Loading..

খবর-দার

২৫ জুন, ২০২২ ০৭:২৯ অপরাহ্ণ

বিস্ময়কর এক সেতুর নাম পদ্মা সেতু।

একজন মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যতবার আমি পদ্মাসেতুর নির্মাণ প্রকল্পের খুঁটিনাটি নিয়ে পড়ি ততবার আমার মাথা ঘুরে যায়। পদ্মা নদী দুই দিক থেকে পৃথিবীর আর সব নদী থেকে আলাদা। সেই দুটো হলো-

.

১। আমাজন নদীর পর সবচেয়ে বেশি পানি প্রবাহিত হয় এই নদীতে। সেকেন্ডে ১৪০,০০০ ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হয় পদ্মায়।

.

২। নদীর তলদেশে ১০ কিলোমিটার যাওয়ার পর শক্ত পাথর পাওয়া যায়! পুরোটাই নরম মাটি! এরকম আর পৃথিবীর কোন নদীতে নেই! (সূত্রঃ জামিলুর রেজা স্যার, সারাবাংলা.নেট)

.

এরকম ভয়াবহ একটা নদীর উপর ৬ কিলোমিটারেরও বেশি লম্বা একটা দ্বিতল সেতু নির্মাণ করা নিঃসন্দেহে অচিন্তনীয় একটা ইঞ্জিনিয়ারিং এচিভমেন্ট! এটা কতটা অসাধারণ একটা ব্যাপার সেটা বুঝতে একটা তথ্যই যথেষ্ট- এটার পাইলিং এর জন্য যে হ্যামারটা ব্যবহার করা হয়েছে অত বড় হ্যামার দুনিয়াতে আগে ছিলোই না, এই সেতুর জন্য নতুন করে বানানো লেগেছে!

.

খরচের কথা বললে, সেতু বানাতে খরচ হয়েছে আসলে ১১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু নদীশাসন, জমি অধিগ্রহণ আর সেতুর দুইপাশের এলাকায় রাস্তাঘাট, উন্নয়ন ইত্যাদি খরচ মিলিয়ে সেটা ৩০ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে। শুধু সেতু বানাতেই সব টাকা লাগেনি।

.

আর মানুষের সুবিধার কথা কি বলবো। জীবনে একবারই দৌলতদিয়া-পাটুয়ারি ঘাটে জ্যামে আটকানোর অভিজ্ঞতা হয়েছিলো। কি ভয়াবহ সেই রাত! আর যারা প্রতি ঈদে বা যেকোন দরকারে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে তাদের আজকের দিনটার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার ক্ষমতা আমার নেই! যাস্ট তাদের আনন্দের কথা কল্পনা করে আমার মুখে হাসি ফুটে উঠছে ।

.

বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই অর্জন ইতিহাসের পাতায় লিখা থাকবে, কেউ চাক বা না চাক। কিন্তু বাস্তবতা হলো- বাংলাদেশের একটা বিশাল অংশের মানুষের জন্যই আজ বড়ো আনন্দের দিন। বাংলাদেশের পুরো অর্থনীতির উপর এই সেতুর ইতিবাচক ভূমিকা কতটুকু সেটা আমরা অচিরেই দেখতে পারবো!

.