Loading..

ভিডিও ক্লাস

১২ ফেব্রুয়ারি , ২০২১ ০৮:৪৩ অপরাহ্ণ

বঙ্গভূমির প্রতি-৮ম,মোঃ মোকলেছ উদ্দিন, নান্দিয়া সাঙ্গুন আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা।

বঙ্গভূমির প্রতি-৮ম,মোঃ মোকলেছ উদ্দিন, নান্দিয়া সাঙ্গুন আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা।অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত 'বঙ্গভূমির প্রতি ' কবিতাটি বুঝানোর জন্য শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে যেভাবে বক্তব্য দিতে পারেন এবং ছাত্রছাত্রীরা প্রবন্ধের মূলভাব অনুধাবন করতে পারে সেভাবেই তোমাদের জন্য শ্রেণিশিক্ষা পর্বে প্রবন্ধটির মর্মকথা তুলে ধরেছেন বাংলা বিষয়ের রোমানা আফরোজ। লেখক পরিচিতি: বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল ভাস্বররূপী নক্ষত্র ও প্রথম প্রথা বিরোধী লেখক মাইকেল মধুসূদন দত্ত ২৫ জানুয়ারি ১৮২৪ সালে যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবকাল থেকেই তাঁর কবি হবার বাসনা ছিল। তিনি জীবনের প্রারম্ভে ইংরেজি সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ইংরেজি সাহিত্য সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন। আর এ লক্ষেই বিলেত গমন করে ধর্মান্তরিত হন এবং নামের সাথে মাইকেল উপাধি যুক্ত করেন। কিন্তু কিছুকাল পর তাঁর এ ভ্রান্তি কেটে যায় এবং বুঝতে পারেন বাংলা সাহিত্যেই রয়েছে রতনের রাজি। এ পথ ধরেই পরবর্তীতে মাইকেল বাংলা সাহিত্যে স্বর্ণোজ্জ্বল আসন লাভ করেন। এই মহামানব ছিলেন পাশ্চাত্য কাব্য পুষ্ট, প্রতিবেশ-নিরপেক্ষ কবি কল্পনার অধিকারী। তিনি আধুনিক কাব্য ও নাট্য সাহিত্যের প্রবর্তক। তিনি "রত্নাবলী" নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করতে গিয়ে বাংলা নাটকের দীনতা অনুভব করেন। আর তখনই কলম ধরেন "শর্মিষ্ঠা" রচনায়। "মায়াকানন" তাঁর অসমাপ্ত সর্বশেষ বিয়োগান্তক নাটক। প্রহসনের মধ্যে রয়েছে- একেই কি বলে সভ্যতা, বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ। কাব্যের মধ্যে রয়েছে- ব্রজাঙ্গনা,বীরাঙ্গনা ও প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত "তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য"। তিনি বাংলা সনেটের সার্থক রূপকার;তাঁর সনেটের মধ্যে রয়েছে চতুর্দশপদী কবিতা। অবশেষে সাহিত্য সাধনার অবসান ঘটিয়ে তিনি ২৯ জুন ১৮৭৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। পাঠপরিচিতি: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে মাইকেল মধুসূদন দত্ত ভিন্ন ধারার এক প্রবাদ পুরুষ। তাঁর কয়েকটি বিখ্যাত গীতিকবিতার মধ্যে 'বঙ্গভূমির প্রতি' একটি। এ কবিতায় স্বদেশের প্রতি কবির গভীর মমত্ববোধ ও আবেগ প্রকাশ পেয়েছে। এখানে কবি হূদয়ের সকল অনুভূতি দিয়ে আপন করে নিতে চেয়েছেন স্বদেশকে। কারণ তিনি স্বদেশকে ভালবেসেছিলেন অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে। কবি নিজেকে ধন্য মনে করেছেন এ দেশে জন্ম নিয়ে। তাই তিনি জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে চান এ দেশের বুকেই। 'বঙ্গভূমির প্রতি' কবিতায় কবি স্বদেশকে মায়ের সাথে তুলনা করেছেন। কবি প্রথম জীবনে বঙ্গভূমি ও মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করে প্রবাসে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বিদেশি ভাষায় সাহিত্য রচনা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে কবি দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনা করেন এবং খ্যাতি অর্জন করেন। প্রবাস গমনে তাঁর ভ্রান্তির জন্য মায়ের কাছে অনুশোচনা করেন। দেশকে কবি মা হিসেবে কল্পনা করে নিজেকে ভেবেছেন তার সন্তান। তিনি মনে করেন মা রূপী মাতৃভূমি তাঁর এ ভ্রান্তি ক্ষমা করে দিবে। কারণ মা কোনদিন সন্তানের দোষকে মনে ধরে রাখে না। তিনি আরো বলেন, মা যেন তাকে মনে রাখে এবং কোলে স্থান দেয়। মা যেন তাঁকে নিরাশ না করে এবং ভুলে না যায়। মা তাঁর শ্রদ্ধার পাত্র, মা যদি বিরাগ হন তাহলে কবির সাধ মিটবে না। আবার তিনি নিজেই প্রকাশ করেছেন, তাঁর এমন কোন গুণ নেই যে দেশমাতৃকা কিংবা দেশের মানুষ তাঁকে স্মরণ রাখবে। তবুও তিনি দেশের স্মৃতিপটে অম্লান থাকতে চান। দেশমাতৃকার কাছে বর প্রার্থনা করেন মায়ের লালপদ্ম যেন মধুহীন না হয়ে যায়। যেকোন মূল্যে তিনি স্বদেশের স্মৃতিতে জ্বল জ্বল করে জ্বলতে চান। স্বদেশ তাঁকে মনে রাখবে কিনা এই নিয়ে তিনি শঙ্কিত। কিন্তু তিনি এই বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন যে, স্বদেশ যদি তাঁকে মনে রাখে তাহলে তিনি মৃত্যু দেবতাকেও ভয় পাবেন না। অর্থাত্, তিনি যদি স্বদেশের বুকে দৃঢ়চিত্তে পদার্পণ করতে পারেন তাহলে মৃত্যুকেও তিনি হাসি মুখে বরণ করে নিতে পারবেন। সবশেষে তিনি এই মিনতি জানিয়েছেন, স্বদেশের স্মৃতি-জলে যাতে তিনি ফুটে থাকেন সব সময়ের জন্য। মূলত, 'বঙ্গভূমির প্রতি' কবিতায় কবির প্রতিটি প্রণতি, মিনতি ও নিবেদন বঙ্গভূমিকে উদ্দেশ্য করে করা