প্রভাষক
০৯ মে, ২০২৪ ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ 2024 “শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক” নির্বাচন ও আমার ভাবনা
শিক্ষার্থীদের
প্রতিভার বিকাশ ও সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলিকে অনুপ্রাণিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়
প্রতিবছর “জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ” উপলক্ষ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে।
এখানে শিক্ষকদের জন্য “শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক” শিরোনামে একটি ইভেন্ট আছে। প্রতিটি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে একজন শিক্ষক উপজেলা পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
১৩ (তেরো) টি দক্ষতার নিরিখে উপযুক্ত প্রমানপত্রের আলোকে অভিজ্ঞ বিচারকমন্ডলী
উপজেলা পর্যায়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, কারিগরি ও কলেজ স্তরে
একজন করে মোট চার জন “শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক” নির্বাচন করে
থাকেন। উপজেলা পর্যায়ের প্রথম স্থান অধিকারীদের নিয়ে জেলা ও জেলা পর্যায়ের প্রথম
স্থান অধিকারীদের নিয়ে বিভাগ ও এর পর জতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
আল্লাহ তায়ালার অশেষ কৃপায় আমি অধম এ বছর উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কলেজ স্তরে
“শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক” নির্বাচিত হয়েছি। এজন্য আমি আনন্দিত। যারা প্রতিযোগিতায় এসেছেন তাদের মধ্যে ১৩ (তেরো) টি দক্ষতার নিরিখে ১০০
নম্বরের মূল্যায়নে অভিজ্ঞ বিচারকমন্ডলীর রায়ে “শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক” নির্বাচিত
হওয়া কঠিন কাজ। আমি নিজে খুব কাছ থেকে দেখেছি মৌলভীবাজার উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিস জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহের প্রতিযোগিতার প্রতিটি ইভেন্ট বাস্তবায়নে অত্যন্ত আন্তরিক ও সচ্ছতার পরিচয় দিয়েছেন।
প্রতিযেগিতায় অংশগ্রহণ করতে শতাধিক পৃষ্ঠার নির্ভূল ফাইল তৈরী করাও বেশ দূরহ। এতে
প্রায় এক সপ্তাহের একটা খাটুনি আছে। আবার উপযুক্ত সনদপত্র, উদ্ভাবনি আইডিয়া, অনুকরণীয় দৃষ্ঠান্ত, শিক্ষা উপকরন ব্যবহার, প্রযুক্তির ব্যবহার, পোষাক-পরিচ্ছদ, সৃজণশীল প্রকাশনা ইত্যাদি নানা বিষয়ের
প্রমানপত্র যৌক্তিক পন্থায় তুলে ধরতে হয়।
আমি “শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক” নির্বাচিত হয়েছি
ঠিক কিন্ত মাঠে ময়দানে আমার চেয়ে অনেক দক্ষ-যোগ্য শিক্ষক রয়েছেন। আমি তাদেরকে
শ্রদ্ধা করি। অনেক শিক্ষক প্রতিযোগিতার মাঠে আসেননা। আমি মনে করি আগ্রহী সবাইকেই এই প্রতিযেগিতায় আসা উচিত। তাদের দক্ষতার মূল্যায়ন হওয়া উচিত। আর বিচারক প্যানেলে
অবসর প্রাপ্ত অধ্যক্ষ বা অধ্যাপক পদমর্যাদার শিক্ষক মহোদয়গণকে রাখা দরকার। যাতে করে একজন সহকারী শিক্ষক থেকে শুরু করে একজন অধ্যাপকও এই প্রতিযেগিতায়
আসতে পারেন। সহযোগিতার জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তা সাথে থাকবেন। তাহলে সবার জন্য
প্রতিযেগিতার মাঠ সমান ভাবে প্রস্তুত হবে।
অনেককেই সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে “শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক” নির্বাচন নিয়ে তির্যক মন্তব্য করতে দেখা
যায়। অথচ একই কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতা নিয়ে কোনো
আপত্তি নেই। শুধু সহকর্মী এগিয়ে গেলে সেটা নিয়ে উপহাস। এটা কাম্য নয়। যদি কোনো
অনিয়ম পরিলক্ষিত হয় তবে একজন সৎ মানুষ হিসাবে তা কর্তৃপক্ষের নজরে আনা উচিত। আর
নিজেকে যোগ্য মনে করলে মাঠে এসে তার প্রমান দেওয়া উচিত। কিছুই না করে শুধু শুধু
অপরের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হওয়া উচিত নয়।
“শ্রেষ্ঠ শ্রেণি
শিক্ষক” নির্বাচনের মানদন্ডে এ বছর কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। তবে এগুলোর পাশাপাশি
শিক্ষকের আবৃত্তি, গান, প্রমিত বাংলা উচ্চারণ সহ আরো কিছু দক্ষতার মূল্যায়ন আমলে
আনা উচিত।
এই স্বীকৃতি, এই পুরস্কার প্রাপ্তি আমার দায়িত্ব আরো বাড়িয়ে দিয়ে
গেলো। আমি সবার কাছে দোয়া চাই, যেন নিজেকে আরো বেশি শিক্ষা সেবায় নিয়োজিত
করতে পারি। কলেজের কাজে আরো বেশি সক্রিয় হতে পারি। কলেজের সুনাম বৃদ্ধিতে অবদান
রাখতে পারি। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাকে সেই তৌফিক দেন। আমিন।