Loading..

খবর-দার

০১ জুন, ২০২১ ০৩:২৬ অপরাহ্ণ

সমালোচনাকে কখনোই খুব বেশি প্রাধান্য দিবেন না ...'

'সমালোচনাকে কখনোই খুব বেশি প্রাধান্য দিবেন না ...'


একদিন বাবা ও ছেলে তাদের পোষা গাধাটিকে বিক্রি করার জন্য হাটের পথে রওনা দিল। বাবা, ছেলে ও গাধা তিনজনই হেঁটে যাচ্ছে।


কিছুদূর যাওয়ার পর একজন লোক তাদের দেখে বলল, এরা কত বোকা! গাধা থাকতে হেঁটে যাচ্ছে। একজন তো গাধার পিঠে উঠে আরাম করে যেতে পারে।


লোকটির কথা শুনে বাবা তার ছেলেকে গাধার পিঠে উঠিয়ে দিলেন। ছেলে গাধার পিঠে আর বাবা হেঁটে চলেছেন। কিছুদূর যাওয়ার পর আর একজন বলল, কী বেয়াদব ছেলে! নিজে গাধার পিঠে আর বুড়ো বাপকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।


এ মন্তব্য শোনার পর বাবা ও ছেলে স্থান পরিবর্তন করল। এবার বাবা গাধার পিঠে উঠল আর ছেলে হেঁটে চলল। আরও কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর আর এক ব্যক্তি মন্তব্য করল, কী নিষ্ঠুর পিতা! নিজে গাধার পিঠে উঠছে আর মাসুম বাচ্চাটিকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।


এ মন্তব্য শোনার পর বাবা ও ছেলে দুজনই গাধার পিঠে উঠল। গাধা চলতে শুরু করল। কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর তাদের দেখে আর একজন আক্ষেপ করে বলল, কী অত্যাচার! কী অবিচার! একটি গাধা তার উপর দুটি লোক!


বাবা ও ছেলে পড়ল মহাসমস্যায়। কী মুশকিল! গাধার সাথে হেঁটে গেলে দোষ! ছেলে উঠলে দোষ! বাবা উঠলে দোষ! দুজন উঠলে দোষ! এখন কী করা যায়? 


বাবা ও ছেলে মিলে নতুন বুদ্ধি বের করল। তারা বাঁশ ও রশি যোগাড় করল। তারপর সেই রশি দিয়ে গাধার চার পা বাঁধল। তারপর পায়ের ফাঁক দিয়ে বাঁশ ঢুকিয়ে দিল। বাবা সামনে আর ছেলে পিছনে বাঁশ কাঁধে নিয়ে হাঁটতে শুরু করল। গাধা রইল ঝুলে। গাধাকে কাঁধে নিয়ে পুল পার হওয়ার সময় গাধা ভয় পেয়ে নড়ে উঠল। বাবা, ছেলে ও গাধা পড়ে গেল খালে। গাধার মেরুদন্ড ভাঙল। বাবা ও ছেলের ভাঙল পা। গাধা আর বেঁচা হলো না। বাবা ও ছেলে আহত অবস্থায় বাড়ি ফিরে এলো।


উপরের গল্পটি প্রাচীন উপকথা। লোকের সমালোচনাকে যারা খুব বেশি ভয় পায় তাদের জন্য এ গল্পটি শিক্ষণীয়।


লোকের সমালোচনাকে কখনোই খুব বেশি প্রাধান্য দিবেন না। এতে আপনার মনের স্বাধীনতা নষ্ট হবে, মানসিক প্রশান্তির বদলে অশান্তিতে ভুগবেন।


একটা কথা মনে রাখবেন, যারা সবসময় আপনার নেতিবাচক সমালোচনা করে; তাদের মূল লক্ষ্য আপনার ভুল ধরিয়ে দেওয়া নয়, বরং আপনার সুখ দেখে তারা ঈর্ষান্বিত হয়! এমনও দেখা যায়, আপনাকে ভুল পথে পরিচালিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য! তাই এই ধরনের নিন্দুকের কথা এক মিনিট চিন্তা করা মানেই আপনার মূল্যবান সময় থেকে এক মিনিট অপচয় করছেন।


তবে হ্যাঁ, একথাও সত্য যে সব সমালোচনাই খারাপ নয়। দোষ থাকতেও পারে। সেজন্য সমালোচনার মূল উৎস বের করুন। সতর্ক থাকুন। অপবাদ দাতাদের প্রতি অপবাদের বোঝা ফিরে আসে। শুধু সময়ের অপেক্ষা।