Loading..

উদ্ভাবনের গল্প

২৫ নভেম্বর, ২০২০ ১০:৫৮ অপরাহ্ণ

লিটল টিচার অফ দ্যা ক্লাস

১। উদ্ভাবনী ধারণার শিরোনামঃ        লিটল টিচার অফ দ্যা ক্লাস

২। প্রস্তাবিত আইডিয়াটি:

অধিক শিক্ষার্থীর ক্লাসে পাঠদান কার্যক্রম সম্পন্ন করতে অনেক সময়ই শ্রেণি শিক্ষককে হিমশিম খেতে হয়। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে শ্রেণি শৃংখলা বজায় রাখতে হয়। তাছাড়া শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখতে শিক্ষককে সময়োপযোগি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে শিক্ষার্থীর শিখনফল অর্জনে ভূমিকা রাখতে হয়। শিক্ষকের যাবতীয় কার্যাবলী নির্ভর করে শিক্ষার্থীর পারগতা দক্ষতার উপর। যদি না শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের পাঠদান গ্রহণ করতে না  পারেন তবে তার যাবতীয় কার্যাবলী ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এক্ষেত্রে শ্রেণির পারগ বা সবল শিক্ষার্থীর সহায়তায় দুর্বল শিক্ষার্থীদের পড়া ও লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। তাই শ্রেণিতে দক্ষতার ভিত্তিতে  যেমন –দ্রুত পড়া মুখস্ত হওয়া, সুন্দর হাতের লেখা, স্বাস্থ্য সচেতন ও পরিচ্ছন্ন শিক্ষার্থীদের বেছে নিয়ে লিটল টিচার অফ দ্যা ক্লাস ( ক্ষুদে শিক্ষক ) দল গঠন করা যেতে পারে।

৩। প্রত্যাশিত ফলাফল :

শিক্ষার্থীর মধ্যে নেতৃত্ত্ববোধ প্রবলভাবে বিদ্যমান থাকে । অধিকাংশ শিশু চায় অন্যেরা তাদের কথা মেনে চলুক। এই কতৃত্ত্ব যেমন সে পরিবারে খাটাতে চায় তেমনি বিদ্যালয় থেকে শুরু করে তার চলার সকল ক্ষেত্রেই খাটাতে চায়। এজন্য ক্লাসের শিক্ষার্থী অনুপাতে সকল শিক্ষার্থী থেকে যদি মেধাবী ও অধিকতর ভালোদের বেছে নিয়ে দুর্বলদের পড়াতে ও লেখাতে সাহায্য করা যেতে পারে। বেশির ভাগ সময় লক্ষ্য করা যায় ক্লাসের ৩০% শিক্ষার্থী পড়া আগে দেয়ার জন্য ব্যস্ত থাকে, ৪০% শিক্ষার্থী পড়া দেয়ার প্রয়োজন অনুভব করে বা জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করে । বাকী ৩০% শিক্ষার্থী অনাগ্রহ প্রকাশ করে বা তাদের কাছে পড়া জিজ্ঞেস না করলে তারা স্বস্তি অনুভব করে। অধিকাংশ সময় তারা শ্রেণিতে পিছনের সারিতে বসে। এক্ষেত্রে শ্রেণির ভালো বা পারগ শিশুদের লিটল টিচার বা ক্ষুদে শিক্ষক হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে।

৪। বাস্তবায়ন পদ্ধতি :

৩য় থেকে ৫ম শ্রেণির মোট শিক্ষার্থী থেকে ২০% অর্থাৎ ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকলে ১০ (১-১০) জন শিক্ষার্থীকে লিটল টিচার হিসেবে বেছে নিতে হবে । তাদের ১০টি দলে ভাগ করতে হবে। প্রত্যেক দলে একজন লিটল টিচার নেতৃত্ব দিবে। ক্লাসে প্রত্যেক লিটল টিচার তার দলের ৪জন সহপাঠীকে পাঠ্য বই পড়া ও লেখার বিষয়ে পরামর্শসহ সহযোগিতা করবে । শিক্ষকরা সকল লিটল টিচার নিয়ে সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ১ ঘণ্টা মোটিভেশনাল ক্লাস নিবেন। যাতে থাকবে পাঠ্য বই দেখে পড়ার বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল । লেখার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সুন্দর ও দ্রুত লিখতে পারার বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল । এছাড়া স্বাস্থ্য-পুষ্টি, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, নেতৃত্ব-শৃংখলা, গণতান্ত্রিক মনোভাব, সহমর্মিতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ ইত্যাদি। পাঠ্য বইয়ের বাইরে বিভিন্ন বই পড়া, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা বা ম্যাগাগিনে লেখায় অংশগ্রহণ,  সাধারণ জ্ঞান, আইসিটি তথা বিজ্ঞানের নতুন নতুন ধারণা। শিক্ষকরা যার যার বিষয়ের দায়িত্ব নিবেন এবং যথাযথ মনিটরিং করবেন। লিটল টিচারদের চক বোর্ডের ব্যবহার বাড়ির কাজ দেখার দায়িত্ব দিবেন। কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে যাচাই করবেন।

৫।  যে সমস্যাটি সমাধান করতে চান তার বিবরণ :



বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়া ও লেখার দক্ষতা  বৃদ্ধি।  পাঠ্য বই দেখে পড়তে পারা , বর্ণের সঠিক আকৃতি, পরিচ্ছন্ন ও  নির্ভুলভাবে লিখতে পারা। শ্রেণি পাঠের বাইরে বিভিন্ন বই পড়া, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা বা ম্যাগাগিনে লেখা দেয়া, সাধারণ জ্ঞান, আইসিটি তথা বিজ্ঞানের নতুন নতুন ধারণা নেয়া। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বৃদ্ধি করে ঝড়ে পড়া রোধ। শিক্ষার্থীর নৈতিক, সামাজিক, মানবিক, আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি ও দেশাত্মবোধ চেতনা বৃদ্ধি করা। সৃজনশীল মেধা বিকাশে সহায়তা করা। সর্বাপরি একজন দেশপ্রেমিক, নীতিবান, ও মেধাবী নাগরিক গড়ে তোলা।



৬। যে কারণে আইডিয়াটি উদ্ভাবন বলে ধরা হবেঃ



এর ফলে শিক্ষকরা সহজে শ্রেণি শৃংঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে। শিক্ষার্থীরা শ্রেণি পাঠে প্রাণবন্ত থাকবে। বড় বড় শ্রেণিকক্ষ যেখানে শিক্ষক স্বল্পতা রয়েছে সে সকল স্কুল ও শ্রেণিকক্ষে পাঠদান সহজ হবে। কারণ  যেখানে ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ৪০:১ সেখানে শিক্ষক ৪০ জন শিক্ষার্থী থেকে ৮ জন লিটল টিচারকে তার পাশে সহায়ক হিসেবে পাচ্ছেন। আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ তাদের জীবনের লক্ষ্যকে স্থির করতে তারা বিভিন্ন পেশা জীবির কথা বলে বা হতে চায়। সেক্ষেত্রে শিক্ষক অন্যান্য পেশা থেকে আলাদা এবং একজন শিক্ষকের কী কী দায়িত্ব থাকে তা সে তার শিক্ষা জীবনে উপলদ্ধি করতে পারে এবং যদি সে নিজে শিক্ষক হতে চায় তবে  নিজকে সেভাবে তৈরি করে নিতে পারে। এবং এই লিটল টিচাররা নিজে নতুন কিছু উদ্ভাবনের জন্য নিজকে নিয়োজিত করবে। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য তারা সহায়ক হবে বলে আমার ধারণা ।