Loading..

মুজিব শতবর্ষ

২১ অক্টোবর, ২০২০ ১২:১৭ অপরাহ্ণ

হাড়ক্ষয় রোধে করণীয়...............।

গতকাল ২০ অক্টোবর ছিল বিশ্ব অস্টিওপরোসিস দিবস। অস্টিওপরোসিস বা হাড়ক্ষয় বলতে শরীরের হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়াকে বোঝায়। অস্টিওপরোটিক হাড় অনেকটা মৌচাকের মতো হয়ে যায়।

এতে হাড় ঝাঁজরা বা ফুলকো হয়ে যায়। ফলে অতি দ্রুত ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। মারাত্মক হাড়ক্ষয়ে হাঁচি বা কাশি দিলেও তা ভেঙে যেতে পারে। বয়স পঞ্চাশ বছর পেরোনোর পর থেকে শরীরের হাড়ক্ষয় বা এর লক্ষণগুলো দেখা দিতে থাকে। কিন্তু এর শুরু অনেক আগে থেকেই হতে থাকে। দেহের হাড়ের ঘনত্ব সাধারণত ২৮ বছর বয়স পর্যন্ত বাড়ে; ৩৪ বছর পর্যন্ত তা বজায় থাকে।

এরপর থেকে হাড় ক্ষয় পেতে থাকে। যাদের ক্ষেত্রে হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি বেশি, তাদের দ্রুত হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে। মহিলাদের মাসিক-পরবর্তী সময়ে হাড়ক্ষয়ের গতি বেগবান হয়। এ ছাড়াও অনেক কারণে হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়তে পারে। যাদের একবার হাড় ভাঙার ঘটনা ঘটে, তাদের পরবর্তী সময়ে হাড় ভাঙার ঝুঁকি অনেকগুণ বেড়ে যায়। একবার পাঁজরের হাড় ভাঙলে কোমরের হাড় ভাঙার আশঙ্কা ২-৩ গুণ বৃদ্ধি পায় এবং ঊরুরও হাড় ভাঙার আশঙ্কা বাড়ে।

হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি

অসংশোধনযোগ্য ঝুঁকি: ১. বয়োবৃদ্ধি, ২. স্ত্রী লিঙ্গ, ৩. জীনগত ত্রুটি, ৪. অপারেশনের কারণে ডিম্বাশয় না থাকা, ৫. হায়পোগোনাডিজম (পুরুষ ও মহিলার), ৬. অতি খর্বাকৃতি।

সংশোধনযোগ্য ঝুঁকি: ১. ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি, ২. ধূমপান, ৩ অপুষ্টি [ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন এ, কে ইত্যাদি], ৪. ক্ষীণকায় দৈহিক আকার, ৫. আমিষনির্ভর খাদ্যাভ্যাস, ৬. বেশি বয়সে অতিরিক্ত চা/কফি/ চকলেট গ্রহণের অভ্যাস, ৭. খাদ্যে বা বাতাসে ভারী ধাতু, ৮. কোমল পানীয় ও মদ্যপান।

মেডিকেল ঝুঁকি : ১. দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা, ২. স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ সেবন [বাংলাদেশের রোগীদের মাঝে এটি খুব ব্যাপক, বিশেষ করে অস্বীকৃতদের দ্বারা নির্দেশিত হয়ে যারা ওষুধ সেবন করেন, প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির (কবিরাজি, আয়ুর্বেদি, হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ইত্যাদি) মাঝে স্টেরয়েডের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি], ৩. অন্যান্য হরমোনজনিত রোগ।

উপসর্গ : প্রথমত, কোনো শারীরিক লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে কোমরে, পিঠে বা অন্য কোথাও ব্যথা, বিশেষ করে যা ব্যথানাশকে কমে না এমন চরিত্রের ব্যথা। কারও কারও দৈহিক উচ্চতা কমে যাওয়া, কুঁজো হয়ে যাওয়া বা সামনে ঝুঁকে থাকা। তবে সংগোপনে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাপার হল, মেরুদণ্ডে ফাটল বা চিড় ধরা এবং ঠুনকো আঘাতেই হাড় ভাঙা।

শনাক্তকরণ : অনেক রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার হতে পারে-কিছু ঘনত্ব পরিমাপের জন্য, কিছু আবার ঝুঁকি চিহ্নিত করার জন্য। বিএমডি পরীক্ষা এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো।

চিকিৎসা : প্রধান ও প্রথম পদক্ষেপ হবে ঝুঁকি শনাক্তকরণ, সম্ভব হলে তা রহিত করা। এরপর যেসব ওষুধ পাওয়া যায় সেগুলোর কোনো একটি নির্দিষ্ট রোগীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে।

যেহেতু হাড়ক্ষয় একবার হলে আর ক্ষয় পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ, তাই একে আগেভাগেই রোধ করার জাতীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসূচি নিতে হবে। এর অংশ হিসেবে কারা কতটুকু ঝুঁকিতে আছেন বা কারা ইতোমধ্যে হাড়ক্ষয়ে ভুগছেন, তা নির্ধারণ করতে হবে এবং উপযোগী চিকিৎসা নির্বাচন ও প্রয়োগ করতে হবে। আর হাড়ক্ষয় রোধে কিছু পদক্ষেপ বিবেচনা করা যেতে পারে- নিয়মিত ব্যায়াম, স্টেরয়েডসহ ক্ষতিকারক ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকা, পুষ্টি নিশ্চিতকরণ, ধূমপান ত্যাগ, প্রয়োজনে পরিমিত ক্যালসিয়াম সেবন।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি