Loading..

খবর-দার

১০ জুন, ২০২১ ০৮:২৫ অপরাহ্ণ

সৌদি নয়, সরকারি অর্থায়নে মডেল মসজিদ

সৌদি নয়, সরকারি অর্থায়নে মডেল মসজিদ

  

প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ৫০টি প্রস্তুত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আধুনিক এই মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্প সৌদি আরব অর্থায়নের আগ্রহ প্রকাশ করলেও শেষ পর্যন্ত দেশটি অর্থায়ন করেনি। পরবর্তীতে সরকারি অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিশ্বের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও সরকার একসঙ্গে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে।

মডেল মসজিদ। ছবি : সংগৃহীত

মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মডেল মসজিদ তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেওয়ার পর সৌদি আরবকে অর্থায়নের অনুরোধ জানানো হয়। সৌদি আরব আগ্রহ প্রকাশ করে ৮ হাজার ১৭০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত দেশটি অর্থায়নে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে প্রকল্পটি নিজস্ব অর্থায়নে করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

বুধবার (৯ জুন) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ইসলামী মূল্যবোধের উন্নয়ন এবং ইসলামী সংস্কৃতি বিকাশের উদ্দেশ্যে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লিখিত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে ২০১৮ সালের ২৬ জুন অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পটি সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে মোট ৮৭২২ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে অনুমোদিত হয়। ২০১৮ সালে ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের ৮টি বিভাগের ৯টি স্থানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রতিটি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ৪৩ শতাংশ জায়গার ওপর তিন ক্যাটাগরিতে নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে জেলা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে ৪ তলা, উপজেলা পর্যায়ে ৩ তলা এবং উপকূলীয় এলাকায় ৪ তলা (নীচ তলা ফাঁকা) মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এ-ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা শহর ও ৩টি সিটি করপোরেশনে ৫টিসহ মোট ৬৯টি চারতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে।

বি-ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৫টি এবং সি-ক্যাটাগরিতে উপকূলীয় এলাকায় ১৬টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। মসজিদগুলোতে নারী ও পুরুষদের জন্য পৃথক অজু ও নামাজকক্ষ, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, হেফজখানা, গণশিক্ষা কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র, পাঠাগার, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, জানাজার ব্যবস্থা, হজ্জযাত্রীদের নিবন্ধন, অটিজমকর্ণার, ই-কর্নার, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন’র ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী যে ৫০ মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেছেন সেগুলো হচ্ছে, ঢাকায় সাভারে, ফরিদপুরে মধুখালীতে, সালথায়, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া ও কুলিয়ারচর, মানিকগঞ্জের শিবালয়, রাজবাড়ীর উপজেলা সদর, শরীয়তপুরের উপজেলা সদর ও গোসাইরহাট, বগুড়ায় সারিয়াকান্দি, শেরপুর ওকাহালুতে, নওগাঁয় সাপাহার ও পোরশাতে, সিরাজগঞ্জের জেলা সদর ও উপজেলা সদর, পাবনার চাটমোহরে, রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ও পবায়, দিনাজপুরের খানসামা ও বিরলে, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ ও উপজেলা সদর, রংপুরে জেলা সদর, মিঠাপুকুর, উপজেলা সদর, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে, ময়মনসিংহে গফরগাঁও ও তারাকান্দায়, চট্টগ্রামে জেলা সদর, লোহাগড়া, মিরসরাই ও সন্দীপে, জামালপুরের ইসলামপুর ও উপজেলা সদরে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও বিজয়নগরে, ভোলায় উপজেলা সদরে, সিলেটের দক্ষিণ সুরমায়, কুমিল্লার দাউদকান্দিতে, খাগড়াছড়ির পানছড়িতে, কুষ্টিয়ার উপজেলা সদরে, খুলনার জেলা সদরে, চাঁদপুরের কচুয়ায়, ঝালকাঠীর রাজাপুর, চুয়াডাঙ্গার জেলা সদর।