সহকারী শিক্ষক
২৯ জুন, ২০২২ ১২:২৭ অপরাহ্ণ
ইফেক্টিভ মিটিং এর ৭টি নিয়ম
ইফেক্টিভ মিটিং এর ৭টি নিয়ম
দীর্ঘ মিটিং শেষেও আপনি ক্লান্ত হবেন না যদি অনুভব করেন মিটিংটা প্রোডাক্টিভ হয়েছে।
একটা ইফেক্টিভ মিটিং এ পরিষ্কার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, জবাবদিহিতা থাকে এবং মিটিং শেষে প্রত্যেকেই বুঝতে পারে তাদের কাছে কী চাওয়া হচ্ছে, এবং তাদের কী করতে হবে।
কিন্তু বেশিরভাগ করপোরেট মিটিং এমন হয় না। তবে নিজের ৭টা নিয়ম মেনে মিটিংগুলি ইফেক্টিভ করা সম্ভব।
.
#১. মিটিং ঠিক সময় শুরু এবং শেষ করুন
মিটিং ঠিক টাইমে শুরু না হলে মিটিং এর গুরুত্ব কমে যায়। মিটিং পরে শুরু করা মানে, যারা ঠিক সময়ে এসেছেন তাদেরকে শাস্তি দেয়া, পরে এসেও মিটিং এর কোনো অংশ মিস না করা একধরনের পুরস্কার।
শুধু মিটিং নয়, যেকোনো কিছুতেই পুরস্কার-শাস্তির যথার্থ কোনো নিয়ম না থাকলে সেটাতে মানুষের আস্থা কমতে থাকে।
আবার মিটিং আপনাকে নির্ধারিত সময়েই শেষ করতে হবে, সবার সময়ের দাম দিতে হবে। আপনি কোনো কারণে মিটিং দেরিতে শুরু করলেন বলে শেষ করার সময় পিছিয়ে দেবেন না। নির্দিষ্ট সময় শেষ করার নিয়ম মানা হলে মিটিং ফোকাসড থাকে।
.
#২. লিখিত এজেন্ডা ঠিক করুন
কোনো মিটিং যদি লিখিত এজেন্ডা লেখার মত গুরুত্বপূর্ণ না হয়, তাহলে সেই মিটিং-এ থাকারও দরকার পড়ে না। যারা মিটিং-এ উপস্থিত থাকবেন তাদের আগে থেকেই এই লিখিত এজেন্ডা পাঠাতে হবে। কোন টপিকে কথা হবে সেটা আগে থেকে জানা থাকলে সবাই ঠিকঠাক প্রস্তুতি নিতে পারে।
.
#৩. মিটিং থেকে ৱকী ফলাফল চাইছেন সেটা ঠিক করুন
একজন লিডারকে জানতে হয়, ঠিক কী চাচ্ছেন তিনি মিটিং থেকে। আপনি কোথায় যাবেন এটা না জেনে আপনি সেখানে পৌঁছাতে পারবেন না।
যখন মিটিং ডাকবেন তখনই জানান এই মিটিং থেকে আপনি কী চাচ্ছেন, আবার মিটিং শুরুও করুন এটা বলেই।
যেমন “আমরা আজকে মিটিং ডেকেছি আমাদের নতুন সম্ভাব্য কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে, এবং আমরা ঠিক করবো এর মধ্যে কোন প্রোডাক্টটা ডেভলপ করা শুরু করবো আমরা।”
.
#৪. আগের মিটিং-এর সিদ্ধান্ত এবং পদক্ষেপগুলি পর্যালোচনা করুন
আপনারা আগের মিটিং-এ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেগুলি কীভাবে পালন করা হয়েছে, হচ্ছে এসব পর্যালোচনা করে নিন। এতে করে কার অগ্রগতি কতটুকু, কোন কাজে আরও বেশি মনোযোগ দেয়া দরকার, কোন কর্মীকে আরও দ্রুত কাজ করতে হবে সে ব্যাপারগুলি পরিষ্কার হবে।
যে ব্যক্তি যে কাজের সাথে যুক্ত তার কাছ থেকে জেনে নিন কাজের অবস্থা, তাতে করে কর্মীরা বুঝতে পারবেন মিটিং-এ যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সেসব লিডারশিপ লক্ষ্য করে। এতে করে বর্তমান যে মিটিং চলছে তার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কর্মীরা বেশি পরিশ্রম করবেন।
.
#৫.মিটিং এর সিদ্ধান্তগুলির লিখিত নোট নিন (মিটিং মিনিটস)
মিটিং-এ অবশ্যই মিটিং মিনিটস নিবেন। দুইজনের মিটিং হলেও এটা বাদ দেয়া যাবে না। মিটিং মিনিটস আসলে মিটিং-এর সারাংশ। যার কারণে কী কী সিদ্ধান্ত নিলেন এবং কী কী করতে হবে সেসব লিখে রাখাই যথেষ্ট।
আপনি সিদ্ধান্ত লিখে রাখলেন মানে পরে ভুলবোঝাবুঝি হবে না। আর কে কীভাবে কী করবে এই নোট নিলে আপনি যাকে যে কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন সেটার অগ্রগতি সম্পর্কে তার কাছে সময় সময় জানতে পারবেন।
মিটিং শেষ হওয়ার সাথে সাথে সবাইকে মিটিং মিনিটস পাঠিয়ে দিবেন। মিটিং এর রেশ থাকতে থাকতে এর সিদ্ধান্ত এবং কাজের সামারি জানলে ভালো মনে থাকবে সবার।
.
#৬. কী কী করতে হবে সেটা পরিষ্কারভাবে জানান
যিনি মিটিং মিনিটস লিখছেন বা মিটিং-এর নোটস নিচ্ছেন, মিটিং শেষ হওয়ার সাথে সাথে তিনি যে কাজগুলি করতে হবে তার তালিকা জোরে জোরে পড়ে শোনাবেন।
যেভাবে কাজের তালিকাটা লিখবেন:
• ক্রিয়াপদে জোর দিন। যেমন, “হাসানকে ফোন দিবেন আর এই মাসে কত টাকা বিক্রি হয়েছে সেটা জানবেন।”
• আপনি কোন অবস্থাকে কাজের অগ্রগতি ধরবেন সেটা জানান।
• একটা কাজের জন্য একজনকেই দায়িত্ব দিন, যার কাছ থেকে আপনি অগ্রগতি জানবেন।
• কাজের ডেডলাইন সবার মতামত নিয়ে ঠিক করুন।
.
#৭. পরের মিটিং কবে হবে সেটা জানান
সবার সামনে ক্যালেন্ডার থাকলে সুবিধা, ক্যালেন্ডার দেখে নেক্সট মিটিং-এর ডেট ঠিক করা সহজ। না হলে পরে সবার সুবিধা মত পরবর্তী মিটিং-এর দিন আপনার ঠিক করতে সমস্যা হবে।
মিটিং ইফেক্টিভ এমনি এমনি হয় না, এটার জন্য পরিকল্পনা দরকার হয়। প্রতিটা মিটিং শেষ করার পর নিজেকেই জিজ্ঞেস করুন—মিটিংটা কীভাবে আরও প্রোডাক্টিভ করা যেত।
সৌঃ সি বি