সহকারী শিক্ষক
০৭ জুন, ২০২১ ১২:৫০ অপরাহ্ণ
পাকা আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
মৌসুমি ফল আমের পুষ্টিগুণ সম্পর্ক বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ‘খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান’ বিভাগের প্রধান ফারাহ মাসুদা বলেন, “আম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন ও ক্যালরি।”
তিনি আরও জানান, উদ্ভিজ্জ উপাদান থেকে সরাসরি ভিটামিন পাওয়া যায় না, বিটা-ক্যারোটিন ভিটামিন এ‘র কাজ করে। এছাড়া রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, যা শরীরে শক্তি তৈরি করে। আমের আয়রন, আঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও খনিজ উপাদান শরীর সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে।
পাকাআমের পুষ্টিগুণঃ
রসালো
ফল আম। শুধু খেতেই
সুস্বাদু নয়, রয়েছে শরীরের
জন্য উপকারী নানান উপাদান।
মৌসুমি ফল আমের পুষ্টিগুণ
সম্পর্কে বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ‘খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান’
বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারাহ মাসুদা বলেন, “আম নানান পুষ্টি
উপাদানে ভরপুর যা শরীর সুস্থ
রাখার পাশাপাশি কর্মশক্তি যোগাতেও সহায়তা করে।”
পাকাআমে ক্যারোটিনের মাত্রা বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম আমে ২৭৪০ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন থাকে। এতে ১.৩ গ্রাম আয়রণ, ১৪ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম, ১৬ মি.গ্রা. ফসফরাস, ১৬ মি.গ্রা. ভিটামিন সি, ০.৯ মি.গ্রা. রিভোফ্লেভিন এবং ০.০৮ মি.গ্রা. থায়ামিন থাকে।
এছাড়াও পাকাআমে রয়েছে ভিটামিন বি-১ ও বি-২। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ০.১ মি.গ্রা. ভিটামিন বি-১ ও ০.০৭ মি.গ্রা. বি-২ রয়েছে।
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ০.৫ গ্রাম খনিজ লবণ থাকে। এতে কিছু পরিমাণ প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে। যেমন- প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ১ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৭ গ্রাম ফ্যাট থাকে।
আম শ্বেতসারের ভালো উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকাআমে ২০ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়।
পাকাআমের উপকারিতা সম্পর্কে ফারাহ মাসুদা বলেন, “এর পুষ্টি উপাদান শরীরের নানাভাবে শক্তি যুগিয়ে ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে মানবদেহ সুস্থ রাখতে সহায়ক।”
যেমন-
– আমের ক্যারোটিন চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশি দূর করে।
– কার্বোহাইড্রেইট কর্মশক্তি যোগায়।
– আমের আয়রন অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে।
– ক্যালসিয়াম হাড় সুগঠিত করে, হাড় ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে।
– আম থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি।
– এর পটাশিয়াম রক্ত স্বল্পতা দূর করে ও হৃদযন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে।
– এই ফলের আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে।
– আম কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, রক্তস্বল্পতা ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
– পাকাআম রক্তে কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের পাকাআম খাওয়া ঠিক নয়। এটা ভুল ধারনা।
পরিমিত পরিমাণ আম খেলে শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে। তাই ডায়াবেটিকরা পরিমিত পরিমাণে পাকাআম খেতে পারেন বলে জানান এই অধ্যাপক।
আমের উপকারিতাঃ
১.আমে প্রচুর পরিমাণে
আয়রন থাকায় অ্যানেমিয়ার সমস্যায় উপকারী।
২.ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় কনস্টিপেশন দূর করে।
৩.কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে
সহায়তা করে।
৪.শরীরে পটাশিয়ামের অভাব দূর করে।
৫.শরীরে এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে।
৬.পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম প্রচুর
পরিমাণে থাকায় এসিডিটি, মাসল ক্যাম্প, স্ট্রেস
ও হার্টের সমস্যায় উপকারী।
৭.ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ কাঁচা
আম চোখ ভালো রাখতে
সাহায্য করে।
৮.শরীরে কোলেস্টেরল লেভেল কম রাখতে সাহায্য
করে।
৯.ভিটামিন-সি প্রচুর পরিমাণে
থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
গড়ে তোলে।
১০.গরমের সময় সর্দিতে আম
উপকারী।
১১.হজমের দুর্বলতা কমাতে সহায়ক।
১২.কিডনির সমস্যায় সাহায্য করে।
১৩.এসিডিটি উপশমে ভালো কাজ করে।
১৪.আম দিয়ে শরবত
তৈরি করে খেলে বেশ
উপকার পাওয়া যায়।
১৫.আম পিপাসা মেটাতে
সহায়তা করে।
১৬.আম লিভার ভালো
রাখে।
১৭.ভিটামিন-সি প্রচুর পরিমাণে
থাকায় আম ব্লাড ডিজঅর্ডারের
সমস্যাতেও উপকারী।
১৮.চোখের কর্ণিয়া নরম হয়ে যাওয়া,
বিফ্রেকটিভ সমস্যায়ও আম উপকারী।
১৯.আম যথেষ্ট পরিমাণে
খেলে হেলদি এপিথেলিয়াম তৈরি হয়।
২০.সাইনাসের সমস্যা অনেকটা কমে যায়।
২১.আমে প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন-সি থাকে।