Loading..

খবর-দার

২৫ জুলাই, ২০২১ ১০:০৩ অপরাহ্ণ

ডেঙ্গি রোগী পাওয়া গেলেই বিশেষ অভিযান

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, এডিসসহ অন্যান্য মশার প্রাদুর্ভাব ও ডেঙ্গি রোগ নিয়ন্ত্রণে যে এলাকায় অর্থাৎ যে বাসা-বাড়িতে রোগী পাওয়া যাবে, হাসপাতাল থেকে সেই ব্যক্তির নাম-ঠিকানা নিয়ে তার বাসাসহ ওই অঞ্চল চিহ্নিত করে বিশেষ চিরুনি অভিযান চালানো হবে।

ডেঙ্গি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার তথ্য সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে গঠিত ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সমন্বয় সেল’ এবং দুই সিটি করপোরেশনে পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।


রোববার (২৫ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন-কক্ষে এডিস মশার প্রাদুর্ভাব ও ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় করণীয় ঠিক করতে ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ডাকা জরুরি সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, নিয়মিত মশক-নিধন অভিযানের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি যে হাসপাতালেই ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার আমাদের সেলে এবং সিটি করপোরেশনে পাঠালে ওই ব্যক্তির বাসা-বাড়ি চিহ্নিত করে পুরো এলাকায় বিশেষ মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিযান চালানোর সময় সিটি করপোরেশনের লোকজনদেরকে বাসা-বাড়ি ঢুকতে দেয়া হয় না বলে অভিযোগ আসে। অনেক সময় আক্রান্ত রোগীর আসল ঠিকানা না দিয়ে ভুল তথ্য দেয়া হয়। এটি একজন সচেতন নাগরিকের কাজ হতে পারে না। কোথায় এডিস মশার লার্ভা আছে তা নাগরিককে জানালে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া মশা নিধন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

তাজুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে যেসব অঞ্চলকে এডিস মশার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে অর্থাৎ যে অঞ্চল থেকে বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে সেসব এলাকায় আগামীকাল থেকে চিরুনি অভিযান চালানো হবে।

মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য উভয় সিটি করপোরেশনে দশজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেল-জরিমানা করার পরও বাসা-বাড়ি অথবা ভবনে পুনরায় দুই-তিনগুণ মশার লার্ভা পাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক। ইচ্ছাকৃতভাবে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস না করলে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড, রেলওয়ে, সিভিল এভিয়েশন এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্ব স্ব উদ্যোগে এডিস মশা নিধনে কার্যক্রম পরিচালনা করবে এবং প্রয়োজনে সিটি করপোরেশনের সহযোগিতা নেবে।

তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি হোক বা সরকারি-বেসরকারি যে প্রতিষ্ঠানই হোক নির্মাণাধীন, পরিত্যক্ত বা যেকোনো ভবনে পানি জমিয়ে রেখে ডেঙ্গি প্রজননে ভূমিকা রাখলে তাকে শাস্তি বা জরিমানা করে জনসম্মুখে আনতে হবে। বাসা-বাড়ি, শিল্প কল-কারখানা নির্মাণ করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু জনগণের জান-মাল ক্ষতিগ্রস্ত করার কোনো অধিকার কারোরই নেই।

অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গঠিত ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সমন্বয় সেলের কাজ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরেশন মশক-নিধনে কী পরিকল্পনা তৈরি করবে এবং তা কীভাবে বাস্তবায়ন করবে, কোন এলাকায় ফগিং মেশিন দিয়ে স্প্রে করবে, কোন এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালাবে, কোথায় লার্ভিসাইড বা এডাল্টিসাইড স্প্রে করবে তার একটা কর্মসূচি তৈরি করবে এবং প্রতিদিন পর্যালোচনা ও তদারকি করে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করবে।

সভায় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, এনজিওকর্মীকে নিয়ে কমিটি করে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডকে দশটি সাব-জোনে ভাগ করে মশক-নিধন অভিযান পরিচালনা করার বিষয়ে পুনরায় গুরুত্বারোপ করেন মো. তাজুল ইসলাম।

এ সময় পবিত্র ঈদুল আজহায় রাজধানীতে কোরবানির বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করার জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রকে ধন্যবাদ জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।