Loading..

উদ্ভাবনের গল্প

৩০ জুলাই, ২০২০ ০৩:৩১ অপরাহ্ণ

ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের নিয়ে স্বপ্নযাত্রা

হবিগঞ্জের জেলার বাহুবল উপজেলায় অবস্থিত ফয়জাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়।এই স্কুলটির অবস্থান পাহাড়ি এলাকায়। পাহাড়ি সৌন্দর্যেে পরিবেষ্টিত এই বিদ্যালয়ে রয়েছে মাত্র একটি কম্পিউটার৷ তাতে কোনো ইন্টারনেট সংযোগ নেই বললেই চলে৷আমি ২০১৯ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারিতে উক্ত স্কুলে সহকারী শিক্ষক(ভৌত বিজ্ঞান) হিসেবে জয়েন করি।স্কুলটি আমার বাড়ি থেকে প্রায় ৫ কি.মি দূরে অবস্থিত।


আমি জয়েন করার পূর্বে স্কুলটি কখনই জাতীয় বিজ্ঞান মেলা ও প্রযুক্তি সপ্তাহের উপজেলা পর্যায়ের কোন কিছুতে অংশগ্রহণ করে নি।আমি জয়েন করার পর সবসময় শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ আনার চেষ্টা করি।তাদের মাল্টিমিডিয়া ক্লাস প্রদশর্নের সময় আমি তাদের বিজ্ঞানের অনেক কিছু দেখানোর চেষ্টা করি এবং বিজ্ঞানের ক্লাসগুলো প্র্যাকটিক্যালি দেখানোর চেষ্টা করি।পরিবর্তিতে ২০১৯ সালেই আমাদের ফয়জাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করি।বিজ্ঞান মেলার জন্য বিজ্ঞান প্রজেক্টের উপকরণের চরম প্রতিকূলতা সত্বেও আমার স্কুলের শিক্ষার্থীরা দমে যায়নি। উক্ত বিজ্ঞান মেলায় তাদের উপস্থাপনা ও প্রেজেক্ট দেখে সবাই মুগ্ধ হয়।যদিও উপজেলার প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতি বছর উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় বিজ্ঞান মেলা ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদযাপিত হয় কিন্তু আমাদের স্কুলের ঔ বিজ্ঞান মেলাটি ছিল বাহুবল উপজেলার কোনো স্কুলের উদ্যোগে প্রথমবারের মত আয়োজিত কোন বিজ্ঞান মেলা।


আমার শিক্ষার্থীদের পারফরমেন্স দেখে আমার কনফিডেন্স লেভেল আরও অনেক বেড়ে যায়।এবং সিদ্ধান্ত নেই যেভাবেই হোক আসন্ন উপজেলা পর্যায়ের বিজ্ঞান মেলায় প্রথম হতে হবে।জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই শুরু করি দেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রজেক্ট বানানোর কাজ।শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান মেলা ও বিজ্ঞান কুইজের জন্য প্রতি বৃহস্পতিবারে আলাদা করে সময় দিতাম যার ফলশ্রুতিতে ২০১৯ সালের ৪১তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের জন্য অনেক ভালো একটা প্রিপারেশন হয়ে যায়৷ গত বছর ২০১৯ সালের ৪১তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহে উপজেলা পর্যায়ে প্রথমবারের মত আমার স্কুল জয়েন করে।                                                             

উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় উপজেলার বাঘা বাঘা স্কুলকে পেছনে ফেলে ফয়জাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় বিজ্ঞান মেলায় প্রজেক্ট উপস্থাপনে প্রথম স্থান অর্জন করে জেলা পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে। এমন একটি যন্ত্র তারা উদ্ভাবন করেছে যা পদার্থের বলবৃদ্ধিকরন নীতির উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছে যা অত্যন্ত পরিবেশ বান্ধব ৷

শুধু তাই নয়,উক্ত ৪১তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের কুইজ প্রতিযোগিতায় আমার স্কুল ৩য় স্থান অর্জন করে এবং বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতায় ৪র্থ স্থান অর্জন করে।উপজেলা প্রশাসনের অনুরোধে আমি উক্ত বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে রসায়নের উপর একটি প্রেক্টিক্যাল ক্লাস নেই।২০১৯ সালের জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের উপজেলা পর্যায়ের বিজ্ঞান প্রজেক্ট উপস্থাপনে আমার স্কুলের প্রথম হওয়া ছিল আমার শিক্ষক হিসেবে প্রথম কোন অর্জন। এখন সবসময় স্বপ্ন দেখি,পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত আমার স্কুলটি একদিন জাতীয় পর্যায়েও বিজয় ছিনিয়ে আনবে।