Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

২৪ ফেব্রুয়ারি , ২০২৪ ১০:২৬ অপরাহ্ণ

শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে যেভাবে

শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে যেভাবে
নতুন এই শিক্ষাক্রমে প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যবইকে কয়েকটি অভিজ্ঞতায় ভাগ করা হয়েছে, যা কাঠামোর দিক থেকে এখনকার বইগুলোর অধ্যায়ের মতো। শিক্ষক প্রতিটি অভিজ্ঞতা চারটি ধাপে পাঠদান বা শিখন-প্রক্রিয়া সঞ্চালনা করবেন। কোনো অভিজ্ঞতার প্রথম ধাপে তিনি একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে একক, দ্বৈত বা দলীয় কাজে শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা যাচাই করবেন। দ্বিতীয় ধাপে শিক্ষক আগের অভিজ্ঞতার প্রতিফলনের জন্য শিক্ষার্থীর প্রতিক্রিয়া শুনবেন—একক বা দলীয়ভাবে। এর জন্য শিক্ষক প্রয়োজনে আলোচনা করবেন। শিক্ষক তৃতীয় ধাপের কাজে শিক্ষক-সহায়িকায় দেওয়া নির্দেশিকার অনুসরণে শিক্ষার্থীর মধ্যে বিষয়টি ঠিকভাবে সঞ্চালিত হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন।

চতুর্থ ধাপে শিক্ষার্থীরা প্রথম তিন ধাপে অর্জিত জ্ঞান ব্যবহার করে নিজে একটি কাজ করবে। সেই কাজের মূল্যায়নও হবে নির্দিষ্ট ফরম্যাটে। মূল্যায়নের প্রতিটি ধাপের ফরম্যাট বা নির্দেশিকা পূর্বনির্ধারিত মূল যোগ্যতার অনুযোগ্যতার ভিত্তিতে সাজানো হয়েছে।

উল্লিখিত সবকিছু শিক্ষক সহায়িকায় লেখা থাকবে, যা প্রত্যেক শিক্ষক ব্যবহার করতে বাধ্য থাকবেন। এতে শিক্ষকের মাথা ঘামাতে হবে না এবং একটি নির্দিষ্ট কাঠামো সারা দেশে অনুসৃত হবে। সব বিষয়ের সব অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন হবে একটি অ্যাপের মাধ্যমে, যা অফলাইনেও কার্যক্ষম থাকবে। বিশেষজ্ঞরা এটি তৈরি করেছেন এবং এই অ্যাপের মাধ্যমে সব তথ্য সরকারি (এনসিটিবি) সার্ভারে সংরক্ষিত থাকবে।

সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে যেভাবে
বছরে দুইবার সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে—বছরের মাঝে একবার এবং শেষে একবার। কিন্তু সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য শিক্ষার্থীদের আগের মতো আর প্রশ্নপত্র ও পরীক্ষার খাতা নিয়ে বসতে হবে না। শিক্ষক সামষ্টিক মূল্যায়নের আগে শেষ হওয়া অভিজ্ঞতাগুলোকে সমন্বয় করে একটি সমস্যা দেবেন। শিক্ষার্থীরা কখনো দলে বা কখনো একা বসে সমস্যার সমাধান করবে। সমস্যা সমাধানের এই সময়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন যোগ্যতার সূচকে মূল্যায়ন করবেন। প্রতিটি বিষয়ের সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে তিন থেকে পাঁচ দিনব্যাপী উৎসবের পরিবেশে।

গত দুই শতাব্দী পরীক্ষা বলতে আমরা বুঝেছি, বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে হলরুমে দীর্ঘ সময় বসে সরবরাহ করা প্রশ্নের উত্তর লিখে যাওয়া। ‘পরীক্ষায় ভালো’ না করলে মন খারাপ করা। নতুন পদ্ধতিতে এমনটি ঘটার সুযোগ থাকছে না। বছরভর মুখস্থ করে কেবল লিখতে পারার ওপর মূল্যায়ন আর নয়। এই পদ্ধতির মূল্যায়নে থাকছে না নম্বর দিয়ে শিক্ষার্থীদের গ্রেডেড করা। মূল্যায়ন করা হবে শিক্ষক সহায়িকায় লিখিত প্রারম্ভিক, অন্তর্বর্তীকাল ও দক্ষ তিনটি মানের ওপর। বছর শেষে একজন শিক্ষার্থী যে মূল্যায়নপত্র হাতে পাবে, সেখানে কোনো মান বা ধাপ লেখা থাকবে না। থাকবে বিভিন্ন বিষয়ে তার সামগ্রিক অবস্থার সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

সার্বিক মূল্যায়নে আর যা থাকছে
নতুন শিক্ষাক্রমে যে শুধু শিক্ষকই শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন করবেন, তা নয়। নির্দিষ্ট প্যারামিটারে একজন শিক্ষার্থীকে স্ব-মূল্যায়ন এবং সহপাঠী বা দল এবং অভিভাবকের মূল্যায়নের মধ্য দিয়েও যেতে হবে। এর মাধ্যমে প্রতিটি বিষয়ের কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীর আচরণভিত্তিক মূল্যায়নও করা হবে। এই মূল্যায়নের জন্যও থাকবে নির্দিষ্ট পারদর্শিতার সূচক।

নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়ার ওপর নির্ভর করবে না; বরং সারা বছর বিভিন্ন কাজে শিক্ষার্থীর যোগ্যতার ওপর মূল্যায়ন করা হবে। তাই আশা করা যায়, প্রতিটি শিশু তার সত্যিকারের যোগ্যতার ভিত্তিতে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি