Loading..

খবর-দার

১৮ এপ্রিল, ২০২১ ০৮:০৮ পূর্বাহ্ণ

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব চ্যালেঞ্জের মুখে ২০৮০ প্রকল্প বাস্তবায়ন

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে চ্যালেঞ্জর মুখে পড়েছে চলমান ২ হাজার ৮০টি উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন। এর মধ্যে ৪১১টি প্রকল্প জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের যে লক্ষ্য রয়েছে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। করোনার প্রভাব দীর্ঘায়িত হলে চ্যালেঞ্জের মাত্রা আরও বাড়বে। সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) আওতায় এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। বরাদ্দ রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার ১৩ কোটি টাকা। মার্চের প্রথম সপ্তাহে অনুমোদন পায় আরএডিপি। কিন্তু এরই মধ্যে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। যদিও উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রাখতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কিন্তু অন্য প্রকল্পগুলোতে এমন প্রস্তুতি নেই।

এদিকে লকডাউনের প্রভাবে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, শেষ পর্যন্ত অনেক প্রকল্পেরই ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, করোনার প্রভাব অবশ্যই প্রকল্পগুলোতে পড়বে। তবে যেসব প্রকল্প সমীক্ষাসংক্রান্ত বা কারিগরি সহায়তা প্রকল্প সেগুলো হয়তো কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যেসব প্রকল্প শতভাগ বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সেগুলোর মধ্যে কিছু হয়তো শেষ করা যাবে। তবে বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই সমস্যা হতে পারে। আইএমইডির মাসিক অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত চার অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিু বাস্তবায়ন হয়েছে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি। চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে সংশোধিত এডিপির বাস্তবায়ন হার ৪১ দশমিক ৯২ শতাংশ। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৫ দশমিক ০৮ শতাংশ। এর আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৪৭ দশমিক ২২ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ছিল ৪৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে বাধ্য। বিশেষ করে শ্রমঘন এবং বৈদেশিক কর্মী সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর কাজ বাধাগ্রস্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। যদিও সরকারের প্রচেষ্টা রয়েছে উন্নয়ন কাজ যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, কিংবা কর্মসংস্থান ঠিক রাখতে প্রকল্পগুলো সচল রাখার। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দীর্ঘায়িত হলে বাস্তব পরিস্থিতির কারণেই এগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

ফলে স্বাভাবিক ভাবেই শেষ পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা থেকে যায়। তবে সামাজিক নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য খাতের করোনা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত প্রকল্পগুলোর কাজ চলমান রাখাটা জরুরি। সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) চলমান বিনিয়োগ প্রকল্পের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৪৬১টি। নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য নির্ধারিত ছিল ৩৮২টি প্রকল্প। সংশোধিত এডিপিতে বিনিয়োগ প্রকল্পের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৬৩৯টি এবং সমাপ্তির জন্য নির্ধারণ করা হয় ৪৪১টি। চলমান এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ফাস্টট্র্যাকভুক্ত মেগা প্রকল্পও।

মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক ড. সৌকত আকবর।