সহকারী শিক্ষক
২৩ জানুয়ারি, ২০২১ ১১:০১ অপরাহ্ণ
টক স্বাদের কাউফল: আমাদের দেশ থেকে অনেক ফল হারিয়ে যেতে বসেছে। এর মধ্যে কাউফল হলো একটি।
টক স্বাদের কাউফল:
আমাদের
দেশ থেকে অনেক ফল হারিয়ে যেতে বসেছে। এর মধ্যে কাউফল হলো একটি। নতুন প্রজন্মের
সঙ্গে এই ফলের পরিচয় তেমন নেই। টেনিস বলের মতো গোলাকার আকৃতির। কাঁচা অবস্থায় সবুজ
রংয়ের এবং পাকলে হলুদ বা কমলা রং ধারণ করে। স্বাদে টক জাতীয়। বনে-জঙ্গলে এর গাছ
বেশি দেখা যায়। তাই কাউফলকে অনেকে বুনো ফল হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। দেখতে অনেকটা
ডেফলের মতো যা স্বীকৃত ফল।
(ইংরেজি: Cowa (mangosteen) বা ম্যাঙ্গোস্টিন;
বৈজ্ঞানিক নাম Garcinia cowa Roxb বা Garcinia
kydia Roxb) এক ধরনের অপ্রচলিত টক স্বাদের ফল। এর অন্যান্য নাম
হলো- কাউয়া, কাগলিচু, তাহগালা,
ক্যাফল, কাউ-গোলা ইত্যাদি। এর গাছ
মাঝারি আকৃতির বৃক্ষ জাতীয়, ডালপালা কম, উপরের দিকে ঝোপালো। গাছের রঙ কালচে। সাধারনত জঙ্গলে এই গাছ দেখা যায়।
ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ ও পাকলে কমলা বা হলুদ হয়। ফলের ভেতর চার-পাঁচটি দানা
থাকে। দানার সাথে রসালো ভক্ষ্য অংশ থাকে, যা চুষে খেতে
হয়। কাউ খেলে দাঁতে হলদেটে কষ লেগে যায়। ফলের আকার লিচুর থেকে সামান্য বড় হয়।
আমাদের
দেশ ছাড়া ভারত, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ চীন, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম
ইত্যাদি দেশে কাউ গাছ দেখা যায়।
সারাদেশে
অল্পবিস্তর কাউফলের দেখা মেলে। তবে সিলেট, মৌলভীবাজার, লক্ষীপুর,
খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে কাউফলের দেখা মেলে বেশি। পিরোজপুর ও
বাগেরহাট অঞ্চলেও এ ফল জন্মে। অনেক গৃহস্থ বাড়ির লোকজন শখ করেও দুই একটি গাছ
লাগায়। প্রাকৃতিকভাবে বীজ থেকে এর চারা হয়ে থাকে। তবে এর বাণিজ্যিক আবাদ নেই।
লবন, মরিচের গুঁড়া দিয়ে
পাকা ফলের ভর্তা খেতে দারুণ স্বাদ। অনেকে আবার ছোট মাছের তরকারিতে কাউ ফল ব্যবহার
করেন। আদিবাসীরা সবজি হিসেবে কাউয়ের পাতা খেয়ে থাকেন।
বীজযুক্ত
কাউদানা রসালো ও মুখরোচক। ফল হিসেবে সরাসরি খাওয়া ছাড়াও জ্যাম-জেলি করেও সংরক্ষণ
করা যায়।
উপকারিতা:
কাউফলে
আছে প্রচুর ভিটামিন সি যা ত্বকের জন্য অধিক উপকারী। এছাড়া কপার, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ ও ম্যাগনেশিয়াম যা শরীরের হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
এতে আছে খনিজ ও পটাসিয়াম যা হৃদস্পন্দনে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ, স্ট্রোক ও হার্ট রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা করে। সর্দিজ্বর ও ঠাণ্ডা
প্রশমনে বিশেষ কার্যকর। এ ফল অরুচিও দূর করে।
কাউ গাছের ছাল খিচুনি রোগের জন্য এবং ফল আমাশয় ও মাথা ব্যথার জন্য
ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই গাছের কষ
রং ও বার্নিশ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।