Loading..

উদ্ভাবনের গল্প

০৬ মে, ২০২১ ০২:৪৮ অপরাহ্ণ

নিমাই চন্দ্র মন্ডল, সহকারী শিক্ষক, পলাশী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মনিরামপুর, যশোর।

                     কোভিড-১৯ অতিমারী ত্রাণকার্য

বর্তমান কালে আমরা সাক্ষী হয়ে রইলাম একটি অভূতপূর্ব ঘটনার। মানবসভ্যতার ইতিহাস এমনটি আগে কখনো ঘটেনি। একটি ক্ষুদ্র জীবাণু বা ভাইরাস- নাম নভেল করোনা ভাইরাস, এমন মারক সংক্রমণ ছড়িয়ে দিল পৃথিবীময় যে, মানবসভ্যতার চাকা থমকে গেল। একযোগে পৃথিবী প্রায় সবকটি দেশ ঘোষণা করল ‘লকডাউন’, গৃহবন্দী হলো মানুষ, বন্ধ হলো কল-কারখানা, আচমকা বিশ্বের অর্থব্যবস্থা অচল হয়ে গেল। এর আগেও পৃথিবীতে মহামারী হয়েছে, কিন্তু সারা বিশ্ব জুড়ে এমন সংক্রমণ এবং তার জন্য এরকম ‘লকডাউন- রুপ প্রতিরোধ কোনদিন দেখা যায়নি। অভুতপূর্ব অবস্থার সন্মুখীন হয়ে যে সাধারণ জনজীবন ব্যাহত হলো, টান পড়ল মজুত ভাঁড়ালে,বিশেষ করে নিন্মবিত্ত ও শ্রমিক সাধারণের ওপর, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য কন্যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রাণকার্যে নেমেছিল। পুরো মাত্রায় সুরক্ষাবিধি মেনে, যথাযথ দূরত্ব বজায় রেখে ত্রাণ বিলি করা হয়েছে।

ক্রমগত মৃত্যুমিছিল আর মৃত্যু- আতঙ্কের ততোধিক ত্রাস। সহায়তা, সামাজিকতা, বিলাপ- এসকল নিতান্তই অচল। তখন চারিদিকেই শুধু আত্নরক্ষার মরিয়া ছত্রভংগ সব জনপদের বীভৎসতা। ঠিক আজকের মতোই, আসন্ন মৃত্যুভয় যেন রাতারাতি কোন এক মহাস্বার্থপর অচেনা পৃথিবীকে উপড়ে এনে হাজির করেছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর অগাধ বিশ্বাসসম্পন্ন এই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

২০১৯, ডিসেম্বরের শুরুর দিক। অত্যাধুনিক স্পধিত পৃথিবী হঠাৎই আবার স্তব্ধ হলো। আবার প্রকান্ড ছন্দঃপতন। এবার আর সীমিত মহামারী নয়, সর্বপ্লাবীত অতিমারী। আবার আতঙ্ক- স্তব্ধ পৃথিবী। পূর্বচীনের য়ুহান নগরী থেকে মারণ-ভাইরাস ‘কেভিড ১৯’ সংক্রমিত হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে, এখনো ছড়াচ্ছে, ছড়িয়ে পড়া হয়তো ক্রমশ চলতেই থাকবে, করোনার টিকা আবিস্কারের আগে পর্যন্ত। প্রকৃতিতে হয়তো সবসময়ের জন্য বাসা বেঁধে থেকে যাবে ‘করোনা’, আরো কোটি কোটি ভাইরাসের মতোই। মানুষকে কেবল প্রতিষেধক টিকাকারণের দ্বারাই করোনাপ্রতিরোধী করে তুলতে হবে। হয়তো ততদিন ধরেই চলবে এই আতঙ্ক, এই মৃত্যুমিছিলও, কে বলতে পারে। এখনো এই মারণ- কীটের চরিত্র জানার অধিকাংশই বাকী। তাই অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে করালতম পরিণতির জন্য-এটাই বিচাক্ষণ রণনীতি। মানুষ নিরুপায়, গৃহবন্দী। রাতারাতি সকলেই শাসন- অনুশাসন, ভোগ-কর্তৃত্ব, বিলাশ- স্বপ্ন, অহং- দর্প অচল মুদ্রার মতো নিজের কাছেই মুলতুবি রেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ হয়ে পড়েছেন। অনৃত উপাধির পোশাক ছেড়ে সারা পৃথিবীই যেন নিজ নিজ মুখ দেখছে নিজেরই আসল আরশিতে। এ এক অভাবনীই দুঃসময়। নিখিল বিশ্বচরাচরে কিন্তু আজ এক বহু ঈন্সিত সুনীল-স্বচ্ছতা, অনাঘ্রাত বসন্তের সুগত নির্মলতা প্রকৃতি অর্গলমুক্তির, দূষণমুক্তির স্বাদ নিচ্ছে প্রাণভরে। এত প্রতুল্য সুমহান সৌন্দর্য থাকা সত্বেও মানুষ গৃহবন্দী, প্রাণভয়ে চুপ, অনাগত আতঙ্কে পুরোপুরি অসহায়। বিশ্ব জুড়ে কাফু, লকডাউন-এর অচলাবস্থায় মন্দগতিতে এ কেবল এক বেঁচে থাকার বোবা যুদ্ধ।

এই অতিমারীর চরিত্র আর সকলের বুঝে ওঠার আগেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেবাব্রতী চোখে তা ধরা পড়ল। কোমর বেঁধে নেমে পড়লেন ত্রাণকার্য বা সেবাযোগের মধ্যে কোনো পার্থক্য করেননি।