Loading..

প্রকাশনা

০৫ এপ্রিল, ২০২১ ০৮:০৩ পূর্বাহ্ণ

নাকের পলিপাস” এর অপচিকিৎসা পরিহার করুন ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিন।
img
Muhammad Ahsan Habib

সহকারী প্রধান শিক্ষক

নাকের পলিপাস” এর অপচিকিৎসা পরিহার করুন ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিন।
নাকের পলিপাসঃ
পলিপাস নাসারন্ধ্রের ব্যাধি। এটি একটি অতি পরিচিত সমস্যা। এ ব্যাধি সাধারণত সর্দি লেগে থাকে ও প্রচুর হাঁচি হয়। বিভিন্ন কারণে এ ব্যাধি হতে পারে। নিম্নে এ ব্যাধির কারণ ও চিকিৎসা উল্লেখ করা হলো-
পলিপাস কিঃ
মানবদেহের রক্তের ইসোনোফিল ও সিরাম আইজিই’র পরিমাণ বেড়ে গেলে ঠান্ডা, সর্দি, হাঁচি লেগে থাকে এবং নাকের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়ে শ্লৈষ্মিক ঝিল্লিগুলোতে অ্যালার্জিক প্রদাহ সৃষ্টি হয়। ঝিল্লি থেকে আস্তে আস্তে এক ধরনের গোশতপিন্ড বাড়তে থাকে। প্রথমে এটা মটরশুটির মতো হয়। আস্তে আস্তে বড় হয়ে আঙ্গুরের মতো হয় এবং নাকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। এটিকে Nasal Polip বা নাকের পলিপাস বলে। এটি এক বা দুই নাকেও হতে পারে। এ রোগ মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের অধিক হতে দেখা যায়। অনেক সময় নাকের পলিপাস থেকে রক্ত বের হতে দেখা যায়। কোন কোন সময় নরম, নীল বর্ণ, মসৃণ শ্বেতময় ও পুঁজময় ক্ষত হতে দেখা যায়।
তবে নাক বন্ধ থাকা মানেই পলিপাস নয় এবং নাক বন্ধ অবস্থায় এর মধ্যে পিন্ডাকৃতির কিছু দেখলেই তা পলিপাস নয়। আবার সব ধরনের পিন্ডই পলিপাস নয়। এজন্য সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমে পলিপাস কি-না নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসা করা উচিত।
পলিপাসের প্রকারভেদঃ
নাকের পলিপাস দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন-
ক. ইথময়ডাল পলিপাস, যা এলার্জির কারণে হয় এবং দুই নাকে হয়। এটা মধ্যম বয়সে দেখা যায়।
খ. এন্ট্রোকোয়ানাল পলিপাস, যা ইনফেকশনের কারণে হয় এবং এক নাকে হয়। এটা শিশু বা কিশোর বয়সে দেখা যায়।
পলিপাস হওয়ার কারণঃ
নাসারন্ধ্রের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি হতে উদ্ভুত হয়। নাসিকা প্রদাহ বৃদ্ধির কারণেও হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অ্যালার্জিজনিত কিংবা দীর্ঘমেয়াদী নাক ও সাইনাসের প্রদাহই এর প্রধান কারণ। এক-তৃতীয়াংশ রোগীর ক্ষেত্রে সঙ্গে হাঁপানিও থাকে। দুই শতাংশ ক্ষেত্রে ঋতু পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জি দায়ী। অনেক সময় বংশানুক্রমিকও হতে পারে।
লক্ষণঃ
এ ব্যাধি নাসারন্ধ্রের অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়। বারবার হাঁচি, সর্দি থাকা, নাক দিয়ে টপ টপ করে পানি ঝরা, নাক বন্ধ থাকা, নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, মুখ হা করে নিঃশ্বাস নেওয়া, নাক চুলকানো, নাকে ব্যথা, মাথাব্যথা, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া, জ্বর জ্বর অনুভূতি, অরুচি, নাক ডাকা, শরীর শুকিয়ে যাওয়া ও কখনো নাকের গোশতপিন্ড বাইরে বের হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাঃ
রোগীকে এইসব Blood-এর IGE, Esonophil, ESR এবং X-ray-PNS, Nasopharonix করার পরে নিশ্চিত হয়ে লক্ষণ অনুযায়ী হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রযোগ করা যায়। হোমিওপ্যাথি রেজিঃ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করলে কোন প্রকার অস্ত্রপাচার ছাড়াই নাকের পলিপাস ও সাইনোসাইটিস থেকে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।
সর্তকতাঃ
সব ধরনের অ্যালার্জিটিক খাদ্য পরিহার, ঠান্ডা লাগা ও ধূলাবালি থেকে সাবধান থাকতে হবে। প্রথম অবস্থায় পলিপাসের চিকিৎসা না নিলে পরবর্তী সময়ে সাইনাসের ইনফেকশন হয়ে সাইনোসাইটিস ও এ্যাজমা দেখা দেয়।
নাকের পলিপাস চিকিৎসায় অবৈজ্ঞানিক ও অপচিকিৎসা পরিহার করুনঃ
অনেকে দ্রুত আরোগ্য করার নামে বা চটকদারী বিজ্ঞাপনে ফাঁদে পড়ে এসিড জাতীয় বা ক্ষতিকারক পদার্থ বা ক্ষতিকর তরল দ্রব্য বা ক্ষতিকর চূর্ণ পাউটার দ্বারা নাকের পলিপাস পুড়ানো বা নাকের পলিপাসে লাগানো বা অপসারণ করে। এ ধরনের চিকিৎসা বিজ্ঞানসম্মত নয় এবং এ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, ইউনানী, আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে এধরনের অপচিকিৎসা নেই। অপচিকিৎসক’রা নিজেদের স্বার্থে ও অতিরিক্ত আর্থিকভাবে লাভে বিভিন্ন প্যাথির নাম অবৈধভাবে নাম ব্যবহার করে প্রচার করে অপচিকিৎসা চালিয়ে আসছে। তা সম্পূরভাবে অপচিকিৎসা। যা কাম্য নয়। এধরনের অপচিকিৎসায় নাকের ঝিল্রির বিরাট ক্ষতি করে। ফলে নাকের হাড়ে ও ঝিল্লিতে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ক্ষত করে। ক্ষতিকারক ঘা হয়। নাকের ভিতরে পঁচন ধরে ও মাংস পঁচনের মত গন্ধ বের হয়। যা রোগীকে অপচিকিৎসার কুফল রোগীকে সাড়াজীবন বহন করতে হতে পারে। ফলে অপচিকিৎসায় রোগী মানসিক ও শারীরিক এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
নাকের পলিপাস নিরাময়ে কথিত চিকিৎসকগণ এসিড জাতীয় কিছু লাগিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। যা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক। ভাবতেও কষ্ট হয় এরকম অমানসিক কাজ চিকিৎসকগণ দ্বারা সম্ভব? গত কয়েক বছরে এরকম অসংখ্য রোগী যাদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সার্জারি ছাড়া সম্ভব নয়। অথচ নিয়মতান্ত্রিক ভাবে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও হোমিওপ্যাথি ঔষধ সেবনে নাকের পলিপাস রোগী স্বাভাবিক ভাবে নিরাময়যোগ্য।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি