প্রভাষক
২১ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৮:৪৬ অপরাহ্ণ
আঠারো বছর বয়স, পর্ব ০১
ধরন: সাধারণ শিক্ষা
শ্রেণি: একাদশ
বিষয়: বাংলা সাহিত্য
অধ্যায়: ঊনবিংশ অধ্যায়
নামঃ সুকান্ত ভট্টাচার্য।
জন্ম তারিখঃ ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট(৩০ শ্রাবণ, ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ)
জন্মস্থানঃ কালীঘাট, কলকাতা।পৈতৃক নিবাস কোটালিপাড়া, গোপালগঞ্জ ।
পিতার নামঃ নিবারণচন্দ্র ভট্টাচার্য।
মাতার নামঃ সুনীতি দেবী।
জীবনাবসানঃ ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ মে (২৯ বৈশাখ, ১৩৫৪ বঙ্গাব্দ)।
শিক্ষাজীবনঃ (মাধ্যমিক) ম্যাট্রিক (১৩৫২), অকৃতকার্য, বেলেঘাটা দেশবন্ধু স্কুল ।
কর্মজীবন / পেশাঃ ছেলেবেলা থেকেই তিনি অত্যন্ত রাজনীতি-সচেতন ও অন্যায়ের প্রতিবাদী ছিলেন। তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। দৈনিক পত্রিকা ‘স্বাধীনতা’র কিশোর সভা অংশের প্রতিষ্ঠাতা ও আজীবন সম্পাদক ছিলেন।
সাহিত্যকর্মঃ
ছাড়পত্র, ঘুম নেই, পূর্বাভাস, অভিযান, হরতাল, গীতিগুচ্ছ প্রভৃতি।
ফ্যাসিবাদবিরোধী লেখক ও শিল্পী সংঘের পক্ষে ‘আকাল' (১৩৫১) নামক কাব্যগ্রন্থ সম্পাদনা।
বিশেষ কৃতিত্বঃ তাঁর কবিতায় অনাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ পাঠককে সচকিত করে তোলে। গণমানুষের
প্রতি গভীর মমতার প্রকাশ ঘটেছে তাঁর কবিতায়।
‘আঠারো বছর বয়স’ কবিতায় কবি তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বয়ঃসন্ধিকালের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন। কৈশোর থেকে যৌবনে পদার্পণের এই বয়সটি উত্তেজনার, প্রবল আবেগ ও উচ্ছাসে জীবনে ঝুঁকি নেওয়ার উপযোগী। এই বয়স অদম্য দুঃসাহসে সকল বাধা-বিপদ পেরিয়ে যাওয়ার এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাড়ানোর জন্য প্রস্তুত। এই বয়স আত্মত্যাগের মহান মন্ত্রে উজ্জীবিত হওয়ার। আঘাত-সংঘাতের মধ্যে রক্তশপথ নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ার বয়স আঠারো বছর। কবির মতে, আঠারো বছর বয়সটা অত্যন্ত দুঃসাহসের সময়। এই সময় কেউ কোনো কিছুতেই কারও কাছে মাথা নত করে না; বরং দুঃসাহসের সঙ্গে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপন কর্মে অগ্রসর হয়। এই বয়সে কেউ তাকে রুখতে পারে না। নির্ভয়ে তখন জীবনের সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে। এমনকি তখন তারা জীবনকেও তুচ্ছজ্ঞান করে। আঠারো বছর বয়স হদয়ধর্মে সংগ্রামের মন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়ে চলে ।
ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনের যেকোনো দুর্যোগ মুহর্তে আঠারো বছর বয়সের তরুণরা দুর্বার গতিতে দুর্যোগ মোকাবিলায় আত্মনিয়োগ করে। এই বয়স দুর্যোগ ও বিপদের মুখে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। নতুনের প্রত্যাশী বলে এই বয়সেরই জয় হয়। আঠারো বছর বয়সে কোনো ভীরুতা বা কাপুরষতা স্থান পায় না। এই বয়স ভয়হীন চিত্তে সামনের দিকে এগিয়ে যায় বলে তারুণ্য ও যৌবনশক্তির জয় হয়। যৌবনের উদ্দীপনা, সাহসিকতা, দুর্বার গতি, নতুন জীবন রচনার স্বপ্ন এবং কল্যাণব্রত প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যের জন্য কবি সমস্যাপীড়িত দেশের মুক্তি ও উন্নতির জন্য তারুণ্যশক্তিকে প্রত্যাশা করেছেন। তিনি চান এই দেশ আঠারো বছরের তারুণ্যে উদ্ভাসিত হোক।