Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

৩১ জুলাই, ২০২১ ১১:১৫ অপরাহ্ণ

হুদাইবিয়ার সন্ধি
img
Chameli Afroz

প্রভাষক

হুদাইবিয়ার সন্ধি (আরবিصلح الحديبية), ষষ্ঠ হিজরীর জ্বিলকদ মাসে (মার্চের ৬২৮ খ্রীষ্টাব্দে) মদিনা শহরবাসী এবং কুরাইশ গোত্রের মধ্যে সম্পাদিত একটি ঐতিহাসিক চুক্তি। এই সন্ধিটি একটি দশ বছর শান্তি প্রতিষ্ঠিত করে এবং মুহাম্মদ (সা.) কে পরের বছর হজ্জের সময় মক্কার দিকে আসতে অনুমোদন করে।[১][২][৩]

হুদাইবিয়ার সন্ধি

পটভূমিকা[সম্পাদনা]

হিজরি ৬ষ্ঠ সনের জ্বিলকদ মাসে হুদাইবিয়ার অভিযান সংঘটিত হয়। এই সনে নবী করীম একদা স্বপ্নে দেখেন যে, তিনি তার সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে মদীনা থেকে মক্কায় চলে গেলেন এবং সেখানে উমরা পালন করলেন। নবীর স্বপ্ন নিছক একটি স্বপ্ন নয়, বরং সেটিও একধরনের ওহী। সুতরাং এরপর তিনি চৌদ্দশ সাহাবীসহ উমরা পালন করার জন্য মক্কা রওনা হলেন। কিন্তু জ়েদ্দা থেকে মক্কাগামী পথের পাশে হুদাইবিয়া নামক স্থানে মক্কার মুশরিকদের দ্বারা তিনি বাধাপ্রাপ্ত হন। ফলে, মক্কায় পৌছে উমরা পালন করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি।[৪] পথিমধ্যে হুদাইবা নামক স্থানে উনি তীব্র বাধার সম্মুখীন হন। এই স্থানের সানিয়াতুল মিরার নামক স্থানে উনার উটনী বসে যায়। অপরদিকে কুরাইশদের পক্ষ থেকে সামরিক অভিযানের হুমকি আসতে থাকে। শেষ পর্যন্ত কুরাইশদের পক্ষ থেকে সুহায়ল ইবনে আমরকে দূত হিসাবে পাঠান হয়। সেখানে নিম্ন লিখিত সমযোতা গুলিই হুদাইবার সন্ধি হিসাবে পরিচিত হয়।[৫] নবী করীম উমরার জন্য নিয়ে আসা পশুগুলো সেখানে কোরবানী করে মদীনায় ফিরে যান। অতঃপর পবিত্র ক্বোরআনে সুরা ফাতেহ তে ইহাকে প্রকাশ্য বিজয় হিসাবে অভিহিত করা হয়।

সন্ধিপত্রের কয়েকটি শর্ত[সম্পাদনা]

(১) মুসালমানগণ এ বছর উমরাহ না করেই মদীনায় ফিরে যাবে।
(২) আগামী বছর উমরার জন্য এসে তারা তিন দিন মক্কায় অবস্থান করতে পারবে এবং তাদের অবস্থানকালে কুরাইশরা মক্কা ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাবে।
(৩) কুরাইশদের এবং মুসলমানদের মধ্যে আগামী দশ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকবে।
(৪) কুরাইশদের কেউ মদীনায় আশ্রয় নিলে তাকে ফেরত দিতে হবে। কিন্তু মদীনার কোন মুসলমান মক্কায় আশ্রয় নিলে, তাকে ফেরত দেয়া হবে না।
(৫) আরবের যেকোন গোত্রের লোক মুসলমানদের বা কুরাইশদের সাথে সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হতে পারবে।
(৬) মক্কায় ব্যবসায়ীরা নিরাপদে মদীনার পথ ধরে সিরিয়ামিশর প্রভৃতি দেশে ব্যবসা করতে পারবে।
(7) মক্কায় বসবাসকারী মুসলিমদের জান মালের নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
(8) চুক্তিতে স্বাক্ষর কারী পক্ষদ্বয় একে অপরেরে সম্পদকে সম্মান করবে।
(9) মক্কায় প্রবেশকালে মুসলিমরা বর্শা বা ফলা আনতে পারবে না। আত্মরক্ষার জন্য কোষবদ্ধ তলোয়ার আনতে পারবে।

উমরের বিরোধীতা[সম্পাদনা]

চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পরে, বেশিরভাগ হজ্জ যাত্রীরা মুহাম্মদ(সা) কে কুরাইশদের বেশিরভাগ সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানায়, আল্লাহর নাম ব্যবহার করে এবং নিজেকে আল্লাহর রসূল বলে অভিহিত করে। এর ফলে উমর মুহাম্মদ(সা) এর সংকল্প সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন।[৬][৭][৮] এমনকি সহিহ মুসলিমেও এটি লিপিবদ্ধ রয়েছে।[৯]

আরো দেখুন