সহকারী অধ্যাপক
২৬ অক্টোবর, ২০২১ ০২:১৩ অপরাহ্ণ
ছায়াপথের বাইরে প্রথম কোনো গ্রহের কথা জানালেন বিজ্ঞানীরা
ছায়াপথের বাইরে প্রথম কোনো গ্রহের কথা জানালেন বিজ্ঞানীরা
মিল্কিওয়ে ছায়াপথের বাইরে প্রথমবারের মতো কোনো গ্রহের লক্ষণ দেখতে
পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এর মধ্য দিয়ে এই প্রথমবারের মতো ছায়াপথের বাইরে
কোনো গ্রহের লক্ষণ শনাক্ত করা হলো।
সূর্যের চারদিকে যেমন গ্রহগুলো ঘোরে, সেভাবে
বিভিন্ন নক্ষত্র ঘিরে ঘুরতে থাকা প্রায় পাঁচ হাজার গ্রহ এর আগে শনাক্ত করেছেন
বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সেগুলোর সবই মিল্কিওয়ে ছায়াপথে দেখা গেছে।
নাসার চান্দ্রা এক্স-রে টেলিস্কোপ মেসিয়ের ৫১
গ্যালাক্সিতে থাকা এই সম্ভাব্য গ্রহটিকে আবিষ্কার করেছে। মেসিয়ার ৫১
নক্ষত্রপুঞ্জকে এর প্যাচানো আকৃতির জন্য ওয়ার্লপুল বা ঘূর্ণি ছায়াপথ বলেও বর্ণনা
করা হয়।
আমরা যে নক্ষত্রপুঞ্জে রয়েছি, সেই মিল্কিওয়ে
ছায়াপথ থেকে এটির দূরত্ব দুই কোটি আশি লাখ আলোকবর্ষ। অর্থাৎ আলো যে গতিতে ভ্রমণ
করে, সেই গতিতে গেলে এই গ্রহটিতে পৌঁছতে দুই কোটি আশি লাখ বছর সময় লাগবে।
নক্ষত্র থেকে আলো বিকিরিত হতে থাকে। কিন্তু
যখন কোনো নক্ষত্রের সামনে দিয়ে গ্রহ প্রদক্ষিণ করে, তখন সেই আলোর কিছু অংশ ঢেকে
যায়, সেটির এক্স-রে রশ্মি বিকরণ বাধাগ্রস্ত হয়। তখন সেটির সামনে থাকা গ্রহটির
বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়, যা টেলিস্কোপের মাধ্যমে শনাক্ত করা
যায়।
এই পদ্ধতি ব্যবহার করে এর আগে হাজার হাজার
গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে।
হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর
অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ইন কেমব্রিজের ড. ডি স্টেফানো বিবিসিকে বলেছেন, আমরা যে
পদ্ধতিতে কাজ করছি, এটিই হল এখন পর্যন্ত অন্য কোন ছায়াপথে থাকা গ্রহ-নক্ষত্র
খুঁজে বের করার কার্যকর উপায়।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যেসব তথ্য-উপাত্ত
পেয়েছেন, তা থেকে ধারণা করছেন যে, এই সম্ভাব্য গ্রহটির আকার হবে শনি গ্রহের মতো।
যে নিউট্রন স্টার বা ব্ল্যাক হোল ঘিরে এটি ঘুরছে, সেটির সঙ্গে দূরত্ব সূর্য থেকে
শনির দূরত্বের প্রায় দ্বিগুণ।
তবে গবেষকরা স্বীকার করছেন, এই বিষয়ে
পুরোপুরি নিশ্চিত হতে তাদের আরও তথ্য-উপাত্ত দরকার।
এক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হলো, বিশাল
কক্ষপথের কারণে যে নক্ষত্র বা ব্ল্যাকহোল ঘিরে এটি ঘুরছে, আবার সেটির সামনে প্রায়
৭০ বছর সময় লাগে যাবে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে এই আবিষ্কারের একটি ফলোআপ পর্যবেক্ষণ
করার আপাতত উপায় নেই।
বিজ্ঞানীরা এটাও বিবেচনায় রেখেছেন যে, আলোর
বিকরণ বাধাগ্রস্ত হওয়ার আরেকটি সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে যে, হয়তো কোন গ্যাস ও
ধুলোর মেঘ সেটির সামনে পড়তে পারে, যা এক্স-রে রশ্মি বিকরণে বাধা দিয়েছে।
যদিও সেই সম্ভাবনা খুবই কম বলে তারা মনে করেন।
কারণ যেভাবে আলোর বিকিরণ কমে গেছে, সেটি কোন গ্যাসের আস্তরণের কারণে হয়েছে বলে
তারা মনে করেন না। সূত্র,২৬ অক্টোবর,যুগান্তর।