Loading..

খবর-দার

১৮ জুলাই, ২০২০ ১২:৩০ অপরাহ্ণ

করোনা: মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায় দূষিত বায়ু?

বায়ুদূষণ ও কভিড-১৯ উভয়ই শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি বা বৃদ্ধির জন্য সুপরিচিত। নতুন একটি বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যায়, বায়ুদূষণ ও কভিড-১৯ ইন্টারঅ্যাক্ট করতে পারে। জার্মানির আইজেডএ ইনস্টিটিউট অব লেবার ইকোনমিকসের সিরিজ প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, নেদারল্যান্ডসের যে অঞ্চলে বায়ুদূষণ বেশি, সে অঞ্চলে কভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত, হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। তবে তারা এটাও বলেছেন যে অনুসন্ধানগুলো কার্যকর সম্পর্কের প্রমাণ দেয় না।

১ কোটি ৭০ লাখ জনসংখ্যার নেদারল্যান্ডসে এখন পর্যন্ত কভিড-১৯-এ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সমীক্ষাটিতে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড ও সূক্ষ্ম উপাদানের তথ্যসহ দেশটির ৩৫৫টি পৌর শহরের বায়ুমানের তুলনা করা হয়। গবেষণা দলটি আবিষ্কার করেছে, যে অঞ্চলের বায়ুতে দূষণের মাত্রা বেশি সেই অঞ্চলে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও মৃতের সংখ্যা বেশি।

গবেষকরা গণনা করেছেন, বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ১২ দশমিক ৩ মাইক্রোগ্রাম সূক্ষ্ম কণা থাকা সর্বাধিক দূষিত অঞ্চলে যদি দূষণের মাত্রা অর্ধেকে নিয়ে আসা যায়, তাহলে এটা প্রতি ঘনমিটারে ৬ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম সূক্ষ্ম কণা থাকা ন্যূনতম দূষিত অঞ্চলের সঙ্গে তুলনীয় করে তোলে। গবেষকরা দ্য কনভারসেশনে লিখেছেন, ফলাফলগুলো আমাদের বোঝায় যে কেবল দূষণ হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে ৮২ জনেরও কম আক্রান্ত, ২৪ জনেরও কম মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি এবং ১৯ জনেরও কম মানুষের মৃত্যু হয়।

গবেষণাটির সহলেখক ব্রিটেনের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ম্যাথিও কোল গার্ডিয়ানকে বলেছেন, আমি যে বিষয়টি অনুভব করেছিলাম তা সত্যিই একটি দৃঢ় সম্পর্ক ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রে আগের একটি প্রিপ্রিন্ট গবেষণায় দেখা গেছে, বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে ১ মাইক্রোগ্রাম আরো সূক্ষ্ম কণা উপাদান ৮ শতাংশের বেশি কভিড-১৯ সম্পর্কিত মৃত্যুর জন্য দায়ী। নতুন সমীক্ষাটিতে দেখা গেছে, নেদারল্যান্ডসের বাতাসে একই পরিমাণ সূক্ষ্ম কণার হার ১৬ শতাংশ বেশি মৃত্যুহারের জন্য দায়ী। গবেষকরা ফলাফলের এ পার্থক্যের কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার ঘনত্বের বিস্তৃত বৈশিষ্ট্যকে দায়ী করেছেন, যা সারা দেশের গড় সংখ্যাকে কঠিন করে তোলে।

পূর্ববর্তী বিশ্লেষণে ইউরোপীয় দেশগুলোতে বায়ুদূষণ ও কভিড-১৯-এর মধ্যে সংযোগ পরীক্ষা করা হয়েছে এবং ফলাফলে বিজ্ঞানীরা দূষণ ও মৃত্যুহারের মধ্যে একটি ইতিবাচক সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। নেদারল্যান্ডসের এই সাম্প্রতিক গবেষণাটিতে সংখ্যার বাইরে আরো অনেকগুলো বিষয়কে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে, যা আগের গবেষণাগুলোতে করা হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক সীমান্তগুলোর সান্নিধ্য, দেশগুলোর মধ্যে ট্রাফিকের পরিমাণ, বিমানবন্দরগুলোর অবস্থান, তারা যে গন্তব্যগুলোতে সেবা দেয় এবং উপকূলীয় অঞ্চলগুলোকে কীভাবে সেসব ভ্যারিয়েবল থেকে রক্ষা করা হয়।

গবেষণাটিতে জড়িত না থাকা ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ফ্র্যাঙ্ক কেলি বলেছেন, বায়ুদূষণ ও কভিড-১৯ বৃদ্ধির মধ্যে সম্ভাব্য সংযোগের বিশ্লেষণ হিসেবে আমরা আরো অনেক ভালো গবেষণা দেখতে শুরু করেছি। আর নতুন এ গবেষণাটি এখন পর্যন্ত সেরা বলে মনে হচ্ছে।

দ্য সায়েন্টিস্ট