Loading..

শিক্ষায় অগ্রযাত্রা

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ণ

অভিভাবক সমাবেশে শিক্ষকের বক্তব্য
  • অভিভাবক সমাবেশ মূলত অনুষ্ঠিত হয় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা এবং নৈতিক আচার আচরণ যেন আরো ভালো হয় সেই বিষয়কে লক্ষ্য রেখে। এই জন্য অবশ্যই অভিভাবক সমাবেশে আপনাকে শিক্ষার্থীর প্রাত্যহিক পড়া ও বাড়ির কাজ সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা কিভাবে মানুষের মতো মানুষ হবে ও সমাজের ভালো কাজে নিজেকে যুক্ত করবে তার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে।
  • মূলত এই কয়েকটি পয়েন্ট যদি আপনি সাজিয়ে গুছিয়ে বলতে পারেন। তাহলে আপনার বক্তব্যটি অনেক সুন্দর হবে। প্রথমে আপনাকে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আপনার মধ্যে কোন ভয় ভীতি সৃষ্টি করা যাবে না। আপনি সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক উচ্চারণের মাধ্যমে অভিভাবক সমাবেশে বক্তব্য পেশ করবেন। অভিভাবক সমাবেশে শিক্ষকের বক্তব্য নমুনা পত্র দেখে নেই।
  • অভিভাবক সমাবেশে শিক্ষকের বক্তব্য

“আজকে অভিভাবক সমাবেশে উপস্থিত আছেন অত্র বিদ্যালয়ের সম্মানিত সভাপতি সাহেব, আরো উপস্থিত আছেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ সহকারী শিক্ষকগণ। এছাড়াও এখানে উপস্থিত আছেন আমাদের সকল শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। সকলের প্রতি রইল আমার আন্তরিক সালাম আসসালামু আলাইকুম। অন্যান্য ধর্ম ও জাতির প্রতি রইল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। 

আপনারা সবাই অবগত আছেন প্রত্যেক মাসের প্রথম সপ্তাহে আমরা অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। আপনাদের সকল ব্যস্ততার মধ্যে আমাদের এই অভিভাবক সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছেন তার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। 

আমি আপনাদের মধ্যে আজকের কিছু কথা শেষ করে আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করব। বক্তব্যের শুরুতেই বলতে চাই আমি মূলত আইসিটি বিষয়ক শিক্ষক।ষষ্ঠ থেকে দশম  শ্রেণির আইসিটি সাবজেক্ট আমি নিয়ে থাকি। সত্যি কথা বলতে আমাদের বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরাই আইসিটি অনেক দুর্বল।  এই কারণে সকল শিক্ষার্থীকে অবশ্যই আইসিটি পারদর্শী হতে হবে। 

 একজন শিক্ষার দিকে ভালোভাবে গড়ে তোলার জন্য বিদ্যালয়,শিক্ষক ও অভিভাবকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি একজন অভিভাবক হিসেবে সন্তানের যথাযথ পড়াশোনার বিষয় সিরিয়াস। কিন্তু বিদ্যালয় বা শিক্ষক এ বিষয়ে সিরিয়াস না। তাহলে কিন্তু সেই শিক্ষার্থী কখনো ভালো ছাত্র হতে পারবে না। 

আবার দেখা যায় শিক্ষার্থীর পড়াশোনার বিষয়ে শিক্ষক যদি সিরিয়াস হয়। তাহলে অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবক সিরিয়াস হয় না। সেক্ষেত্রেও কিন্তু একজন শিক্ষার্থী ভালো স্টুডেন্ট হতে পারবেনা। এই কারণে শিক্ষক ও অভিভাবকের দুজনকেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে।  

আমরা শুধু একজন শিক্ষার্থী থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আট ঘন্টা দেখাশোনা করতে পারি। কিন্তু বাকি ১৬ ঘন্টা কিন্তু সে বাড়িতে থাকে। এই কারণে বিদ্যালয়ের চেয়ে শিক্ষার্থী বাড়িতে কিন্তু বেশি সময় পাচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীকে বাড়িতে পড়ার বিষয়ে প্রত্যেক অভিভাবককে জোরদার চাপ দিতে হবে। এখন ধরুন আমি বিদ্যালয় সকল পড়ার ঠিকঠাকভাবে দিয়ে দিলাম। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে সে খেলাধুলা, টিভি দেখা ও মোবাইল ফোন চাপায় ইত্যাদি কাজে সাথে যুক্ত থাকে। তাহলে কখনোই সেই শিক্ষার্থী সফল হতে পারবে না। 

বর্তমান সময়ে কোন অভিভাবক আপনার সন্তানকে স্মার্টফোন হাতে দিবেন না। কারণ এখন প্রায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী মোবাইল গেমে আসক্ত থাকে। দেখা যায় সারারাত গেম খেলার পর, অনেকদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে। বিশেষ করে ছেলেদের মধ্যে গেম খেলার আসক্তি অনেক বেশি থাকে। এই কারণে যে সকল অভিভাবক আপনার সন্তানকে স্মার্ট ফোন কিনে দিয়েছেন। আজকে বাড়িতে গিয়ে স্মার্ট ফোন আপনার কাছে নিয়ে নেবেন। তাহলে তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হতে পারে। আর যদি স্মার্টফোন আপনার সন্তানের কাছে রেখে দেন। তাহলে তার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত অন্ধকার। 

প্রত্যেক অভিভাবক কে বলব আপনার সন্তানকে সময় দিন। দেখা যায় এমন অনেক অভিভাবক আছে অভিভাবক সমাবেশে উপস্থিত থাকেন না। একজন অভিভাবক যদি অভিভাবক সমাবেশে উপস্থিত না থাকে। তাহলে তার সন্তানের ভবিষ্যৎ কেমন হবে আপনারাই বলুন। বর্তমান সময়ে দেখা যায় আমরা সকল অভিভাবক বাচ্চাদেরকে সঠিকভাবে সময় দেই না। নিজেরা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকে। আপনাকে অবশ্যই এই বদ অভ্যাস পরিহার করতে হবে। 

আপনার সন্তানকে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় দিন। তার বিদ্যালয় কি পড়া দেওয়া আছে সেই পড়াগুলো নিয়ে আপনি আলোচনা করুন। সন্তানের হাতে স্মার্টফোন না দিয়ে বিকেল বেলায় তার সাথে ঘুরতে যান বা খেলাধুলা করুন। তাহলে দেখবেন আপনার সন্তানের মোবাইল আসক্তি অনেকটা কমে যাবে। 

এর পাশাপাশি আপনি সপ্তাহে একদিন বিদ্যালয়ে এসে সকল স্যারের সাথে কথা বলুন। যে আপনার সন্তান নিয়মিত বাড়ির কাজ করছে কিনা। সে নিয়মিত পড়ালেখা করে কিনা এটা জানা কিন্তু জরুরী। এই কারণে সপ্তাহে একদিন আপনি বিদ্যালয় এসে ঘুরে যান। তারপর সেই অনুযায়ী আপনার সন্তানকে পড়ার চাপ দিতে থাকবেন। তাহলে দেখবেন সে একদিন ভালো শিক্ষার্থী হয়ে যাবে। 

আসলে সময় স্বল্পতার কারণে বক্তব্য বাড়াতে পারছি না। আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য মোটামুটি এখানে শেষ করছি। বক্তব্যের শেষে আবারো বলতে চাই আপনার বাচ্চাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় দিন এবং তার যদি মোবাইল ফোন চাপার নেশা থাকে তাহলে সেটা বন্ধ করে দিন। তাহলে দেখবেন আপনার বাচ্চার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। আমার বক্তব্যের মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আসসালামু আলাইকুম।”

উপসংহার

অভিভাবক সমাবেশে শিক্ষকের বক্তব্য নমুনাপত্র আপনাদের সামনে প্রকাশ করেছি। আপনি ইচ্ছা করলে এর সাথে আরো কিছু বিষয় নিযুক্ত করে অভিভাবক সমাবেশে বক্তব্য রাখতে পারেন। আমরা আজকে আপনাদের একটু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তো আজকের আর্টিকেল কেমন হলো তা অবশ্যই কমেন্ট করবেন। 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি