Loading..

খবর-দার

১৮ এপ্রিল, ২০২১ ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ

চিত্রনায়ক ওয়াসিম আর নেই

বাংলা সিনেমার সোনালি দিনের নায়ক হিসেবে পরিচতি ওয়াসিম আর নেই। গতকাল শনিবার রাত ১২টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

ওয়াসিমের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াসিম ভাই অসুস্থ ছিলেন। ঠিকমতো হাঁটতেও পারতেন না। বাসায় বিছানায় শুয়ে-বসে দিন কাটত তার। শনিবার রাতে তার হার্ট অ্যাটাক হয়।

ঢাকাই সিনেমার যে ক'জন নায়ক রাজত্ব করেছেন তাদের মধ্যে ওয়াসিম অন্যতম। প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক এসএম শফীর মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে অভিষেক হয় ওয়াসিমের। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে তার পরিচালিত 'ছন্দ হারিয়ে গেল' চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেন। আর নায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে মহসিন পরিচালিত 'রাতের পর দিন' সিনেমার মাধ্যমে।

১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে এসএম শফী পরিচালিত 'দি রেইন' ৪৬টি দেশে মুক্তি পায়। ছবিটি ওয়াসিমকে অভিনেতা হিসেবে পৌঁছে দেয় অনন্য উচ্চতায়। ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ঢাকার চলচ্চিত্রে প্রচণ্ড দাপট ছিল ওয়াসিমের। সাহসী নায়ক বলা হতো তাকে। আবার কেউবা বলতেন ওয়াসিম মানে বাহাদুর নায়ক। ওয়াসিম ছিলেন ফোক ফ্যান্টাসি আর অ্যাকশন ধারার ছবির অপ্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেতা। পোশাকি, সামাজিক, গ্রামীণ, প্রেমের গল্প, মারদাঙ্গা সব ধরনের ছবিতেই তার নাম।

১৫২টির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন ওয়াসিম। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো- দ্য রেইন, ডাকু মনসুর, জিঘাংসা, কে আসল কে নকল, বাহাদুর, দোস্ত দুশমন, মানসী, দুই রাজকুমার, সওদাগর, নরম গরম, ইমান, রাতের পর দিন, আসামি হাজির, মিস লোলিতা, রাজ দুলালী, চন্দনদ্বীপের রাজকন্যা, লুটেরা, লাল মেম সাহেব, জীবন সাথী, রাজনন্দিনী, রাজমহল, বিনি সুতার মালা ও বানজারান।

১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ মার্চ চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন ওয়াসিম। ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বডি বিল্ডিংয়ের জন্য 'মিস্টার ইস্ট পাকিস্তান' খেতাব অর্জন করেছিলেন।

ওয়াসিম বিয়ে করেছিলেন চিত্রনায়িকা রোজীর ছোট বোনকে। তাদের দুটি সন্তান হয়, এক ছেলে ও এক মেয়ে। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে তার স্ত্রী মারা যান। মেয়ে বুশরা আহমেদ ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে ১৪ বছর বয়সে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। আর ছেলে দেওয়ান ফারদিন লন্ডনের কারডিফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে এখন আইন পেশায় নিয়োজিত।