Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

২৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৫:১৩ পূর্বাহ্ণ

দারিদ্র্য বিদায়ের গল্প

দারিদ্র বিদায়ের গল্পঃ আঠারো চুলার পিঠা বাণিজ্য।

---------------------------------------------------------------------

হাসিমুদ্দিন ও জাহাঙ্গীর দুই ভাই। চর কুড়িগ্রামে বাড়ী। নদীর ভাঙ্গন আর বন্যায় কাহিল অবস্থা। জমি জিরাত নদীর জলে। দিন মজুরী করে জীবন। ব্যাটারী চালিত বাহন চালু হলে অটো চালনাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি। তারপর একবেলা অটো চালানোর পাশাপাশি ভাপা পিঠার দোকান দেন। কুড়িগ্রাম শহরের নাভীমূল ঘোষপাড়াস্থ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকের সামনে একটা চুলো নিয়ে ভাপা ও চিতু পিঠার ব্যবসা শুরু করেন। ঢাকা কুড়িগ্রামের ইকোনমিক ক্লাসের যাত্রীরাই তাঁর খদ্দের ছিলো। মান সম্মত পিঠার কারণে খদ্দের সংখ্যার সাথে সাথে চুলার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। যার সংখ্যা এখন দশটি। দশটি চুলা একসাথেই জ্বলে। অসম্ভব নৈপুন্যে দশটিতেই বিভিন্ন ধরণের পিঠা তৈরী হচ্ছে। একজন পিঠা বানাচ্ছেন আর একজন বিক্রি করছেন। 

প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত বারোটা/একটা অবধি তাঁদের চুলা জ্বলে। প্রতিদিন প্রচুর বিক্রিবাট্টা করেন। ভায়ের দেখাদেখি হাসিমুদ্দিনের দোকানের কাছেই রাস্তার বিপরীতেই হাসিমুদ্দিনের ছোটভাই জাহাঙ্গীরও পিঠার ব্যবসা করেন। তাঁর দোকানে আট চুলা। দু'ভায়ের প্রতিদিনের বিক্রি প্রায় বারো চৌদ্দ হাজার টাকা।

দুই ভায়ের পাশাপাশি পিঠার ব্যবসা কুড়িগ্রাম শহরে মানুষজনের মধ্যে বেশ আলোচনার। মানুষজন লাইন দিয়ে অপেক্ষা করেন পিঠার জন্য। ইদানিং তাঁরা বাসা বাড়িতে পিঠা সাপলাই দেন। 

একসাথে আঠারো উনুনের আগুনে পিঠা বানানোর দৃশ্য যেমন শৈল্পিক তেমনি নজরকাড়া। ব্যবসায়িক সুনামের কারণে ফ্লোটিং যাত্রীর থেকে হাসিমুদ্দিন ও জাহাঙ্গীদের পিঠা শহুরে পরিবারে জায়গা করে নিয়েছে। 

যাঁরা শীতকালে কুড়িগ্রামে বেড়াতে আসবেন তাঁরা হাসিমুদ্দিন- জাহাঙ্গীরের দুই দোকানের পিঠা খেতে না চাইলেও একসাথে আঠারো চুলায় পিঠা ভাজার নৈপুন্য দেখতে ভুলবেন না। 

প্রজ্জ্বলিত উনুনের আগুনে বিনাশ হওয়া কষ্টের গল্প এখানে রয়েছে।

আরো দেখুন