Loading..

ম্যাগাজিন

০৩ জুলাই, ২০২২ ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ

সক্রিয় শ্রোতা হওয়ার অভ্যাস করবেন যেভাবে

সক্রিয় শ্রোতা হওয়ার অভ্যাস করবেন যেভাবে

যদি যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরো দক্ষ হয়ে ওঠেনআপনার জীবনের প্রতিটা ধাপ আরো একটু সহজ হয়ে যাবে।

যোগাযোগ দক্ষতা কাজব্যবসাচাকরি এমনকি ব্যক্তিগত সম্পর্কেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

অন্যদিকে যোগাযোগ দক্ষতা না থাকলে ব্যক্তিগত বা পেশাদারপ্রতিটা কাজেই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়।

অনেকেই মনে করেন দক্ষ যোগাযোগের আসল রহস্য হচ্ছে বলতে পারার ক্ষমতাকারো কথা শোনা হয়ত তেমন গুরুত্বপূর্ণ না। এটি ভুল ভাবনা। দক্ষ যোগাযোগের অর্ধেকটাই হচ্ছে শোনা।

যোগাযোগে দক্ষ হয়ে উঠতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে ভাল  সক্রিয় শ্রোতা হয়ে উঠতে হবে। অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। সক্রিয় শ্রোতা হওয়ার অভ্যাস কীভাবে তৈরি করবেনতাই থাকছে এখানে।
.

সক্রিয় ভাবে শোনা জিনিসটা কী?

সক্রিয় ভাবে শোনা হল যে কথা বলছে আপনি তার কথা মন দিয়ে শুনছেন।

অনেক আলাপআলোচনা  কনভার্সেশনেই দেখা যায় শ্রোতা নিষ্ক্রিয় থাকেনপরোক্ষ ভাবে শুনতে থাকেন।

সক্রিয় ভাবে শোনার অর্থ হল কারো কথা শোনার সময় নিজের ইন্দ্রিয়গুলিকে ব্যবহার করা। তাতেযে ব্যক্তি কথা বলছে তার প্রতি পুরোপুরি মনোযোগ দেওয়া যায়।

যখন কারো সাথে আলাপে যাবেনতাকে দেখাতে হবে আপনি তার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছেন। কথা পুরোপুরি শুনছেন সেটা তার কাছে প্রমাণ করতে হবে।

যখন কারো কথা শোনায় সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করবেন তখন সেটা নিয়ে আপনি চিন্তা করবেনআপনার মস্তিষ্ক তা প্রসেস করবে। আপনি যে ওই মুহূর্তে ওই জায়গায় উপস্থিত আছেনযা বলা হচ্ছে তার ভিতরেই আছেন তা যাতে আপনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ থেকে বোঝা যায়।
.

সক্রিয় ভাবে শোনার অভ্যাস তৈরি করবেন যেভাবে

সক্রিয় শ্রোতা হওয়ার অভ্যাস ধাপে ধাপে তৈরি করতে হয়। মনোযোগী শ্রোতা হওয়ার জন্য আপনাকে নিচের প্রতিটা পয়েন্ট ধরে ধরে পূরণ করতে হবে না। এগুলিকে বরং পরামর্শ বা নির্দেশনা হিসাবে নিন।
.

#
আই কন্ট্যাক্ট ঠিক রাখুন
কারো চোখের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে হবে না। সাধারণ আই কন্ট্যাক্ট বজায় রাখুন। এতে বক্তার চেয়েশ্রোতা হিসাবে আপনারই বেশি লাভ হবে।
আই কন্ট্যাক্ট বজায় রাখলে আপনি স্বাভাবিকভাবেই বক্তার প্রতি মনোযোগ দিতে বাধ্য থাকবেন। এতে মনোযোগ অন্যদিকে সরে যাবে না। আরঅন্যদিকে যে বলছে সে বুঝতে পারবে আপনি তাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন।
.

#
বেশি উশখুশ করবেন না

কথা শোনার সময় মাঝে মাঝে আশেপাশে তাকানোনড়েচড়ে বসা এগুলি ঠিক আছে। যা ঠিক নাইতা হল সবসময় আশেপাশে তাকানোকলম নাড়াচাড়া করা বা ফোনের দিকে বার বার তাকানো।
উশখুশ করলে যে বলছে সে মনে করবে আপনি তার কথা শোনার ব্যাপারে তেমন আগ্রহী না।
.

#
হস্তক্ষেপ করবেন না

এটা কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম না। কোনো ব্যাপারে আপনার আগ্রহ থাকলে বা স্পষ্ট করে শুনতে চাইলে ভদ্রভাবে জিজ্ঞেস করতেই পারেন।

কিন্তু প্রতিটা বাক্যেই বক্তাকে থামিয়ে যদি নিজের কথা বলেনবা নিজের মতামত জানান তাহলে সেটা কথার মাঝখানে হস্তক্ষেপ করা।
.

