সহকারী শিক্ষক
০৭ জুন, ২০২১ ১২:৫৪ অপরাহ্ণ
কাঁচা আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
মৌসুমি ফল আমের পুষ্টিগুণ সম্পর্ক বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ‘খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান’ বিভাগের প্রধান ফারাহ মাসুদা বলেন, “আম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন ও ক্যালরি।”
তিনি আরও জানান, উদ্ভিজ্জ উপাদান থেকে সরাসরি ভিটামিন পাওয়া যায় না, বিটা-ক্যারোটিন ভিটামিন এ‘র কাজ করে। এছাড়া রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, যা শরীরে শক্তি তৈরি করে। আমের আয়রন, আঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও খনিজ উপাদান শরীর সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে।
কাঁচা আমের পুষ্টিঃ
কাঁচা আমে উচ্চ মাত্রার
ভিটামিন এ এবং সির
আধিক্য থাকে।
ভিটামিন এ চোখের জন্য
খুব উপকারী। চোখের স্নায়ু ও মাংসপেশি শক্তিশালী
করতে এর ভূমিকা অপরিহার্য।
আর ভিটামিন সি যুদ্ধ করে
ছোঁয়াচে রোগের বিরুদ্ধে। দাঁত, চুল, নখ ভালো
হওয়ার জন্য ভিটামিন সি
যথেষ্ট জরুরি।
মুখের ভেতরের চামড়া উঠে যাওয়া, মাড়িতে
ঘা হওয়া, ঠোঁটের কোনায় ঘা, ঠোঁটের চামড়া
ফেটে যাওয়া—এসব অসুখ ভালো
হওয়ার জন্য দরকার ভিটামিন
এ এবং সি, যা
রয়েছে কাঁচা আমে।
ভিটামিন বি সিক্স বা
পাইরিডক্সিনও রয়েছে এই ফলে। পাইরিডক্সিন
মানুষের মস্তিষ্কে গাবা নামের একধরনের
হরমোন তৈরি করে, যা
প্রতিরোধ করে স্ট্রোক ও
মস্তিষ্কের অন্যান্য জটিল রোগ। এতে
রয়েছে কপার নামের গুরুত্বপূর্ণ
উপাদান, যা দেহে রক্ত
বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রি-বায়োটিক ডায়াটারি ফাইবার নামের জরুরি উপাদান রয়েছে কাঁচা আমে, যা পাকস্থলী,
কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
আমাদের দেহে রক্তের মধ্যে
টক্সিন নামের কিছু উপাদান রয়েছে,
যা দেহে রোগ তৈরি
করে। এই টক্সিনকে ধ্বংস
করে কাঁচা আম।
গর্ভবতী মায়েরা কাঁচা আম খেলে বাচ্চার
মেধা ভালো হয়, জন্মের
পর বাচ্চার সংক্রামক রোগগুলো তুলনামূলকভাবে কম হয়।
চর্বি কমাতে, ওজন হ্রাস করতে
সাহায্য করে কাঁচা আম।
যেকোনো কাটাছেঁড়া বা অপারেশনের পর
এই ফল কাটা স্থান
দ্রুত শুকাতে সাহায্য করবে।
তবে ফল অতিরিক্ত টক
হলে খাবেন না। এতে কাটা
স্থান শুকানোর পরিবর্তে ডায়রিয়া হতে পারে। হালকা
টক খাওয়াই উত্তম। আবার বেশি উপকারের
আশায় কাঁচা আম অতিরিক্ত মরিচ
দিয়ে বেশি খেলে ডায়রিয়া
হতে পারে। ডায়রিয়া চলাকালে কাঁচা আম খাবেন না।
এতে ডায়রিয়া বেড়ে যেতে পারে।
এই ফলে উচ্চ মাত্রার
পটাশিয়াম রয়েছে। পটাশিয়াম হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
করে। তাই উচ্চ রক্তচাপের
রোগীদের জন্য কাঁচা আম
বয়ে আনে সুফল।
তবে খেয়াল রাখতে হবে, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগীরা কাঁচা আম লবণ বা চিনি দিয়ে খাবেন না। কাঁচা লবণ রক্তচাপ বাড়ায় আর চিনি বা মিষ্টি রক্তের সুগার বাড়ায়।
ডায়াবেটিসের রোগীরা এই ফল খেতে
পারবেন। কারণ, কাঁচা আমে চর্বি বা
কোলেস্টেরল নেই, তাই এই
ফল খেলে ওজন বেড়ে
যাওয়ার বা ডায়াবেটিস বেড়ে
যাওয়ার কোনো ভয় নেই।
হৃদ্রোগীদের জন্য এটি উপযুক্ত
ফল। আর কাঁচা আমে
ভিটামিন সি পাকা আমের
তুলনায় অনেক বেশি। তাই
পুষ্টির বিচারে কাঁচা আম হোক আপনার
পরিবারের সদস্য।
কাঁচা আম সকাল থেকে
বিকেলের মধ্যে খাওয়াই ভালো। রাতে খাবেন না,
অ্যাসিডিটি বা গ্যাস হতে
পারে। আর কাঁচা আমের
আমসত্ত্বও ভীষণ উপকারী। তবে
টাটকা কাঁচা আমে পুষ্টিগুণ বেশি।