Loading..

ভিডিও ক্লাস

০৬ এপ্রিল, ২০২১ ১১:৪০ অপরাহ্ণ

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির কৃষি পাঠ পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন।

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কৃষিশিক্ষা বিষয়ের পাঠ

পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ কলাকৌশল:

পেঁয়াজ বাংলাদেশের একটি অর্থকরী মসলা ফসল। দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই পেঁয়াজের চাষ হয়। জলবায়ুর পরিবর্তন, বৈরী আবহাওয়া এবং বিভিন্ন রোগ ও পোকার আক্রমণ ইত্যাদির কারণে বাংলাদেশে পেঁয়াজের জাতীয় গড় ফলন (৯.৭৩ টন/হেক্টর) বিশ্বব্যাপী গড় ফলন (১৭.২৭ টন/হেক্টর) অপেক্ষা কম। বর্তমানে দেশে ১.৭৯ লক্ষ হেক্টর জমিতে ১৭.৩৮ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে (বিবিএস,২০১৮)। 

জাত ও বৈশিষ্ট্য :

এ দেশে এখনও দেশী জাতের পেঁয়াজের চাষাবাদ হয়ে আসছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মসলা গবেষণা কেন্দ্র হতে বারি পেঁয়াজ-১ (শীতকালীন), বারি পেঁয়াজ-২, (গ্রীষ্মকালীন), বারি পেঁয়াজ-৩ (গ্রীষ্মকালীন), বারি পেঁয়াজ-৪ (শীতকালীন), বারি পেঁয়াজ-৫(গ্রীষ্মকালীন) ও বারি পেঁয়াজ-৬ (শীতকালীন) নামে ৬টি জাত মুক্তায়িত হয়েছে।

আবহাওয়া :

যে সমস্ত স্থানে খুব বেশি ঠাণ্ডা বা গরম পড়ে না এবং অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয় না সে সব স্থানে পেঁয়াজ এবং বীজ খুব ভালো হয়। যেখানে বছরে ৭৫ থেকে ১০০ সেমি বৃষ্টিপাত হয় সে সব স্থানে পেঁয়াজ ভালো হয়। বীজ উৎপাদনের জন্য পুষ্পায়নের সময় মোটামুটি ঠান্মা প্রয়োজন হয়। এ অবস্থায় ৪.৫ ডিগ্রি থেকে ১৪ ডিগ্রি সে তাপমাত্রায় প্রতিটি কন্দে অধিক সংখ্যক ফুল ও পুষ্ট বীজ গঠিত হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায়। এই ন্ন তাপমাত্রা উৎপাদন মৌসুমে বিশেষ করে জানুয়ারী - ডিসেম্বর মাসে বিদ্যমান থাকে।

মাটি : পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাযুক্ত গভীর, ঝুরঝুরে হালকা দো-আঁশ বা পলিযুক্ত মাটি পেঁয়াজ বীজ চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো। মাটির পি এইচ ৫.৮-৬.৮ থাকলে পেঁয়াজের কন্দ ও বীজের ফলন ভালো হয়। যেসব জমিতে পানি জমে সে সব জমিতে পেঁয়াজ বীজ মোটেও ভালো হয় না।

বীজ উৎপাদন পদ্ধতি : বীজের ফলন যতগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল তার মধ্যে বীজ উৎপাদন পদ্ধতি অন্যতম । দুটি মৌলিক পদ্ধতির মাধ্যমে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন করা যায়:

১.বীজ থেকে বীজ এবং

২.কন্দ থেকে বীজ :

উন্নত ও অধিক ফলনের জন্য কন্দ থেকে বীজ উৎপাদন পদ্ধতি সবচেয়ে উপযোগী হওয়ায় আমাদের দেশে সাধারণত কন্দ থেকে বীজ উৎপাদন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

কন্দ থেকে বীজ উৎপাদন

মাতৃকন্দ সংগ্রহ : সাধারণত উৎপাদিত পেঁয়াজ ফসল থেকে মাতৃকন্দ সংগ্রহ করা হয়। বীজ উৎপাদনের জন্য ৪-৬ সেমি. ব্যাসের কন্দ উপযুক্ত । বীজের বিশুদ্ধতার জন্য কন্দ উৎপাদন মৌসুমে সতর্কতার সাথে অস্বাভাবিক পত্রগুচ্ছ, রোগাক্রান্ত পেঁয়াজ গাছ ক্ষেত থেকে তুলে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। পরিপক্ব পেয়াজ কন্দ, চিকন গলা এবং রোগ মুক্ত পেঁয়াজের মাতৃকন্দ সংগ্রহ করতে হবে ।

মাতৃকন্দ সংরক্ষণ : পেঁয়াজ কন্দ উত্তোলনের পর এর পাতা ও শিকড় কেটে ৭-১০ দিন বায়ু চলাচল সুবিধা যুক্ত শীতল ও ছায়াময় স্থানে শুকিয়ে নিতে হবে । এরপর যথারীতি মাতৃকন্দের জন্য বাছাই ও শ্রেণীবিন্যাস করে। বায়ুময় গুদামে সংরক্ষণ করতে হবে। মাঝে মাঝে পচা বা শুকনা পেঁয়াজ বেছে সরিয়ে ফেলতে হবে।

রোপণ মৌসুম : পেঁয়াজের রোপণ সময়ের ওপর বীজ উৎপাদনের অনেক প্রভাব রয়েছে। বেশি আগাম অর্থাৎ অক্টোবরের মাঝামাঝি পেঁয়াজ রোপণ করলে পুষ্পদন্ড প্রতি কদমে ফুলের সংখ্যা অনেক কম হয়। আবার ডিসেম্বর মাসে রোপণ করলে গাছের বৃদ্ধি কম হয়। কদমে কম সংখ্যক ফুল আসে এবং পার্পল ব্লচ রোগ ও থ্রিপস পোকার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া বিলম্বে রোপণ করলে বীজ ফসল কালবৈশাখী ঝড় ও শীলা বৃষ্টিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে । তাই অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বর মাসের প্রথম হতে মাঝামাঝি পেঁয়াজের মাতৃকন্দ রোপণের উপযুক্ত সময়। এ সময়ে পেঁয়াজ কন্দ রোপণ করলে উক্ত বীজ ফসল খুব ভালো ফলন দেয়।

মাতৃকন্দ নির্বচান : পেঁয়াজের আকার ছোট হলে গাছ দুর্বল হয়। ফুল চিকন ও হালকা হয় এবং সহজেই বাতাসে ভেঙে পড়ে। তাছাড়া উক্ত ফুল কদমে ফুল কম ধরে ও ছোট হয় এবং বীজের ফলনও খুব কম হয়। বারি পেঁয়াজ-১ ও বারি পেঁয়াজ-৬ জাতের ৩০-৩৫ গ্রাম ওজনের কন্দ এবং তার ব্যাস যদি ৪.০ সেমি হয় তাহলে সবচেয়ে বেশি বীজ উৎপন্ন হয়। বারি পেঁয়াজ- ২, বারি পেঁয়াজ-৩, বারি পেঁয়াজ-৪ ও বারি পেঁয়াজ-৫ জাতের ক্ষেত্রে ৪০-৪৫ গ্রাম ওজনের কন্দ থেকে সর্বাধিক পরিমাণ বীজ উৎপাদন হয়।

জমি তৈরি : বীজ উৎপাদনের জন্য জমি ভালোভাবে প্রস্তুত করা দরকার যাতে মাটি নরম ও ঝুরঝুরে হয়। সাধারণত ৪-৫টি চাষ ও মই দিয়ে আগাছা বেছে মাটি ঝুরঝুরে করতে হবে। পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের জমিতে ১০ মি.×  ১.৫ মি. আকারের বেড করা প্রয়োজন। তিন বেড পরপর গভীর পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা রাখতে হবে । ভিজা মাটিতে পেঁয়াজ রোপণ করলে পচন রোগ হওয়ায় আশঙ্কা থাকে আবার জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রস না থাকলে গাছ সন্তোষজনকভাবে বাড়তে পারে না।

মাতৃকন্দ শোধন : প্রভেক্স-২০০ /আটোস্টিন/রোভরাল জাতীয় ছত্রাকনাশক দিয়ে মাতৃকন্দ শোধন করতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম প্রভেক্স-২০০ দ্বারা কন্দ ৫-১০ মিনিট চুবিয়ে রেখে শোধন করতে হবে।

মাতৃকন্দ রোপণ : সারি করে মাতৃকন্দ রোপণ করা উত্তম। সারি থেকে সারির দূরত্ব ২০-২৫ সেমি. এবং কন্দ থেকে কন্দের দূরত্ব ২০ সেমি. হওয়া প্রয়োজন। অল্প গভীরে রোপণ করা কন্দ থেকে পেঁয়াজের ফুল বড় হলে বৃষ্টি বা সেচের পানিতে মাটি সরে গিয়ে গাছ পড়ে যায়।

মাতৃকন্দ বীজের পরিমাণ : বীজ উৎপাদনের জন্য আমাদের দেশে স্পেসিং ও মাতৃকন্দের আকারের ওপর ভিত্তি করে এক হেক্টর জমিতে ২৫০০-৩৫০০ কেজি মাতৃকন্দের প্রয়োজন হয়।

সেচ প্রয়োগ : পেঁয়াজ বীজের ফলন বৃদ্ধির জন্য সঠিক সময়ে ও সঠিক মাত্রায় সেচ প্রদান করা প্রয়োজন। অনেক সময় কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একটি সেচ প্রদান করা হয়। যার ফলে ফলন কম হয় ও বীজের গুণগত মান হ্রাস পায়। পেঁয়াজের বৃদ্ধির চারটি পর্যায়ে সেচ প্রদান করা জরুরি। যথা (১) দৈহিক বৃদ্ধি পর্যায়, (২) পুষ্প দÐ বের হওয়ার সময় (৩) ফুল ফোটার সময় ও (৪) বীজের দানা গঠনের সময় প্রত্যেক ধাপে একটি করে মোট চারটি সেচ প্রদান করতে হবে। উক্ত চারটি ধাপে সেচ প্রদান করলে হেক্টর প্রতি পেঁয়াজের ফলন ৯০০-১০০০ কেজি পাওয়া সম্ভব, যা স্বাভাবিক ফলনের প্রায় ৩-৪ গুণ। একটি সেচের ক্ষেত্রে অবশ্যই পেঁয়াজের ফুল ফোটার সময় সেচ প্রদান কতে হবে। কারণ পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনের জন্য সেচ প্রদানে ক্ষেত্রে কিটিকাল প্রিয়ড হলো পেঁয়াজের ফুল ফোটার সময় এ সময় ফসল সেচবিহীন রাখা যাবে না।

সার প্রয়োগ : পেঁয়াজের বীজ ফসলের সময়কাল দীর্ঘ, ১৫০-১৬৫ দিন। সে জন্য বীজ উৎপাদনে সারের প্রয়োজন অনেক বেশি। 

বীজ উৎপাদন মাঠের স্বতন্ত্রীকরণ : পেঁয়াজ সাধারণত পর পরাগায়িত উদ্ভিদ, সেজন্য প্রতিবেশী পেঁয়াজ ক্ষেত থেকে পরাগায়িত পোকা ও বাতাসের মাধ্যমে পরাগায়িত হয়ে এর স্বতন্ত বৈশিষ্ট্য লোপ পেতে পারে । দুটি ভিন্ন জাতের পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের জন্য স্বাতন্ত্রীকরণ দূরত্ব ১০০০ মি. হওয়া বাঞ্ছনীয়। বীজের বিশুদ্ধতার জন্য এটি অপরিহার্য।

অনাকাক্সিক্ষত পেঁয়াজ গাছ উত্তোলন : পেঁয়াজের ফুল ফোটার পূর্বেই রোগাক্রান্ত চিকন বা সরু পুষ্পদÐসহ অপুষ্ট পেঁয়াজ গাছ ক্ষেত থেকে তুলে তা ধ্বংস করতে হবে। উন্নতমানের বীজ উৎপাদনের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । গাছের দৈহিক বৃদ্ধির পর্যায়ে ও ফুল ফোটার সময় এই কাজটি করতে হবে।

মাধ্যমিক পরিচর্যা : সেচের পর মাটির জো দেখে নিড়ানি দিয়ে মাটি আলগা করে দিতে হবে। পেঁয়াজের বীজ ফসল আগাছামুক্ত রাখা এবং পেঁয়াজের পুষ্পদণ্ড যাতে বাতাসে ভেঙে না পড়ে, সেজন্য ঠেকনার ব্যবস্থা করতে হবে। রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে।

পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনের বর্ডার ফসলের প্রভাব : পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন সম্পূর্ণভাবে পলিনেটরদের মোভমেন্ট/ভিজিট এর ওপর নির্ভর করে। কারণ পেঁয়াজ পরপরাগায়িত ফসল। পেঁয়াজের পলিনেশন প্রটেনড্রাই প্রকৃতির, তাই পেঁয়াজে পরপরাগায়ন হয়। এই পরপরাগায়ন ১০০ ভাগ বিভিন্ন পোকা যেমন- মাছি, হাউজফ্লাই, ব্লোফ্লাই, সিরফিড ফ্লাই ইত্যাদি দ্বারা হয়ে থাকে। পেঁয়াজের ফুল সাদা হওয়ায় ফুল ফোটার সময় অনেক ক্ষেত্রে পলিনেটিং পোকার ভিজিট কম হয়। সে ক্ষেত্রে পেঁয়াজের সাথে মৌরী, ধনিয়া, শলুক ইত্যাদি চাষ করে পলিনেটিং পোকাকে পেঁয়াজের পরাগায়নে আকৃষ্ট করা যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ১০ সারি পেঁয়াজের পর ২ সারি মৌরী, শলুক, ধনিয়া চাষ করলে পেঁয়াজের পলিনেশনকারী পোকার ভিজিট বৃদ্ধির কারণে পেঁয়াজের সীড সেট ভালো হয় এবং বীজের ফলন বৃদ্ধি পায়। শলুক ও মৌরী পেঁয়াজ রোপণের দিনেই বপন করতে হবে। ধনিয়া, পেঁয়াজ রোপণের ২০-২২ দিন পর বপন করতে হবে।

বীজ সংগ্রহ, শুকানো ও সংরক্ষণ : বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে বীজ সংগ্রহ করলে বীজের গুণগত মান ভালো হয়। পেঁয়াজের বীজ পরিণত হলে ফুলের মুখ ফেটে যায় এবং কালো বীজ দেখা যায়। শতকরা ২০-২৫ ভাগ কদমের মুখ ফেটে কালো বীজ দেখা গেলে তা সংগ্রহ করা প্রয়োজন। একই সময়ে পেঁয়াজের সব পুষ্প বীজ পরিপক্ব হয় না বিধায় ২-৩ বার বীজ তোলা হয়। পুষ্প নিচ থেকে কদমের ৫-৭ সেন্টিমিটার অংশসহ পরিপক্ব কদমগুলো তুলে নিতে হয়। এগুলো কয়েক দিন রোদে ভালোভাবে শুকানোর পর ঘষে খোসা থেকে বীজ আলাদা করে পরিষ্কার করা হয়। জাতভেদে প্রতি হেক্টরে প্রায় ৬০০-১২০০ কেজি পর্যন্ত বীজ উৎপাদন সম্ভব হয়। সংগৃহীত বীজ আরো ২-৩ দিন রোদে শুকিয়ে বীজের আর্দ্রতা ৬-৭% এ কমিয়ে ও ঠাÐা করে বায়ুনিরোধক পলিথিন ব্যাগে ভরে সিল করে টিন অথবা প্লাস্টিকের পাত্রে ভরে শুকনো জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে।

রোগবালাই

পার্পল ব্লচ: অলটারনারিয়া পোরি নামক ছত্রাক দ্বারা এই রোগ হয়ে থাকে। আক্রান্ত বীজ, বায়ু ও গাছের পরিত্যক্ত অংশের মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। এই রোগের আক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে গাছের পাতা বা পুষ্প ছোট ছোট পানি ভেজা দাগ দেখা যায়। পরবর্তীতে দাগগুলো ধীরে ধীরে বড় হয়। অনুক‚লে আবহাওয়ায় পাতা বা পুষ্প এক বা একাধিক দাগ পড়ে এবং তা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। সাধারণত আক্রান্ত পাতা ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে হলুদ হয়ে মরে যায়। পুষ্প ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হলে তা ভেঙে পড়ে, বীজ পেঁয়াজ পূর্ণতা প্রাপ্ত হতে পারে না এবং এতে বীজ উৎপাদন মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়।

দমন : সুস্থ, নীরোগ বীজ ও চারা ব্যবহার করতে হবে। আক্রান্ত গাছের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। রোভরাল নামক ছত্রাকনাশক কেজিপ্রতি ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করে বপন করতে হবে। রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম রোভরাল এবং ২ গ্রাম রিডোমিল গোল্ড মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর ৫-৬ বার গাছে স্প্রে করতে হবে।  

পোকমাকড়

থ্রিপস পোকা : আক্রান্ত পাত রূপালী রঙের অথবা পাতায় ক্ষুদ্রাকৃতির বাদামি দাগ বা ফোঁটা দেখা যাবে। পাতা শুকিয়ে বিকৃত হতে পারে। মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হলে কন্দের আকার ছোট ও বিকৃত হয়।

দমন : সাবান মিশ্রিত পানি ৪ গ্রাম/লিটার হারে প্রয়োগ করা যেতে পারে। নীল অথবা সাদা আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করে এই পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এক কেজি আধা ভাঙা নিমবীজ ২০ লিটার পানিতে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে উক্ত পানি (ছেঁকে নেয়ার পর) পাতার নিচের দিকে স্প্রে করা। আক্রমণ বেশি হলে জৈব বালাইনাশক স্পিনোসেড (সাকসেস) ১ লিটার পানিতে ১.২ মিলি হারে ৭-১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করে এদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে উপরে উল্লিখিত কীটনাশক বর্ণিত হারে ফুল ফোটার আগে স্প্রে করলে এ পোকার আক্রমণ কমানো যায়। কিন্তু ফুল ফোঁটার পর পোকার আক্রমণ দেখা গেলে বিকেল ৫টার দিকে স্প্রে করা যেতে পারে।