#
বক্তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজে নজর দিন

যোগাযোগের অনেকটাই ঘটে ভাষার বাইরেঅভিব্যক্তি  বডি ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে। মুখে যা বলা হয় তার বাইরেও অভিব্যক্তি  বডি ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে অনেক কিছু প্রকাশিত হয়।

সুতরাংবক্তা কথা বলার সময় অভিব্যক্তির মাধ্যমে যে ক্লু দিচ্ছে সেটা লক্ষ্য রাখুন। যে কথা বলছে সে উশখুশ করছে কিনানার্ভাসনেসের কারণে আই কন্ট্যাক্ট এড়িয়ে যাচ্ছে কিনা সেটা দেখুন।
.

#
বক্তার কথার পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে পরিষ্কার করুন

কেউ যখন আমাদের সাথে কথা বলে তখন সব ডিটেইল পরিষ্কার করে বলে না। প্রয়োজন অনুযায়ী বক্তার কথা পুনরাবৃত্তি করুনকোনো ডিটেইল স্পষ্ট করেন।

তার কথার বিভিন্ন জায়গায় আপনি যোগ করতে পারেন, "আপনি বলছেন যে?", "ঠিক!" ইত্যাদি।

বলতে পারেন, "আমি আপনার কথা থেকে যেটা বুঝলাম…" তাহলে বক্তা বুঝতে পারবে তার যা যা বলা প্রয়োজন সে তা বলতে পারছে।
.

#
বক্তাকে উৎসাহ দিন

কেউ যখন কথা কথা বলতে বলতে হঠাৎ থেমে যায় বা কী বলবে বুঝতে পারছে নাতখন তাকে উৎসাহ দিয়ে সাহায্য করুন। তাকে ডিটেইল বলতে উৎসাহ দিন।

তার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিবেন না। শুধু আপনার আগ্রহ জানান দিন। যেমনজিজ্ঞেস করতে পারেন, "তারপর কী হল?"
.

#
জিজ্ঞাসা করুন

যখন কোনো তথ্য জানা দরকারতখন সেটা জিজ্ঞাসা করবেন। তবে সবসময় মনে রাখবেন আপনার উদ্দেশ্য তার মুখ থেকে কথা কেড়ে নেওয়া নাসক্রিয় ভাবে তার কথা শোনা।

কেউ যখন কোনো ঘটনা বা অভিজ্ঞতা বলছে তখন জিজ্ঞেস করতে পারেন, "আপনার কেমন লাগল?" বা, "আপনার প্রতিক্রিয়া কী ছিল?"

অর্থাৎবক্তার কথা শোনার মধ্য দিয়ে আপনি যেন কিছু অনুসন্ধান করছেন এমন মনোভাব প্রদর্শন করুন।
.

#
কথা কম বলবেন

যদিও এই কথাটা বিভিন্ন ভাবে উপরে বার বার বলা হয়েছে। তবে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটা বুলেট পয়েন্ট হিসাবে এটাকে মনে রাখবেন।
মনে রাখবেনসক্রিয় শ্রোতা হতে হলে আপনাকে সবার শুরুতে যেটা করতে হবে সেটা হল মনোযোগ দিয়ে অন্যের কথা শুনতে হবে। আপনার ভূমিকা হলবেশি কথা না বলা।
.

#
তাল মিলান

যার কথা শুনছেন তার কথার সাথে তাল মিলান।

সে যদি কোনো ঘটনা বা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলতে থাকে তাহলে আপনি আপনার জায়গা থেকে বলতে পারেন, "আমি বুঝতে পারছি আপনার কেমন লাগছিল।"

বলতে পারেন, "আপনার জায়গায় আমি থাকলে আমিও একই কাজ করতাম।তবে ভান করবেন না।
.

শেষ কথা

আপনার যদি যোগাযোগ করার ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে জীবনের প্রতিটা সম্পর্কের ক্ষেত্রে সেটা কাজে লাগবে। সেটা ব্যক্তিগত সম্পর্ক হোকপেশাগত সম্পর্ক হোক বা হোক ব্যবসায়িক সম্পর্ক।

আপনি যদি সক্রিয় ভাবে শোনার অভ্যাস তৈরি করেন তাহলে আপনার যোগাযোগের দক্ষতা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এটা প্রমাণিত। কারণমনোযোগ দিয়ে শোনাটাই হচ্ছে অর্ধেক যোগাযোগ। 

সৌঃ সি বি 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি