Loading..

খবর-দার

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১২:২০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ আজ শক্তিশালী জর্দানের মুখোমুখি

এএফসি নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ। বাংলার বাঘিনীরা পড়েছে ‘জি’ গ্রুপে। প্রথম ম্যাচেই লাল-সবুজ বাহিনীকে কঠিন প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে হবে। প্রতিপক্ষ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্দান। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় উজবেকিস্তানের তাসখন্ডের বানিওদকরের মিল্লি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই দল। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী। তারপরও জর্দানের বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা দিতে মুখিয়ে আছে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। কোচ ছোটন বলেছেন, ‘জর্দানের বিপক্ষে মেয়েরা তাদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত। আশা করছি খুব ভালো একটা ম্যাচ দেশবাসীকে উপহার দিতে পারব। আমরা দেশবাসীর কাছে দোয়াপ্রার্থী।’ উজবেকিস্তান যাওয়ার আগে বাংলাদেশ নেপালের কাঠমান্ডু গিয়ে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল। প্রতিপক্ষ ছিল নেপাল জাতীয় ফুটবল দল। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ১-২ গোলে হেরে গেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে রুখে দিয়েছিল হিমালয় কন্যার দেশকে। প্রস্তুতি ভালো হওয়ায় বাছাইপর্বেও ভালো কিছুর প্রত্যাশা বাংলাদেশ দলের। প্রস্তুতিতে কোন ঘাটতি ছিল না বলেই জানালেন ছোটন। বাছাইপর্বে বাংলাদেশের অপর প্রতিপক্ষ ইরানও অনেক শক্তিধর। তবে তাদের বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা দিতেই প্রস্তুতি নিয়েছে লাল-সবুজরা। এ প্রসঙ্গে ছোটন বলেন, ‘উজবেকিস্তান আসার আগে আমরা নেপালের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলেছি। এতে করে আমাদের মেয়েদের মাঠের ভুল ত্রুটিগুলো খুঁজে বের করে কাজ করার সুযোগ হয়েছে।’

বাংলাদেশ দলের অন্যতম ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকারও নিজেদের পিছিয়ে রাখছেন না, ‘এটা সত্য প্রতিপক্ষরা শারীরিকভাবে শক্তিধর। তবে আমরাও কোন অংশে পিছিয়ে নেই। আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। ওরা চেষ্টা করবে, আমরাও করব। ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এখানে এসেছি। আমরা জয়ের লক্ষ্য নিয়েই খেলতে নামব। একজন স্ট্রাইকার হিসেবে আমার লক্ষ্য থাকবে গোল করার।’ ছোটন আরও জানান, ‘বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই মহামারীর সময়ে মেয়েদের প্রশিক্ষণের জন্য খেলার মাঠ ও আবাসনের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে। অপরদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত কোভিড-১৯ প্রটোকল পালনকরত আমাদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা হয়নি। বাফুফে সর্বক্ষণ মেয়েদের সব সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনা করেছে বিধায় আমাদের এই প্রতিযোগিতায় আসার পূর্ব প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আমাদের কোন অসুবিধা হয়নি।’

ম্যাচের আগেরদিন শনিবার সকালে প্রায় দেড় ঘণ্টা ম্যাচ ভেন্যুতে অনুশীলন করে বাংলাদেশ দল।

২০২২ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্ব। নারী এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ‘জি’ গ্রুপের ম্যাচগুলো বাংলাদেশের সিলেটে আয়োজিত হবার কথা থাকলেও করোনার উর্ধগতির কারণে তা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে সরিয়ে নেয়া হয়। বাছাইপর্ব থেকে আট গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ৮ দল মূলপর্বে জায়গা করে নেবে। সেদিক থেকে বেশ কঠিন গ্রুপেই পড়েছে বাংলাদেশ। আগামী বছর ২০ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মূল আসর অনুষ্ঠিত হবে, স্বাগতিক হিসেবে সরাসরি খেলবে ভারত। এছাড়া গতবারের চ্যাম্পিয়ন জাপান ও রানার্সআপ অস্ট্রেলিয়া এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী চীন সরাসরি খেলবে।

সর্বশেষ ২০১৩ সালে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে তাদের পারফরম্যান্স ছিল বেশ হতাশাব্যঞ্জক। থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স এবং ইরানের সঙ্গে ‘বি’ গ্রুপে খেলা বাংলাদেশ খেয়েছিল ১৫ গোল। করতে পারেনি একটি গোলও!

বয়স ও উচ্চতার দিক থেকে ইরান-জর্দানের মেয়েরা বাংলাদেশ দলের চেয়ে অনেক এগিয়ে। তাছাড়া তারা শারীরিকভাবে অনেক শক্তিশালীও বটে। তবে সাবিনাদের প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে তারা অনেক ক্ষিপ্রগতিসম্পন্ন। কাজেই তারা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দ্রুত খেলার কৌশল অবলম্বন করবে। বাফুফে এখন জিম হয়েছে, মেয়েরা জিম শুরু করেছে। তাতে মেয়েরা শারীরিকভাবে আগের চেয়ে খানিকটা শক্তিশালীও হয়েছে বটে।

বর্তমান দলে ২০১৯ সালের সাফে খেলা দল থেকে বাদ পড়েছেন গোলরক্ষক মাহমুদা আক্তার। নতুন মুখ সোহাগী কিসকু, সাথী বিশ্বাস এবং নাসরিন আক্তার। বাকিরা সবাই একসঙ্গে অনেকদিন ধরে খেলছেন। ২০১৬ সাফে যে বাংলাদেশ খেলেছিল, সেই দলের বেশিরভাগেরই বয়স ছিল ১৫ কিংবা ১৬। অভিজ্ঞ বলতে একমাত্র সাবিনা খাতুনই ছিলেন। সেই দলের চেয়ে এই দলকে আরও পরিপক্ব ও পরিণত মনে করছেন ছোটন।

জর্দান এবং ইরানের বিপক্ষে বাংলাদেশ বয়সভিত্তিক দলের জয়ের অভিজ্ঞতা আছে। সেটাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন ছোটন। তিনি বলেন, ‘দুটি দলই র‌্যাঙ্কিং এবং শক্তির বিচারে এগিয়ে। তবে গত কয়েক বছর ধরে মেয়েরা যেভাবে খেলছে তাতে আমি দল নিয়ে আশাবাদী। নেপালে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ভুল-ত্রুটিগুলো শুধরে নিতে পারব। উজবেকিস্তানে জয়-হার যেকোন কিছুই হতে পারে, তবে আমরা কম্পিটিটিভ ম্যাচই খেলব।’