ঠান্ডা
আবহাওয়ায় আর শীতের শুষ্কতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নাজুক ত্বক। আর নাজুক এ
ত্বকের যত্নে শীতে অনেকেই প্রাধান্য দেন খেজুরকে। কিন্তু শুকিয়ে যাওয়া
শুকনো ফল খেজুর খেলে শরীরে কী পরিবর্তন হয় তা হয়তো অনেকেরই অজানা।
পুষ্টিবিদরা
বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের অত্যন্ত সুস্বাদু ও পরিচিত ফল খেজুরে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে ফাইবার, আয়রন, ভিটামিন এবং ম্যাগনেসিয়ামসহ নানান পুষ্টিগুণ। আর এই
সব উপাদানই অতীব প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে শীতের মৌসুমে।
আসুন একে একে জেনে নিই শীতে শুকিয়ে যাওয়া খেজুর খাওয়ার কিছু উপকারিতার কথা–
১।
বয়সের ছাপ প্রথমে ত্বকেই ধরা পড়ে। আর এ ত্বকই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়
শীতকালে। তাই ত্বকের যত্নে খেজুর কাজে লাগাতে পারেন। নিয়মিত খেজুর খাওয়ার
অভ্যাস ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচায়। ত্বকের নানা সমস্যা থেকেও খেজুর
মুক্তি দেয়। ত্বকের বলিরেখা নিয়ন্ত্রণ করতেও খেজুর সিদ্ধহস্ত। এ ছাড়া
ত্বকের ফ্যাকাশে ভাব ও হরমোনের সমস্যা কমাতে খেজুর কার্যকরী।
২।
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল বিদ্যমান থাকায় নানান রোগ নিরাময় করার
ক্ষমতা রয়েছে এই ফলটির। পাশাপাশি এর পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয়
চাহিদা মেটায়।
৩।
ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়ক। আর খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম,
যা হাড়কে মজবুত করে। সেই সঙ্গে মাড়ির স্বাস্থ্যও সুরক্ষিত রাখে।
৪। শরীরে আয়রনের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করে খেজুর। একই সঙ্গে খেজুরের মিষ্টতা চিনির বিকল্প হিসেবে কাজ করে।
৫।
শীতে হজমশক্তি কমতে শুরু করে। তাই এ সময় খেজুর খাওয়ার অভ্যাসে আপনার
হজমশক্তি বাড়বে। কারণ, অন্ত্রের কৃমি ও ক্ষতিকারক পরজীবী প্রতিরোধে খেজুর
বেশ সহায়ক। খেজুরে আছে এমনসব পুষ্টিগুণ, যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে এবং
কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে।
৬।
খেজুরে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। এই আয়রন শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা
বৃদ্ধি করে। শরীরে রক্তাল্পতা দেখা দিলে বা হিমোগ্লোবিনের কমতি হলে খেজুর
খাওয়া শুরু করুন। এর ফলে শরীরের আয়রনের মাত্রা বজায় থাকবে। হিমোগ্লোবিনের
মাত্রা স্বাভাবিক হবে এবং রক্তের কোষ উৎপন্ন হবে।
৭।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুর শরীরের খারাপ ধরনের কোলেস্টেরল কমায়
(এলডিএল) এবং ভালো কোলেস্টেরলের (এইচডিএল) পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
তাই হৃদ্রোগ প্রতিরোধ করতে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত খেজুর খাওয়ার
অভ্যাস করতে পারেন।
৮। খেজুর নানা ভিটামিনে পরিপূর্ণ থাকায় এটি মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনার গতি বৃদ্ধি রাখে, সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
৯।
যকৃতের সংক্রমণ কিংবা অ্যালকোহলজনিত বিষক্রিয়ায় খেজুর বেশ উপকারী। এ
ছাড়া শীতকালীন সমস্যা যেমন: গলাব্যথা, বিভিন্ন ধরনের জ্বর, সর্দি এবং
ঠান্ডার সমস্যা দূর করতে খেজুর দারুণ কাজ করে।
১০।
শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় অনেকেরই অলসতা আর ঝিমুনি ভাব দেখা দেয়। এ সমস্যার
সমাধান হিসেবেও খেতে পারেন খেজুর। প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকার
কারণে খেজুর খুব দ্রুত কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই শীতে নিয়মিত খেতে
পারেন ড্রাই ফ্রুট বা শুকনো ফল খেজুর।