Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

৩১ মার্চ, ২০২১ ০১:০৪ পূর্বাহ্ণ

মুদ্রার পরিমাণ তত্ত্ব, ফিশারের বিনিময় সমীকরণ, ফিশারের অর্থের পরিমাণ তত্ত্ব।

এই পাঠ থেকে শিক্ষার্থীরা ফিশারের বিনিময় সমীকরণের সাহায্যে দাসস্তর নির্ণয় করতে পারবে। 


এই পাঠ থেকে  শিক্ষার্থীরা অর্থের যোগানের সাথে দামস্তর ও অর্থমূল্যের কীরূপ সম্পর্ক তা রেখা চিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা করতে পারবে। 


 


ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আরভিং ফিশার একটা বিনিময় সমীকরণের সাহায্যে অর্থের পরিমাণ তত্ত্বটি ব্যাখ্যা করেন। ফিশার মনে করেন, অন্যান্য দ্রব্য সামগ্রীর মতো অর্থের মূল্য এর চাহিদা ও যোগানের দ্বারা নির্ধারিত হয়। 


ফিশারের বিনিময় সমীকরণ টি হলোঃ 


              MV=PT

             

            P=MV/ T


এখানে, 

         M = বিহিত অর্থের পরিমাণ

         V = বিহিত অর্থের প্রচলন গতি

         P = মূল্যস্তর  

         T = লেনদেনকৃত মোট দ্রব্যসামগ্রীর পরিমাণ 


ফিশারের বিনিময় সমীকরণের প্রসারনঃ 


আধুনিক অর্থনীতিতে অর্থের যোগান বলতে শুধুমাত্র কাগজি ও ধাতব মুদ্রার পরিমাণকে বোঝায় না। ব্যাংক থেকে 


চলতি ও সৃষ্ট  আমানত, ঋণ ইত্যাদি অর্থের যোগানের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এর ফলে আরভিং ফিশার তাঁর বিনিময় 


সমীকরণটি সংশোধন করে নিন্মের সমীকরণটি প্রকাশ করেন-


    PT = MV+ Mˊ Vˊ 

বা,   P = MV+ Mˊ Vˊ/ T


     Mˊ = ব্যাংক অর্থের (ঋণপত্র)  পরিমাণ  

     Vˊ = ব্যাংক অর্থের (ঋণপত্র) প্রচলন গতি 


একটি উদাহরণের সাহায্যে গাণিতিক ভাবে ফিশারের সমীকরণটি ব্যবহার করে দামস্তর নির্ণয় করা হলঃ 

 

মনেকরি একটি দেশের অর্থবাজার সম্পর্কিত তথ্যসমূহ নিম্মরূপ- 


মোট বিহিত অর্থের পরিমাণ = ১০০

অর্থের প্রচলন গতি = ৪ 

ব্যাংক অর্থের পরিমাণ  = ৫০

ব্যাংক অর্থের প্রচলন গতি  = ২

লেনদেনের পরিমাণ = ১০০


আমরা জানি, ফিশারের সপ্রসারিত বিনিময় সমীকরণটি হল নিন্মরুপঃ 


                    MV+ Mˊ Vˊ = PT


                           MV+ Mˊ Vˊ

                P =   ------------------- 

                                   T


অর্থবাজারের প্রদত্ত তথ্যানুসারে মান বসিয়ে পাই- 


                   (১০০ × ৪) + (৫০ × ২)

         P =  ------------------------------- 

                              ১০০


                     ৪০০ + ১০০

         P =  --------------------

                        ১০০


                        ৫০০

         P =  -------------------- 

                        ১০০

    .

  .   .    P = ৫  


আবার, 

 আমরা জানি, অর্থের মূল্য  

         

                        ১

         Vm = -------         

                       P           


 যেখানে,  Vm = অর্থের মূল্য,  P  = ৫            

 


                       ১

        Vm = ------- 

                       ৫ 

    .

  .   .  Vm = ০.২   

                                             

সুতরাং অর্থের মূল্য  = Vm = ০.২

                             


যদি  M ও Mˊ এর মান দ্বিগুণ করা হয় তাহলে ফিশারের বিনিময় সমীকরণের সাহায্যে অর্থের মূল্য হবে নিন্মরূপ- 


 M ও Mˊ এর মান দ্বিগুণ করলে হবে- 

  

           M  = ১০০ × ২ = ২০০


           Mˊ = ৫০ × ২  =  ১০০ 


প্রদত্ত তথ্যানুসারে মান বসিয়ে-


         

                  (২০০ × ৪) + (১০০ × ২)

        P =  ------------------------------- 

                             ১০০


                     ৮০০ + ২০০

         P =  --------------------

                        ১০০

                    

                       ১০০০

         P =  ---------------

                       ১০০


    .

  .   .    P = ১০  

  

আবার, 

 আমরা জানি, অর্থের মূল্য  

         

                        ১

         Vm = -------         

                       P              

 যেখানে,  Vm = অর্থের মূল্য,  P = ১০          

 


                        ১

         Vm = ------- 

                       ১০ 

         

    .

  .   .  Vm = ০.১  

                                             

সুতরাং অর্থের মূল্য  = Vm = ০.১


এক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষ্য করা যায়, 


M ও Mˊ এর মান দ্বিগুণ করলে হলে দামস্তর P = ৫  থেকে বেড়ে P = ১০ হয় কিন্তু অর্থের মূল্য Vm = ০.২ থেকে কমে Vm = ০.১ হয়। 


ফিশারের বিনিময় সমীকরণটি রেখা চিত্রের মাধ্যমে প্রকাশঃ 


Fisher's Equation of Exchange Curve: 



ফিশারের বিনিময় সমীকরণটি রেখা চিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ,Fisher's Equation of Exchange


প্রদত্ত A ও B উভয় চিত্রেই ভূমি অক্ষে অর্থের যোগান (M), A চিত্রে লম্ব অক্ষে দামস্তর (P) এবং B চিত্রে লম্ব 


অক্ষে মুদ্রার মূল্য (Vm) পরিমাপ করা হয়েছে। A চিত্রে P = f ( M) রেখা  45 ͦ হওয়ায় তা অর্থের যোগান ও 


 


দামস্তরের মধ্যে সামনুপাতিক সম্পর্ক দেখায়। B চিত্রে অর্থের মূল্য ও অর্থের যোগানের মধ্যে বিপরীত সম্পর্ক দেখা 


যায়। A চিত্রে অর্থের যোগান 0Mo থেকে বেড়ে 0M1 হলে দামস্তরও সামনুপাতিকভাবে বেড়ে 0Po থেকে 


0P1 হয় তখন B চিত্রে মুদ্রার মূল্য 0Vmo থেকে  কমে 0Vm1 হয়। আবার  A চিত্রে যখন অর্থের যোগান   


0Mo থেকে কমে  0M2 হয় তখন দামস্তরও কমে 0Po থেকে 0P2 হয় তখন B চিত্রে মুদ্রার মূল্য 0Vmo 


থেকে বেড়ে 0Vm2 হয়। 


সতরাং ফিশারের বিনিময় সমীকরণটির রেখা চিত্রের মাধ্যমে বুঝা যায়, অর্থের যোগান বাড়লে দামস্তর বৃদ্ধি পায় 


কিন্তু অর্থের মূল্য হ্রাস পায়। আবার অর্থের যোগান হ্রাস পেলে দামস্তর হ্রাস পায় কিন্তু অর্থের মূল্য বৃদ্ধি পায়। অতএব, 


অর্থের যোগানের সাথে দামস্তরের সম্পর্ক ধনাত্মক কিন্তু অর্থমূল্যের সম্পর্ক বিপরীত।

আরো দেখুন