Loading..

নেতৃত্বের গল্প

২৪ মার্চ, ২০২০ ০৩:৪৮ অপরাহ্ণ

আমার অনেক দিনের স্বপ্ন

আমার অনেক দিনের স্বপ্ন যে -বড় স্কুলে নয় ছোট স্কুলে চাকুরী নিয়ে কীভাবে ওই স্কুলটাকে বড় ও নামী করা যায়---


এই লক্ষ্যে সরকারি চাকুরী ছেড়ে বেসরকারি স্কুলে ২০০০ সালে যোগদান করি । এই স্কুল নিয়ে আমার তিনটি স্কুল ও একটি মাদ্রাসায় সেবা দেওয়ার সুযোগ হয়েছে।

এই ঝাটিবুনিয়া জে আর বালিকা বিদ্যালয়-এ ২০১৬ সালের ২ জুলাই যোগদান করি। স্কুলটি ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এর আগে এটিতে তেমন উন্নয়ন হয়নি । আমার যোগদানের সময়ও মাঠে দুই হাত পানি ও কচুরিপানা ছিলো। বিদ্যুৎ বিহিন স্কুলটিতে শৌচাগার, নলকুপ, শ্রেনিকক্ষ সহ নানান মৌলিক উপকরনের অভাবের সাথে শিক্ষার্থী ছিলো হাতে গোনা একক অংকে। এরপর শুরু করি যুদ্ধ। বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের নজর কাড়ার চেষ্টা করি । এক সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ আনি, এক বছরের মধ্যে মেঝে পাকা ও ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন করি যেখানে আমার ব্যাক্তিগত ৩৭৫০০০ টাকা ব্যয় করি কিন্তু ভবন আর তুলতে পারিনা। নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হওয়ায় বিধিগত ভাবে নাকি ভবন পাবোনা এজন্য চিন্তায় পরে যাই। এছাড়া স্থানীয় কোন্দলের কারণে এম পি মহোদয় এর ডিও লেটার যোগার করতেও পারিনা তাই এটুআই এর সাথে নিজের পকেটের টাকা ব্যয় করে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিভিন্ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করি যার অংশ হিসাবে চট্টগ্রাম, কক্স বাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি সহ বাংলাদেশের ৪৩ টি জেলায় মুক্তপাঠের কাজ গুলো "মুক্তালোয় নিজকে গড়ি" নামে বাস্তবায়নের ও “মুক্তপাঠকে” ওয়েসিস যেতানোর জন্য ভোট সংগ্রহের কাজে ছুটে বেড়াই। এরপর এটুআই এর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসে কবির বিন আনোয়ার ( পরিচালক, প্রশাসন ) স্যারের পরামর্শে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে ভবনের জন্য আবেদন করি। স্যার ( পরিচালক) অন্য দপ্তরে বদলী হওয়ায় আমার আবেদন সূর্য্যের মুখ দেখেনি। তাও হতাশ হইনি । অবশেষে চিন্তা করি আমার বিদেশ যাওয়া সুযোগের দরকার নাই। কবির স্যারের কাছে অনুরোধ করি আমাকে যেন ২০১৯ এর শিক্ষক সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এর পূর্বে জেলার শিক্ষা প্রকৌশল অফিসের সহকারী প্রকৌশলী জনাব লুতফর ভাইয়ের পরামর্শে একটি আবেদন পত্রে জেলা শিক্ষা প্রকৌশলীর মাধ্যমে একটি অগ্রায়ন পত্র সংগ্রহ করি। এবার তিনি (লুতফর ভাই) বলেন কোনো মন্ত্রী/সচিবের সুপারিশ সহ এলজিইডি তে জমা দিয়ে দেখতে পারেন। যেই পরামর্শ সেই কাজ -- অগ্রায়ন পত্র নিয়ে ছুটে যাই ঢাকায় ( শিক্ষক সম্মেলন-২০১৯ এ)। সেখানে শিক্ষা মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে অনেকে আমাকে এটা করতে নিষেধ করেন কিন্তু আমার শ্রদ্ধেয় কবির স্যার (সহযোগী অধ্যাপক, টিটি কলেজ, ঢাকা) বলেন- কোনো কথা নাই সোজা মন্ত্রীর কাছে যাও, আবেদন দেখাও ---- ব্যাস। অনেক চেষ্টার পর উপমন্ত্রি মহদোয় যখন গাড়িতে উঠতে যাচ্ছেন তখন তাঁর সামনে আবেদন নিয়ে ৩০ সেকেন্ডের মত সময় পেলাম। তখন স্যারকে স্কুলের বিভিন্ন ছবি দেখালাম । স্যার সব দেখে আমার আবেদনটি নিয়ে বাংলা একাডিমীর পিলারের সাথে ঠেকিয়ে প্রধান প্রকৌশুলীকে লিখলেন "সমস্যাটির সমাধান করুন"। এটা লিখেও তিনি ক্ষান্ত হননি ---প্রধান প্রকৌশুলীকে মুঠোফোনে যা বলার বলে দিলেন এবং আমাকে তখনই সেখানে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। আমি তাঁর কথা মত আবেদনটি নিয়ে সেখানে গেলাম -- সেখানেও প্রটোকল পেতে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ভিতরে ঢুকে জমা দিলাম। আসার সময় চিফ ইঞ্জিনিয়ার বললেন -- আপনার ভবন পাশ, আপনি এখন দিন গুনতে থাকেন। সর্বোচ্চ তিন মাস --।

যেই কথা সেই কাজ। ডিসেম্বরে তালিকা জেলায় আসে । জানুয়ারিতে টেন্ডার ,মার্চে কাজ শুরু হলো। বাকি আল্লাহর ইচ্ছা।