Loading..

শিক্ষায় অগ্রযাত্রা

০৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০৯:২৩ অপরাহ্ণ

নতুন পৃথিবীর তরুণ স্থপতি!!

পৃথিবী বদলে গেছে। বলা ভালো আমূল পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী। বিগত কয়েক বছরে শুধু মহামারি আর যুদ্ধই না, পৃথিবীবাসীর অভিজ্ঞতার ঝুলিতে এখন নতুন এক পরিবর্তন যুক্ত হয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছে পৃথিবী। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দখল করে নিচ্ছে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক জগৎকে।পৃথিবী এখন প্রতি মুহূর্তে বদলে যাচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিবর্তনের প্রভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। বৈশ্বিক এই অগ্রযাত্রার সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে যেতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করেছে ‘রূপকল্প ২০৪১’ শিরোনামের একটি কৌশলগত পরিকল্পনা বা স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান। মূলত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত ও জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল প্রণীত পরিকল্পনা এটি। ‘রূপকল্প ২০৪১’-এর অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করতেই মূলত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প’ প্রণয়ন করা হয়েছে যার মূল লক্ষ্য হলো ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে উদ্ভূত অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এগিয়ে যাওয়া। এ লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিটি খাতেই শুরু হয়ে গেছে কাজ করা। থেমে নেই কোনো সেক্টরই। 

চতুর্মুখী পরিবর্তনের এ প্রভাব আমাদের স্থাপত্য ও নির্মাণশিল্পে এসেও পড়েছে। পৃথিবীব্যাপীই বদলে যাচ্ছে স্থাপত্য পেশার চর্চা ও ধরন। 

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দ্রুত প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য বিশ্বব্যাপী স্থাপত্য পেশা একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। উন্নত দেশগুলোতে স্থপতিরা এখন দক্ষ এবং উদ্ভাবনী ডিজাইনের জন্য এআই এবং রোবোটিক্সের মতো অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করেন। টেকসই স্থাপত্য যেমন অবিচ্ছেদ্য হয়ে উঠেছে তেমনি পরিবেশবান্ধব অনুশীলন এবং স্থিতিস্থাপক স্থাপত্যের দিকেও ঝুঁকে পড়ছে বিশ্ব। থ্রিডি প্রিন্টিং ও অন্যান্য স্মার্ট উপকরণের ব্যবহারের প্রসার বাড়ছে যা নির্মাণ পদ্ধতিতে এনেছে প্রভূত উন্নয়ন। প্রাকৃতিক ও ভৌত পরিবেশের রক্ষক হিসেবে স্থপতিরা একটি টেকসই, স্থিতিস্থাপক এবং প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ কারণেই স্থপতিদের এখন আন্তঃবিভাগীয় সহযোগিতা, প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান, টেকসই নির্মাণ কাজ, স্থায়িত্ব এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। এমন প্রেক্ষাপটে নতুন করে ভাবতে হবে বাংলাদেশেবহু যুগ ধরে চলে আসা স্থাপত্য চর্চা নিয়ে। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কি আদৌ যুগোপযোগী? তরুণ স্থপতিদের কি উন্নত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন? যদি সে প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়ে থাকে তবে কোন কোন বিষয়ে জোরারোপ করতে হবে? কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে? এ সম্পর্কিত দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবেই বা কারা দায়িত্ব পালন করবে? শুধুই বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট নাকি সমন্বিত উদ্যোগ, কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন? এসব বিষয়ে ভাবার এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার উপযুক্ত সময় কিন্তু এটাই। সমগ্র বিশ্বেই স্থাপত্যচর্চা ভিন্ন আঙ্গিকে অগ্রসর হচ্ছে। সেখানে শুধুই প্রযুক্তি নয় বরং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো জটিল বিষয়ও অগ্রাধিকার পাচ্ছে। সেদিক থেকে বিচার করলে বাংলাদেশে অনেকটাই ঘাটতি দেখা যায়। এখনও আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সেভাবে কারিকুলাম হালনাগাদ করে উঠতে পারেনি। উপরন্তু এ দেশে দ্রুত নগরায়ণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ঊর্ধ্বগতি স্থাপত্য পেশাকে আরও জটিল করে তুলছে। নির্মাণকাজে এসেছে উল্লাখযোগ্য পরিবর্তন। বেশ কিছু মেগা প্রজেক্ট চলমান আছে যেখানে স্থপতিদের কাজের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও পরিবেশ রক্ষার্থে এখন ভবনের সনদপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা যেমন- লিড সার্টিফিকেশন, এনভারনমেন্ট ইম্প্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট (ইআইএ) স্ট্র্যাটেজিক এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট (এসইএ) ইত্যাদি। 

আরো দেখুন