Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

০৯ এপ্রিল, ২০২১ ০৪:২১ অপরাহ্ণ

আলিম : অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র, চতুর্থ অধ্যায়

আলিম : অর্থনীতি দ্বিতীয় পত্র, চতুর্থ অধ্যায়

মো.মহসিন স্যার, প্রভাষক, অর্থনীতি। 

চট্টগ্রাম নেছারিয়া কামিল (এম.এ) মাদরাসা



ক) মানবসম্পদ উন্নয়ন বলতে কী বোঝায়?

খ) কিভাবে স্থূল জন্মহার পরিমাপ করবে?

গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত চিত্রটি জনসংখ্যার কোন তত্ত্বের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।

ঘ) উক্ত তত্ত্বের আলোকে বাংলাদেশের জনসংখ্যা অতিরিক্ত কি না যাচাই করো।

 

উত্তর :

ক) কর্মক্ষম জনশক্তি বা শ্রমশক্তিকে উপযুক্ত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ করার প্রক্রিয়াকে মানবসম্পদ উন্নয়ন বলে।


খ) কোনো একটি নির্দিষ্ট বছরে একটি দেশের জনসংখ্যার প্রতি ১.০০০ জনে যতজন জীবন্ত শিশু জন্মগ্রহণ করে তা-ই হলো ওই সময়ে ওই দেশের স্থূল জন্মহার। জনসংখ্যা গঠনের পার্থক্য, লিঙ্গ, কিংবা বয়স ইত্যাদি বিষয়াবলি এ জন্মহার নির্ধারণে বিবেচনায় আনা হয় না।


গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত চিত্রটি জনসংখ্যার কাম্য তত্ত্বের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। কাম্য জনসংখ্যা তত্ত্বানুযায়ী দেশের প্রাপ্ত সম্পদের পূর্ণ ব্যবহারের জন্য যে জনসংখ্যার প্রয়োজন তাকে কাম্য জনসংখ্যা বলে। চিত্রে OX অক্ষে জনসংখ্যা এবং OY অক্ষে মাথাপিছু প্রকৃত আয় নির্দেশ করা হয়েছে। QPR হলো মাথাপিছু প্রকৃত আয়রেখা। চিত্র থেকে বোঝা যায়, জনসংখ্যার আয়তন শূন্য (0) থেকে বেড়ে OM স্তরে পৌঁছা পর্যন্ত মাথাপিছু প্রকৃত আয় ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। OM স্তরে জনসংখ্যার প্রকৃত মাথাপিছু আয় সর্বাধিক হয়ে MP-তে পৌঁছায়। সুতরাং OM জনসংখ্যাই হলো কাম্য জনসংখ্যা। OM-এর পরে জনসংখ্যা আরো বাড়লে মাথাপিছু আয় কমে যায়। জনসংখ্যার আয়তন OM-এর চেয়ে কম হলে নিম্ন জনসংখ্যা এবং বেশি হলে অধিক জনসংখ্যা বোঝায়। কাম্য জনসংখ্যার নির্ণয়ের সূত্রটি হলো : M=। এখানে, M = কাম্য জনসংখ্যা থেকে বিচ্যুতির মাত্রা, O = কাম্য জনসংখ্যা, A = প্রকৃত জনসংখ্যা। M ধনাত্মক হলে অধিক জনসংখ্যা, ঋণাত্মক হলে নিম্ন জনসংখ্যা এবং শূন্য (o) হলে কাম্য জনসংখ্যা নির্দেশ করে। তাই M-এর মান দ্বারা কাম্য জনসংখ্যা থেকে কতখানি বিচ্যুতি ঘটেছে তা পরিমাপ করা যায়।


ঘ) কাম্য জনসংখ্যা তত্ত্বের আলোকে বলা যায় বাংলাদেশ অতিরিক্ত জনসংখ্যার দেশ। প্রকৃত জনসংখ্যা কাম্য জনসংখ্যা অপেক্ষা বেশি হলে মাথাপিছু উৎপাদন ও আয় কমে যায় এবং দেশের জনসংখ্যা অতিরিক্ত হিসেবে গণ্য হয়। কাম্য জনসংখ্যা তত্ত্ব অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা দ্রুত বাড়লেও এখনো জনাধিক্যের সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। সাম্প্রতিককালে খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ফলে অতিরিক্ত জনসংখ্যাজনিত প্রভাব তথা খাদ্যাভাব দেখা দেয়নি। ধীরে হলেও মাথাপিছু আয় এবং জীবনযাত্রার মান ক্রমেই বাড়ছে। এ দেশে যা কিছু প্রাকৃতিক সম্পদ আছে তার সবটা এখনো ব্যবহৃত হয়নি। অনাবিষ্কৃত ও আবিষ্কৃত প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার সম্ভব হলে এ দেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ও জীবনযাত্রার মান আরো বাড়বে।


কাম্য জনসংখ্যা তত্ত্বের আলোকে বাংলাদেশের জনসংখ্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রদত্ত উপরিউক্ত যুক্তিগুলো সত্ত্বেও বলা যায়, সীমিত আয়তনের কৃষিপ্রধান এ দেশে যে নিম্নে উৎপাদন ও চরম দারিদ্র্য বর্তমান, সে তুলনায় জনসংখ্যার বর্তমান আয়তন ও বৃদ্ধির হার অনেক বেশি। অতএব, কাম্য জনসংখ্যা তত্ত্বের আলোকে বাংলাদেশের জনসংখ্যা পরিস্থিতি বিচার-বিশ্লেষণ করলে বলা যায়, বাংলাদেশ একটি জনবহুল বা অতিরিক্ত জনসংখ্যার দেশ।

আরো দেখুন