Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

১২ মার্চ, ২০২৩ ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাব

জ্ঞানের অবদানে দিন দিন উন্নত হচ্ছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তির বলে আজ মানুষের হাতের মুঠোয় সারা বিশ্ব। উন্নত বিশ্বের ধারাবাহিকতায় পিছিয়ে নেই আমরাও। আমাদের হাতের নাগালেই আজ মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার। আমরা অনেকে আবার এসব প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি খুব বেশি আসক্ত। যারা খুব বেশি প্রযুক্তিতে আসক্ত, তাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ। খুব বেশি সময় এ প্রযুক্তি নিয়ে সময় ব্যয় করলে আমাদের শরীর ও মনে এর কিছু ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। আসুন জেনে নিই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্যগত কিছু সমস্যা

স্মার্টফোন, ট্যাবলেট কিংবা ল্যাপটপ এখন কর্মক্ষেত্রে কাজের পাশাপাশি ফ্যাশনের জন্যও প্রচুর ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এসবের অতিরিক্ত ব্যবহার শরীর ও মনের জন্য ক্ষতিকর। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, এসব যন্ত্রের অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষকে প্রযুক্তির দাস বানিয়ে দিচ্ছে। এতে মানুষ ধীরে ধীরে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া এসব প্রযুক্তি অনেক ক্ষেত্রেই মনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আর এতে অনেকেই বিষণœতাসহ অন্যান্য মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে শারীরিক পরিশ্রম কমে যাওয়ায় সারাদিন বসে কাজ কাজ করার দরুন মুটিয়ে যাওয়াসহ শরীরে সার্ভাইক্যাল স্পনডাইলোসিস, লাম্বার স্পনডাইলোসিস, মাসেল স্পাজমসহ হাড় ও জয়েন্টের নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া অতিরিক্ত প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের মস্তিষ্ক ও চোখের বিভিন্ন রোগেরও কারণ। সুইডেনের ইউনিভর্সিটি অব গুটেনবার্গের গবেষক সারা থমি বলেন, প্রযুক্তির সময় স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে এর স্বাস্থ্যকর ব্যবহার জানতে হবে। সারা থবি একদল গবেষক নিয়ে মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের ওপর গবেষণা চালান। দীর্ঘ ১ বছর গবেষণার পর দেখা যায়, যারা অতিরিক্ত সময় মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার ব্যবহার করেন, তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সাধারণদের চেয়ে অনেক খারাপ অবস্থায়। গবেষণায় দেখা গেছে, এদের অতিরিক্ত প্রযুক্তির ব্যবহারকারীদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই বেশি এবং এদের বেশিরভাগই অনিদ্রাসহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যাায় ভুগছেন। সম্প্রতি ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী গবেষণা শেষে জানিয়েছেন, মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় মানুষের রক্তচাপ ১২১/৭৭ থেকে বেড়ে গিয়ে ১২৯/৮২ হয়। তাই যারা দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোনে কথা বলেন, তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।

শেষ পর্যন্ত গবেষকরা গবেষণা শেষে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, যারা একটানা দীর্ঘক্ষণ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করছেন, তাদের বেশিরভাগই শারীরিক ও মানসিক কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন।

অতিরিক্ত সময় প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে নেই আমরাও। তাই আমাদের দেশেও দিন দিন বেড়ে চলছে শারীরিক ও মানসিকভাবে আক্রান্ত বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা। ঢাকার মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেইসবুক, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে দিন দিন এ জাতীয় মানসিক রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। তাই যারা মোবাইল, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার ব্যবহারে বেশি আসক্ত, তারা এখন থেকেই সতর্ক হন ও সুস্থ মন ও শরীর নিয়ে সামনে এগিয়ে যান।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি