Loading..

খবর-দার

০২ মার্চ, ২০২১ ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ

নাট্যাভিনেত্রী লিলি চৌধুরী আর নেই

নাট্যাভিনেত্রী লিলি চৌধুরী আর নেই। গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর বনানীর নিজ বাসভবনে তিনি মারা যান (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। বেতার, মঞ্চ ও টেলিভিশনের এক সময়ের ব্যস্ত এই অভিনেত্রীর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর স্ত্রী এবং প্রয়াত সাংবাদিক মিশুক মুনীরের মা।

লিলি চৌধুরীর ছোট ছেলে আসিফ মুনীর তন্ময় জানান, সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তার মায়ের মৃত্যু হয়। আত্মীয়স্বজনের দেখার জন্য মরদেহ আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বনানীর বাসায় রাখা হবে। এরপর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ রাখা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। জোহরের পর বনানী কবরস্থানে জানাজা শেষে ছেলে মিশুক মুনীরের কবরের পাশে তার লাশ দাফন করা হবে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ১৯২৮ সালের ৩১ আগস্ট টাঙ্গাইলের জাঙ্গালিয়া গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন লিলি চৌধুরী। পৈতৃক পদবিতে তখন তার নাম রাখা হয় লিলি মির্জা। বাবা নূর মোহাম্মদ মির্জার ছিল বদলির চাকরি। সেই সুবাদে তৃতীয় শ্রেণি থেকেই হোস্টেল জীবন শুরু হয় লিলি চৌধুরীর। কলকাতায় বেগম রোকেয়া প্রতিষ্ঠিত সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলে ভর্তি করা হয় তাকে। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি রবীন্দ্রনাথের নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাখাওয়াত মেমোরিয়াল কিছুদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। তখন লিলি দিলিল্গতে বাবা-মায়ের কাছে চলে যান। সেখানে তাকে ইন্দ্রপ্রস্থ গার্লস হাই স্কুলে ভর্তি করা হয়। দুই বছর পর আবার কলকাতায় ফিরে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল থেকেই প্রবেশিকা দেন তিনি। পরে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে ভর্তি হন। তবে এ সময়ও নাটকে অভিনয় তিনি অব্যাহত রাখেন। ১৯৪৮ লিলির বাবা নূর মোহাম্মদ মির্জা ঢাকায় চলে আসেন।

চাকরির পাশাপাশি তিনি অভিনয় করেন বেতার, মঞ্চ আর টেলিভিশনে। মুনীর চৌধুরীর শুরু করা টেনেসি উইলিয়ামসের 'স্ট্রিট কার নেমড ডিজায়ার' নাটকের অসমাপ্ত অনুবাদের কাজ লিলিই শেষ করেন। স্বামীর সঙ্গে তার পত্রালাপ আর দু'জনের লেখা ডায়েরির সংকলন প্রকাশিত হয়েছে 'দিনপঞ্জি-মনপঞ্জি-ডাকঘর' শিরোনামে। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে লিলি চৌধুরী নাট্যকার-নাট্যশিল্পী সংসদ, টেলিভিশন নাট্যশিল্পী নাট্যকার সংসদ ও বাংলাদেশ মানবাধিকার নাট্য পরিষদের সম্মাননা পেয়েছেন।