভেতরে গেলে তিনি তো অবাক, চারদিকে পশু-পাখির অবাধ বিচরণ এবং কল-কাকলীতে মুখরিত। বিচরণকারী পশু-পাখির এতটুকু ভয়-ডর নেই। এটাই বোধ হয় প্রকৃতির স্বাভাবিক ও সহজাত বৈশিষ্ট্য বলে তিনি মনে করলেন। এটি তো আর পশু-পাখির জন্য মানুষের গড়া সাফারী পার্ক বা চিড়িয়াখানা নয়? সবকিছু প্রকৃতি নিয়ন্ত্রিত, মানুষের নিয়ন্ত্রণে নয়। সাহিত্যিক শ্রী সঞ্জিব বাম দিকে পায়ে হাঁটা-সরু-রাস্তার মতো দেখলেন। তাই তিনি আর গভীরে না যেয়ে, শিমুল গাছের পাশ দিয়ে দূর্বাঘাস বিছানো গালিচা স্বরূপ পথ ধরে ডান দিকে মোড় নিয়ে এগুতে লাগলেন। হঠাত্ তার চোখে পড়লো টিলার উপর একটি কুঁড়ে ঘরে একজন যুবতী উপজাতি নব্য মা তার একটি ছোট বাচ্চাকে দুধ খাওয়াচ্ছে। কিন্তু মায়ের এদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই, সে তালপাতা দিয়ে পাখা বানাচ্ছে তো বানাচ্ছেই। এই বিরল বাস্তব ছবি দেখে সঞ্জিব বাবু অবাক হয়ে ঐ দিকে তাকিয়ে আছেন, কোন কিছু খেয়াল নেই। হঠাত্ একটি বনমোরগ কোঁক-কোঁ করে ডেকে উঠলে তাঁর আবেগপূর্ণ দৃষ্টি আবার নড়ে উঠলো। তিনি আর ওখানে না দাঁড়িয়ে সোজা বাড়ী ফিরে আসলেন। তবে একটি কথা তাঁর মনের আঙ্গিনায় খুবই উঁকি-ঝুঁকি দিতে লাগলো, তা হলো স্বাভাবিকতায় ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে যা কিছু হয়ে থাকে বা ঘটে তাই শাশ্বত সত্য ও চিরন্তন সুন্দর। তাই লিখলেন-