সিনিয়র শিক্ষক
১৭ জুলাই, ২০২১ ০৫:১৫ অপরাহ্ণ
প্রাকৃতিক পরিবেশ ও দূষণ
ধরন: মাদ্রাসা শিক্ষা
শ্রেণি: সপ্তম
বিষয়: বিজ্ঞান
অধ্যায়: ত্রয়োদশ অধ্যায়
প্রাকৃতিক পরিবেশ দূষণের ফলে আমদের ক্ষতিগুলোঃ-
১.
শিশুদের বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ব্যাহত এবং স্নায়ুর ক্ষতি
বিশ্বব্যাংকের
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূষণের শিকার দরিদ্র নারী, শিশুরা ব্যাপকভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে। কারণ তাদের বেশিরভাগই দূষিত
এলাকায় বসবাস করেন, যেখানে সীসা দূষণেরও ঝুঁকি রয়েছে এর
ফলে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা বিকাশে এবং স্নায়ুবিক ক্ষতি হতে পারে।
২.
গর্ভবতী মহিলাদের শারীরিক ক্ষতি
বিশ্বব্যাংকের
প্রতিবেদন: দূষণের কারণে বাংলাদেশের বছরে ৬৫০ কোটি ডলার ক্ষতি হয় যা মোট জাতীয় উৎপাদন
বা জিডিপির প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ
দূষিত
এলাকায় বসবাসের ফলে গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভপাত ও মৃত শিশু প্রসবের ঝুঁকি অনেক
বেড়ে যেতে পারে। এসব এলাকার দূষিত বায়ু এবং পানির কারণে তার নিজের এবং গর্ভের
শিশুর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
৩.
বায়ু দূষণে চোখ, শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতি
মার্কিন
গবেষণা প্রতিষ্ঠান লরেন্স বের্কলি ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি বলছে, রাসায়নিক মিশ্রণ আছে, এমন দুষিত বায়ুর
সংস্পর্শে থাকলে চোখ, নাক বা গলার সংক্রমণ বা ক্ষতির কারণ
হতে পারে। সেই সঙ্গে ফুসফুসের নানা জটিলতা, যেমন
ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়া, মাথাব্যথা, অ্যাজমা এবং নানাবিধ অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। বায়ু দূষণের
সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক দেখতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
৪.
ক্যান্সার ও হৃদরোগর
উৎস,EPA
ভারতের দিল্লীতে বায়ু
দূষণের শিকার এক পরিবার
বিশেষজ্ঞরা
বলছেন,
দীর্ঘদিন বায়ু দূষণের মধ্যে থাকলে বা এরকম পরিবেশে কাজ করলে
ফুসফুসের ক্যান্সার এবং হৃদরোগের দেখা দিতে পারে। এমনকি সেটা মস্তিষ্ক, লিভার বা কিডনির দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাও তৈরি করতে পারে।
৪. পানি
দূষণের প্রভাব অনেক দীর্ঘস্থায়ী
যুক্তরাজ্যের
ওয়াটার পলুউশন গাইড, যারা পানির মাধ্যমে দূষণের মাত্রা কমাতে কাজ করছে,
তারা বলছে, পানি দূষণে সাময়িক প্রভাবের
তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব অনেক বেশি পড়ে। বিশেষ করে শিল্প কলকারখানার বজ্য
মানব দেহের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। এসব পানি ব্যবহার চর্মরোগ, টাইফয়েড, জন্ডিস বা হেপাটাইটিসের মতো রোগ হতে
পারে।
৫.
খাদ্যচক্রের মাধ্যমে ক্ষতি
বিজ্ঞানীরা
বলছেন,
দুষিত পানি বা নদীর ভেতর যেমন মাছ বা প্রাণী থাকে, যেসব ভেজষ উৎপন্ন হয়, দূষণ সেসব প্রাণীর
ভেতরেও ছড়িয়ে পড়ে। খাদ্যচক্রের মাধ্যমে এসব ক্ষতিকর পদার্থ আবার মানব দেহের
শরীরে চলে আসে। ফলে সরাসরি দূষিত পানির কাছাকাছি না থাকলেও, সেসব দুষিত পদার্থ এসব মাছের মাধ্যমে মানব দেহে আসে, যার ফলে ক্রুটি পূর্ণ জন্ম বা ক্যান্সার হতে পারে। এমনকি খাদ্য চক্রের
মাধ্যমে মানব শরীরে ঢুকছে সীসা, প্লাস্টিকসহ নানা ক্ষতিকর
পদার্থ।
৬. শব্দ দূষণের কারণে হাইপার টেনশনর উৎস,TIM BOYLE
খাবার থেকে শুরু করে
ওষুধ, প্রসাধনীসহ প্রতিটি পণ্য সংরক্ষণে ব্যবহার হয় প্লাস্টিক, যা খাদ্যচক্রের মাধ্যমে আবার মানব শরীরে প্রবেশ করছে
যুক্তরাষ্ট্রের
ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ নয়েজ কন্ট্রোল বলছে, পথের শব্দের
কারণে একজনের হাইপার টেনশন, আলসার, হৃদরোগ, মাথাব্যথা বা স্নায়ুর সমস্যা হতে
পারে। এমনকি অতিরিক্ত শব্দের পরিবেশে থাকলে শিশুর জন্মগত ক্রুটির তৈরি হতে পারে।
শব্দ দূষণের কারণে ব্লাড প্রেশার, শ্বাসের সমস্যা এমনকি
হজমের সমস্যার তৈরি হতে পারে।
৭. খাদ্য দূষণে কার্যকারিতা হারাচ্ছে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ
খাদ্য
দূষণের কারণে অন্ত্রের নানা রোগ, লিভার, কিডনি
বা পাকস্থলী কার্যকারিতা হারাচ্ছে। গ্যাস্ট্রিক আলসারসহ নানা সমস্যার তৈরি হচ্ছে।
কখনো কখনো এসব কারণে ক্যান্সারেরও তৈরি হচ্ছে। শিশুরা ছোটবেলা থেকে এ ধরণের দুষিত
খাবার খেলে তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে বা বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।
,MUNIR UZ ZAMAN
শব্দের
কারণে একজনের হাইপার টেনশন, আলসার, হৃদরোগ,
মাথাব্যথা বা স্নায়ুর সমস্যা হতে পারে
''আইনের প্রয়োগ তো করতেই হবে, সেই সঙ্গে বায়ু
দূষণ যাতে না হয়, পানি বা শব্দ দূষণ না হয়, সে ব্যাপারে আমাদের নিজেদের সতর্ক হতে হবে'', বলছেন
মি. চৌধুরী।
তিনি
একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ''আমার যক্ষ্মা হলে সেটি যেমন চিকিৎসা করা হবে,
তেমনি আমাকেও লক্ষ্য রাখতে হবে যেন যত্রতত্র থুথু না ফেলি। এভাবে
সরকার, জনগণ, সব সংগঠন মিলে একটি
সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে পরিবেশ দূষণ থেকে নিজেদের রক্ষা করা যাবে না।''