Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

০২ নভেম্বর, ২০২২ ০৯:৩২ অপরাহ্ণ

মোমবাতির মতই প্রজ্বলমান অনলাইন পাঠদানকারী শিক্ষক।

মোমবাতির মতই প্রজ্বলমান অনলাইন পাঠদানকারী শিক্ষক।


 মোমবাতি নিজে জ্বলে তার চারপাশ আলোকিত রাখার জন্য।একজন শিক্ষকও নিজ দায়িত্বেই মোমবাতি হয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। কোভিড-১৯ সেটা নতুনভাবে প্রমাণ করে দিল।


১৭মার্চ/২০২০খ্রি. আমরা চিরচেনা পরিবেশ, চিরচেনা কোলাহল, নিত্যকার অভ্যাস সবকিছু থেকেই হঠাৎ ছিটকে পরেছি।মনে নানান ভয় আর উৎকন্ঠা নিয়ে দিন কাটিয়েছি আমরা,তখন মনে হয়েছিল আগে সুস্থ থাকি বেঁচে থাকি।

প্রথমদিকে ঘরে বসে থাকতে কিছুটা আরামদায়ক মনে হলেও কিছুদিন যেতেই সেটা অস্থিরতায় রূপ নিয়েছে।একদিকে মহামারির ভয় অন্যদিকে চিরচেনা অভ্যাস দুটোই সমানভাবে তাড়া করে ফিরছিল আমাদের।

আজকাল প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা আর পিছিয়ে নেই,সামনে তাকাতে শুরু করেছি।কোভিড-১৯ আমাদের কাছ থেকে অনেক কিছু কেড়ে নিলেও আমাদেরকে অনেক বেশি ডিজিটালাইজড করেছে।

করোনা যোদ্ধা (অনলাইন) শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত নিজেকে যুক্ত রেখেছেন মোবাইল, ল্যাপটপ, ডাটা,ওয়াইফাই ইত্যাদির মাঝে ভার্চুয়াল জগতের সাথে।সবার মাথায় একই চিন্তা আমাদের সন্তানরা যেন কোভিড-১৯ এর কবলে পড়াশোনা থেকে ছিটকে না যায়।কারণ আমরা জানি ঝরে পরা শূণ্যের কোটায় নামিয়ে আনতে কতটা মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়েছে।শতভাগ পাশের হার নিয়ে যখন সবাই উল্লাসে মেতে উঠে একেকজন আলোর দিশারি অনুভব করেন উল্লাসের পিছনে কতটা শ্রম।


আমরা ধীরে ধীরে আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে গেছি আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্য নিয়ে এবং সেটা ঘরে বসেই।

ভালো সাঁড়া পেয়েছি আমাদের সম্মানিত অভিভাবক দের কাছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে যাওয়ার একমাত্র উপায় আমদের অভিভাবক বৃন্দ।উনারাও যেন হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন, যখন কথা হয় বেশ আনন্দের সাথেই বলেন অনলাইন ক্লাস না থাকলে হয়তো পড়ার টেবিলেই বসতে চাইতো না।তখন মনে হয় আমরা সফল।


এখনো কোভিড-১৯ এর কবলেই আছি,একদিকে সুস্থ থাকার প্রাণান্ত চেষ্টা অন্যদিকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধরে রাখার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা। পৃথিবীর এই ক্রান্তিলগ্নে একমাত্র শিক্ষকরাই আলোর প্রদীপ হয়ে নিজের ক্ষুদ্র সামর্থ্য নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছি নিজের অস্তিত্ব কে টিকিয়ে রাখতে। কারণ আমরা অনুভব করেছি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের দিকেই তাকিয়ে - তাদের ধরে রাখতে হবে, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।আমরা আজীবন মোমবাতির মত নিজে জ্বলে চারপাশ আলোকিত রাখার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

যেখানে গ্রাসের রাজত্বে বিভিন্ন মহল এই নিদারুণ পরিস্থিতিতেও ব্যস্ত,ঠিক সেই মুহুর্তে আমরা প্রদীপ নিয়ে ছুটছি দ্বারে দ্বারে পৌঁছানোর চেষ্টায়।

আমরা অন্তবর্তীকালীন পাঠ পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহের ওয়ার্কশীট বিতরণ করছি, বাড়ির কাজ গ্রহণ করছি,মূল্যায়ন করছি।অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী "গুগল মিট" এর সাথে নতুন যাত্রা শুরু করেছি।সেখানে ধীরে ধীরে লক্ষ্যে পৌঁছার প্রাণান্ত চেষ্টায় আছি।এখানেও নতুন অভিজ্ঞতা,ওদের সাথে সরাসরি কথা বলতে পারছি,ভাব বিনিময় করতে পারছি।বড় বড় চোখে স্কীনের দিকে তাকানো, একে অন্যের দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হাসাহাসি - এ এক অন্যরকম অনুভূতি। 

আমাদের ধ্যান একটি শিশুও যেন বঞ্চিত না হয় এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা থেকে।দিনরাত নতুন নতুন উপায় খুঁজে চলেছি,চলেছে অবিরাম অনলাইন যুদ্ধ।অন্তত এখন আর হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই,তারা বইয়ের সাথে আছে এটা নিশ্চিত। 

আলো আসবে খুব শীঘ্রই, স্বপ্নের পথে হাটছি প্রত্যাশা নতুন স্বাভাবিক বিশ্বের।

সংগৃহীত 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি