
সিনিয়র শিক্ষক

০৮ জুন, ২০২৫ ০৮:৫৭ অপরাহ্ণ
সিনিয়র শিক্ষক
ধরনঃ সাধারণ শিক্ষা
শ্রেণিঃ নবম
বিষয়ঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
অধ্যায়ঃ অধ্যায় ২
সাইবারঝুঁকি ও তথ্যেরনিরাপত্তা
সাইবার ঝুঁকি ও তথ্যের নিরাপত্তা
বর্তমান ডিজিটাল যুগে তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পর্যন্ত তথ্য প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে বহুগুণে। কিন্তু প্রযুক্তির এই আশীর্বাদ যেমন সুবিধা এনেছে, তেমনি তৈরি করেছে নতুন এক বিপদের ক্ষেত্র—সেটি হলো সাইবার ঝুঁকি। এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সাইবার ঝুঁকি বলতে বোঝায় এমন সকল হুমকি বা আক্রমণ, যা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, সফটওয়্যার, বা তথ্যভাণ্ডারে ক্ষতি বা অনধিকার প্রবেশ ঘটাতে পারে। এটি হতে পারে হ্যাকারদের আক্রমণ, ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে দেওয়া, অথবা পরিচয় চুরি (Identity Theft) করার মতো ঘটনা। ব্যাংকিং, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, এমনকি সামরিক খাতেও এই ঝুঁকির প্রভাব পড়তে পারে।
তথ্যের নিরাপত্তা হল এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে ডিজিটাল বা শারীরিকভাবে সংরক্ষিত তথ্য অননুমোদিত প্রবেশ, পরিবর্তন, কিংবা ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা হয়। এটি তথ্যের গোপনীয়তা (Confidentiality), অখণ্ডতা (Integrity), এবং প্রাপ্যতা (Availability)—এই তিনটি নীতির ওপর ভিত্তি করে গঠিত।
ফিশিং (Phishing): ভুয়া ইমেইল বা মেসেজ পাঠিয়ে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা।
র্যানসমওয়্যার (Ransomware): তথ্য লক করে মুক্তিপণ দাবি করা।
ডেটা ব্রিচ: বড় কোনো প্রতিষ্ঠানের তথ্যভাণ্ডারে অনধিকার প্রবেশ করে গোপন তথ্য ফাঁস করা।
ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অব সার্ভিস (DDoS): একটি সার্ভারকে অতিরিক্ত অনুরোধ পাঠিয়ে অকার্যকর করে দেওয়া।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার ও নিয়মিত পরিবর্তন করা।
অ্যান্টিভাইরাস এবং ফায়ারওয়াল ব্যবহার করা।
সন্দেহজনক লিংক বা ইমেইল এড়িয়ে চলা।
নিয়মিত ডেটা ব্যাকআপ রাখা।
সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাইবার সিকিউরিটি প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা।
সাইবার ঝুঁকি ও তথ্যের নিরাপত্তা এখন শুধু প্রযুক্তির বিষয় নয়, এটি ব্যক্তি, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সাথে গভীরভাবে জড়িত। তাই প্রত্যেক ব্যবহারকারীর উচিত সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং নিরাপদ ডিজিটাল আচরণ চর্চা করা। উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে তথ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রেও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, যাতে ভবিষ্যতের সমাজ হয় আরও নিরাপদ ও সুরক্ষিত।