Loading..

মুজিব শতবর্ষ

১১ মে, ২০২১ ১০:৩২ অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বিক্রি: ভূমি অফিসের দুই কর্মকর্তাকে বদলি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ভূমিহীনদের জন্য মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে দেওয়া জমি ও ঘর বিক্রি করার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় দুই ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে (নায়েব) নাসিরনগর উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে।

বদলি করা নায়েবরা হলেন, উপজেলার পাকশিমূল ইউনিয়ন তেলিকান্দি ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুছ ও শাহাজাদাপুর ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা হারুন মিয়া।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশ্রাফ আহমেদ রাসেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ ওঠার পরই সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের বিষয়টি অবগত করেন। দুই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েবকে জেলার নাসিরনগর উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অনুযায়ী অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে বিষয়টি সঠিক প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় প্রথম ধাপে ১০২ পরিবার পান দুই শতক জমিসহ পাকা ঘর। এর মধ্যে উপজেলার শাহাজাদাপুর এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে দুই শতক জমিসহ ৯০ নম্বর ঘরটির বরাদ্দ দিয়ে আব্দুল হাশিম ও তার স্ত্রী সেলিনা বেগমের নামে যৌথ দলিলও সম্পাদনা করে উপজেলা ভূমি অফিস। আব্দুল হাশিম মিয়া উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের রাণীদিয়া গ্রামের গোলাম মোস্তফা মিয়ার ছেলে এবং তিনি বিত্তশালী। তবে এই জায়গাসহ ঘর বরাদ্দ পেয়ে দলিলের বিষয়ে জানেন না তিনি।

আব্দুল হাশিম মিয়ার নামে রেজিস্ট্রি করা ঘর ও জমি দুই লাখ টাকায় উপজেলা সদরের বিধবা সাফিয়া বেগম ও তার স্বামী পরিত্ত্যক্তা মেয়ে রুনা বেগমের কাছে বিক্রয় করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ইউনিয়ন ভূমি অফিক কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুছ ও হারুন মিয়ার বিরুদ্ধে। বিষয়টি সাফিয়া বেগম ও তার মেয়ে রুনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) জানান। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করলে অভিযুক্ত দুই নায়েবকে বদলি ও তদন্ত শুরু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

ভুক্তভোগী সাফিয়া বেগম ও তার মেয়ে রুনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভূমি অফিসার আব্দুল কুদ্দুছ আশ্রয়ণল্পের একটি ঘর দুই শতক জায়গাসহ দুই লাখ টাকায় আমাদের কাছে বিক্রি করেছেন। তিনি বলেছিলেন এই ঘর যিনি পেয়েছেন অরুয়াইলের রাণীদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি শাহাজাদাপুর এলাকায় এত দূরে বসবাস করতে আসবেন না। তাই ঘর-জমি মিলে অন্তত ১০ লাখ টাকার সম্পদ মাত্র দুই লাখ টাকায় তিনি আমাদের দয়া করে দিচ্ছেন। দলিলে আব্দুল হাশিম মিয়ার ছবি কেটে ও নাম পরিবর্তন করে সেখানে আমার ছবি ও নাম বসিয়ে নতুনভাবে দলিল সম্পাদনা করে দেবেন বলে জানান। তার কথা বিশ্বাস করে দেড় লাখ টাকা তাদের দিয়েছি।

এদিকে শাহাজাদাপুর এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৯০ নম্বর ঘরের দলিলের প্রকৃত মালিক অরুয়াইলের রাণীদিয়া গ্রামের আব্দুল হাশিম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আল্লাহ আমাকে সহায়-সম্পত্তি কম দেননি। আমি সরকারি ঘর চাইতে যাবো কেন? এলাকায় আমার একটা মর্যাদা আছে। আমার এক ছেলে রাসেল মাহমুদ জেলার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পদে চাকরি করছেন। কয়েক মাস আগে বাড়ির পাশের একটি খাস জমি লিজ-বন্দোবস্ত আনতে আমার ছবি, ভোটার আইডি কার্ড ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমার ছেলে নিয়ে গিয়ে কুদ্দুছের কাছে দিয়েছিল। আমি দলিল করতেও যাইনি, এই ঘর-জমি নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’

এ বিষয়ে পাকশিমুল (তেলিকান্দি) ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) আব্দুল কুদ্দুছ সাংবাদিকদের  বলেন, ‘সাফিয়া বেগম ও তার মেয়ে রুনা বেগম আমার কাছে সরকারি ঘর চেয়েছিলেন। তবে আমি তাদের কাছ থেকে কোনও টাকা-পয়সা নেইনি। তারা মিথ্যা কথা বলছেন। আমি তাদেরকে শাহাজাদাপুর এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে নিয়ে গিয়েছিলাম হারুন মিয়ার কথায়। রুনা বেগম ও তার মা সেখানকার আশ্রয়ণ প্রকল্প চেনেন না। এই জন্য তাদের পথ দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলাম। তাদের সেখানে রেখে সঙ্গে সঙ্গে আমি চলে আসি।’

শাহাজাদাপুর ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা হারুন মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাফিয়া বেগম ও রুনা বেগম এখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকতে পারবেন অরিজিনাল মালিক আব্দুল হাশিম মিয়ার ওয়ারিশ পরিচয়ে। কিন্তু তারা মা ও মেয়ে তাদের নামের দলিল চান। তাদের কাছ থেকে আমি একটি টাকাও নেইনি। তাদের অভিযো

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি