Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ণ

গাঁজা আসলে মন ও মস্তিষ্কে কি ঘটায়?

তবে আরো বেশ কিছু গবেষণায় বলা হয়, গাঁজা এতে কাজ করে না। ২০১৪ সালের এক গবেষণায় ক্রনিক ক্রোনের ক্ষেত্রে এক দল রোগীকে গাঁজা ও অন্য একটি দলকে প্লেসবো দেওয়া হয়। প্রথম দলটি দারুণ উপকৃত হয়।

গাঁজা দেহের রক্তনালীকে প্রসারিত করে। এর লক্ষণ প্রকাশ পায় চোখে। এ সময় চোখ দুটো লাল হয়ে যায়। সেরেবেলাম এবং বাসাল গ্যাংলিয়া মস্তিষ্কের দুটি অংশ যা দেহের ভারসাম্য রক্ষা, সমন্বয় সাধন, প্রতিক্রিয়া এবং অঙ্গবিন্যাসের ক্ষেত্রে কাজ করে।

গাঁজার একটি বিশেষ প্রভাব হলো, সময় খুব দ্রুত বয়ে যায় বা সময় কাটতেই চায় না এমন অনুভূতি হওয়া। ২০১২ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, গাঁজা সেবনকারীরা ৭০ শতাংশ সময় সঠিকভাবে বুঝতে পারেন না।

১৯৯৮ সালের আরেকটি গবেষণায় বলা হয়, গাঁজা মস্তিষ্কের সেরেবেলাম অংশে রক্ত চলাচলে প্রভাববিস্তার করে। এমআরআই পরীক্ষায় দেখা গেছে, এতে সময়জ্ঞান কাজ করে না।

মস্তিষ্কে যে প্রক্রিয়ায় স্মৃতিশক্তি সঞ্চয় করে, তাতে বাধা দেয় গাঁজা। বেশ কিছু গবেষণায় বলা হয়, স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয় গাঁজা। তবে অনেকের মতে, এর সঙ্গে গাঁজার কোনো সম্পর্ক নেই। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বলা হয়নি যে, গাঁজা বিষণ্নতা আনে বা বিষণ্ন মানুষ গাঁজায় আসক্ত হয়। তবে নেদারল্যান্ডসের এক গবেষণায় বলা হয়, যারা বিষণ্নতায় ভোগেন, গাঁজা তাদের এ সমস্যা আরো বৃদ্ধি করতে পারে।

যারা মাঝে মাঝে বা সব সময় গাঁজা খেয়ে থাকেন, তাদের ক্ষুধা বেড়ে যায়। গাঁজা মস্তিষ্কের এমন একটি অংশকে প্রভাবিত করে যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। সম্প্রতি ইঁদুরের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য দেওয়া হয়।

গাঁজার অপকারিতা:

গাঁজার ধোঁয়ায় কতখানি ক্ষতি হয় এ নিয়ে আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন জানিয়েছে যে, তারা ইঁদুরের ক্যানাবিসের প্রভাব পরীক্ষা করে দেখেছে যে এটি রক্ত ​​সঞ্চালনের জন্য একটি গুরুতর ক্ষতি। গবেষকরা বলছেন, এটি রক্ত ​​সঞ্চালনের উপর খুব ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। কানুলা ধোঁয়া মাত্র এক মিনিট থাকলে, এটি অন্তত ৯০ মিনিটের রক্ত ​​সঞ্চালনকে প্রভাবিত করতে পারে। রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়। সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ক্যান্সারের চিকিৎসায় মারিজুয়ানার ব্যবহারে ক্যান্সার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

গাঁজা স্মৃতিশক্তি হ্রাস করে:

গাঁজা বা মারিজুয়ানা স্মৃতিশক্তি হ্রাস করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর পশ্চিম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলেছেন, মারিজুয়ানা ব্যবহারকারীদের মস্তিষ্কের কিছু অস্বাভাবিকতা রয়েছে। এই কারণে, তাদের স্মৃতি কিছু স্বল্পকালীন। মস্তিষ্কের এই ক্ষতি ক্যান্সারের উচ্চ স্তরের কারণে নিচে থাকে, যা আর ভাল হয় না। অনেক মানুষের ধারণা মারিজুয়ানায় সৃজনশীলতা বাড়ে। ধারণাটি ভুল, নেদারল্যান্ড গবেষকরা বলেছেন, এটি তাদের সৃজনশীলতা বাড়ায় না বরং তাদের হ্রাস করে।

মারিজুয়ানা মস্তিষ্কের স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করে মস্তিষ্কের কোষগুলিকে ধ্বংস করে। এই কারণে তা মানুষকে অস্বাভাবিক করে তোলে। গবেষকরা দীর্ঘ ২০ বছরের গবেষণায় এটি নিশ্চিত করেছেন। মারিজুয়ানা শরীরকে শুধু প্রভাবিত করে না, এটি মানুষের আচরণকেও প্রভাবিত করে।

সূত্র : এমএসএন ও বিবিসি 


আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি