Loading..

মুজিব শতবর্ষ

৩১ জুলাই, ২০২১ ০২:০৬ পূর্বাহ্ণ

তোমার কীর্তি বহমান

চে থাকলে আজ তাকে নিয়েই বাঙালি উদযাপন করত তার ১০১তম জন্মবার্ষিকী; ঠিক নয় দিন পর তার হাত দিয়েই উড়ত স্বাধীন বাংলার সুবর্ণজয়ন্তীর পতাকা।

‘যদি রাত পোহালেই শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই’- এ গানের কথা যে বাঙালিই মনের কথা।

যে বছর বাঙালির মুক্তির সংগ্রাম চূড়ান্ত লড়াইয়ের রূপ পেল, সেই ১৯৭১ সালের ১৭ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাকে ছাপা হল পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের একটি কবিতা।

‘বঙ্গ-বন্ধু’ শিরোনামে সেই কবিতায় তিনি লিখলেন – ‘মুজিবর রহমান/ ওই নাম যেন বিসুভিয়াসের অগ্নি-উদারী বান।’

সেই শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী বুধবার, যার হাত ধরে এসেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, দেশের মানুষ ভালোবেসে যাকে দিয়েছে বঙ্গবন্ধু উপাধি, স্বাধীন দেশের সংবিধান যাকে দিয়েছে জাতির পিতার স্বীকৃতি।

জন্মদিন নিয়ে বিশেষ কোনো ভাবনা ছিল না বঙ্গবন্ধুর; তিনি বলতেন, “আমার জন্মদিনই কী, আর মৃত্যুদিনই কী? আমার জনগণের জন্য আমার জীবন ও মৃত্যু। আমি তো আমার জীবন জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছি।”

তার হাত ধরেই বাঙালি পেয়েছিল স্বাধীনতার দিশা; অর্ধ শতকের পথচলায় অর্থনৈতিক মুক্তির যে সোনালি দিগন্তের সামনে আজ বাঙালি দাঁড়িয়ে, তারও অনুপ্রেরণা তিনি।

গতবছর সাড়ম্বরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছিল সরকার। কিন্তু করোনাভাইরাসের মহামারীতে স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনায় নিয়ে মূল আয়োজন সীমিত করা হয়।

তারপরও নানা আয়োজনে আগামী বিজয় দিবস পর্যন্ত মুজিববর্ষের উদযাপন চলবে। তারই মধ্যে এবারের স্বাধীনতা দিবসে আসছে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের আরেক মাহেন্দ্রক্ষণ।   

মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে ১০ দিনের কর্মসূচি নিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি। এরমধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের থিম ‘ভেঙেছ দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়’।

বুধবার বিকালে প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

ভিডিওতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বাংলাদেশের শিল্পীদের সঙ্গে থাকবে ভারতীয় একটি সাংস্কৃতিক আয়োজন।

বঙ্গবন্ধুর মাত্র ৫৪ বছরের জীবনের এক-চতুর্থাংশই কেটেছে কারাগারে; তার পুরো জীবনটাই ছিল বাঙালির জন্য নিবেদিত; সেজন্য ফাঁসির মঞ্চকেও তিনি ভয় পাননি।

বাঙালি আর বাংলাদেশের সঙ্গে এমনই অচ্ছেদ্য হয়ে উঠেছিলেন শেখ মুজিব; টুঙ্গিপাড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে মহানায়ক হয়ে উঠে এসেছেন জাতীয় অঙ্গনে, এরপর দ্যুতি ছড়িয়েছেন বিশ্বমঞ্চে।

জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই সোনার বাংলায় তার বাংলাদেশকে পৌঁছে দিতে আজকের অভিযাত্রায় নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন তারই মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এক বাণীতে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। ...  দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাঙালি আজ আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।

“আসুন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে আমরা দৃঢ় সঙ্কল্পে আবদ্ধ হই- বাংলাদেশকে আমরা বিশ্বসভায় আরো উচ্চাসনে নিয়ে যাব, আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ-শান্তিপূর্ণ আবাসভূমিতে পরিণত করব।”

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। এই দিনে স্কুল-কলেজে শিশুদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়, কিন্তু মহামারীর কারণে এবার আর হচ্ছে না।

এবারের জাতীয় শিশু দিবসের প্রতিপাদ্য ঠিক হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর হৃদয় হোক রঙিন’।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এক বাণীতে বলেন“মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করাই হোক মুজিববর্ষে সকলের অঙ্গীকার। তার নীতি ও আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সাহসী, ত্যাগী ও আদর্শবাদী নেতৃত্ব- এ প্রত্যাশা করি।”

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি