Loading..

সফলতার গল্প

বার বার ব্যর্থ হয়েছি কিন্তু থেমে থাকিনি, বাতায়ন যুগিয়েছে অদম্য সাহস !
article

আমার জন্ম ১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারি, চট্টগ্রাম জেলার  মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব গোবিন্দপুর গ্রামে। এন্ট্রান্স পাশ করা আমার পিতামহ হরি মোহন মজুমদার তৎকালে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে চাকুরী করতেন। অর্থ, বিত্তবৈভবের মধ্যে বেড়ে উঠেন আমার শিক্ষক বাবা সুনীল চন্দ্র মজুমদার। তিনি তৎকালীন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে অধ্যায়ন করেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল শতবর্ষী ও ঐতিহ্যবাহী জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। তিনি সুনামের সাথে শিক্ষকতা করে ২০১৪ সালে অবসরে যান। আমার মমতাময়ী মা গীতা রানী মজুমদার ছিলেন সুশিক্ষিত গৃহিণী। আমার মায়ের কাছে আমরা তিন ভাই ও আমার দুই সন্তান স্পর্শ মজুমদার ও স্পন্দন মজুমদারের শিক্ষার হাতেখড়ি হয়েছিল। 


আমি ইঞ্জিনিয়ার পলাশ কান্তি মজুমদার বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। গ্রামে দূরন্তপনা, গ্রামীণ প্রায় সকল ধরণের খেলাধুলায় ও দুরন্তপনায় বেঁড়ে উঠা। শৈশবে স্বাধীনতার পাশাপাশি ছিল মায়ের কড়া শাসন। সব মিলিয়ে গ্রামীণ পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণ ও শৈশব ছিল খুবই বৈচিত্র্যপূর্ণ। সময়ের পরিক্রমায় এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয় ছেড়ে ৪র্থ শ্রেণিতে জোরারগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে শ্রদ্ধেয় ঊমা ঘোষ ম্যাডামের স্নেহ-মমতায় প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করি (৬ষ্ঠ-এসএসসি) পর্যন্ত। সময়ের পরিক্রমায় পারিবারিক নানা সমস্যার কারণে আর্থিকভাবে ছন্দপতন ঘটেছিল। আমাদের আর্থিক অসচ্ছলতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে আমাকে একটি হাতের কাজ শিখিয়ে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়ার মত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন আমার শিক্ষক পিতা।এসএসসি পরীক্ষার পর কাজ শিখার জন্য আমাকে একটি মোটর ওয়ার্কসপে ভর্তি করিয়ে দেন।


এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়া পর যখন আমার সহপাঠীরা স্বপ্ন দেখছিল কলেজে ভর্তি হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে, অথচ তখন আমি স্বপ্ন দেখছিলাম কিভাবে সংসারের হাল ধরা যায়, উচ্চ শিক্ষা তখন আমার কাছে বিলাসিতা মাত্র। ৩ মাস পর এসএসসি ফল প্রকাশ হয়। আমি ১৯৯৩ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হই এবং প্রতিকূল পরিবেশে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার এক বছর পর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়েছিলাম জোরারগঞ্জ সরকারি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার কলেজে। ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষা বৃত্তি (স্টাইপেন) পেয়েছিলাম, এতে আমার কলেজের খরচ মিটে যেতো কিন্তু পড়াশোনার আনুসাঙ্গিক খরচ এবং ছোট ভাইদেরকে সহযোগিতা করতে গিয়ে ব্যাচের পর ব্যাচ প্রাইভেট পড়িয়েছি। আমার এইচএসসি ফাইনাল পরীক্ষার পড়াশোনা এবং টেকনিক্যাল কলেজে নিয়মিত ক্লাস করে প্রতিটি বিষয়ে লাইব্রেরি ওয়ার্ক করে নোট তৈরি করা সব মিলিয়ে (১৯৯৩ - ১৯৯৭) এই ৫ টা বছর কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৯৭ সালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ফাইনাল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। পরীক্ষা শেষে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এটাচমেন্টে (বাস্তব প্রশিক্ষণ) যাওয়ার কিছু দিনের মধ্যে জবের সুযোগ পেয়ে যায়। একটার পর একটা জবের অফার পেতে থাকি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল (১৯৯৭ - ২০০০) সাল পর্যন্ত। 

 

টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির পরিবেশগত কারণে আমি ঠান্ডা জনিত রোগে প্রায় অসুস্থ থাকতাম, যার  ফলে ২০০১ সালের ৩১ মার্চ এক বর্ণাঢ্য কর্ম জীবনের ছন্দপতন ঘটেছিল। চিকিৎসকের পরামর্শে ইন্ডাস্ট্রিয়াল জব ছেড়ে দিয়ে শিক্ষক বাবার দেখানো পথ ধরে ২০০১ সালের ১ এপ্রিল শিক্ষকতায় যোগাদান করি। শিক্ষকতায় এসে আমার মনে হয়েছে আমার মত জীবনের সাথে যুদ্ধ করা শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি। তাদেরকে নৈতিক শিক্ষা দানের পাশাপাশি কর্মমূখী শিক্ষা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করতে লাগলাম। আমার একমাত্র চাওয়া ছিল শিক্ষার্থীরা যেন বোঝা না হয়ে মানব সম্পদে পরিণত হয়। তাই অসংখ্য শিক্ষার্থীর ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন সফল করে দীর্ঘ ৮ বছর (২০০১ -২০০৮) জমিলা খাতুন উচ্চ বিদ্যালয়, মতলব উত্তর, চাঁদপুরে কাটিয়েছিলাম। এই প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষকতা ও কম্পিউটারে কাজ করার হাতে খড়ি।

 

পারিবারিক কারণে ২০০২ সালে ২০ জুন বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স সেবিকা রানী পালের সাথে। প্রথম সন্তান নিলয় মজুমদার জন্ম ২০০৩ সালের ৬ এপ্রিল হলেও ২০০৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর একমর্মান্তি সড়ক দূর্ঘটায় তাকে হারিয়ে ফেলি। ২০০৭ সালের ১৩ জানুয়ারি স্রষ্টার অপার অনুগ্রহে ২য় সন্তান স্পর্শ মজুমদারকে আমাদের কোল আলো করে পৃথিবীতে আসে। সে কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ সকল বিষয়ে জিপিএ ৫ সহ ১২১২ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয় এবং বর্তমানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে অধ্যয়নতর। ২০১৬ সালের ২৪ জানুয়ারি আমাদের ছোট সন্তান স্পন্দন মজুমদারকে স্রষ্টা আমাদের মাঝে দেন। সে বর্তমানে ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী।


পারিবারিক কারণে ২০০৯ সালের ৭ জানুয়ারি ঐতিহ্যবাহী  চাঁদপুর জনতা হাই স্কুল এন্ড কলেজ, কুমিল্লায় যোগদান করি। কুমিল্লায় আসার পেছনে দুটি মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশি। ১ম জন আমার বন্ধু বিজয় কুমার দত্ত এবং ২য় জন আমার সহকর্মী মনিরুল ইসলাম মনির ভাই, তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। নতুন অভিভাবক হিসেবে পেয়েছিলাম অত্র প্রতিষ্ঠানের সুযোগ্য অধ্যক্ষ জনাব আবু ইসহাক স্যারকে, তিনি আমাকে সন্তানের স্নেহে দেখতেন। আমার কাজ ও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে দিয়েছিলেন পূর্ণ স্বাধীনতা ও সহযোগিতা। স্যারের আন্তরিক সহযোগিতার কারণে বিএসসি ইঞ্জিনারিং (টেক্সটাইল), সিএসইতে মাস্টার্স, বিএড ও এমএড সম্পন্ন করতে পেরেছিলাম। আমার সকল সৃজনশীল কাজেকরে আসছেন। গ বর্তমান অধ্যক্ষ জনাব জাকির হোসেন মজুমদার স্যারও সর্বাত্মক সমর্থন ও সহযোগিতা করে অনুপ্রাণিত করে আসছেন।


২০১৪ সালের জানুয়ারি ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি বিষয়ক ১৪ দিনের প্রশিক্ষণ করতে গিয়ে শ্রদ্ধেয় আমিনুল ইসলাম স্যার, শ্রদ্ধেয় সামছুদ্দিন আহম্মেদ তালুকদার স্যার, টিটিসি, কুমিল্লা এর অনুপ্রেরণায় পরিচয় হয় প্রাণের ও আবেগের জায়গা শিক্ষক বাতায়নের সাথে। বাতায়নের সদস্য হয়ে কনটেন্ট ডাউনলোড ও আপলোড করা শুরু করি। এতে অসংখ্য সৃজনশীল  বাতায়নপ্রেমী শিক্ষকের পরামর্শ পেতে থাকি। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ থেকে লব্দ জ্ঞান এবং মুক্তপাঠের কোর্সসমূহ হতে প্রাপ্ত জ্ঞান দিয়ে শুরু করি অন্য রকম এক অনুশীলন ও অধ্যবসায়। বিদ্যালয়ে শ্রেণি উপযোগী ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে ক্লাসরুমে মাল্টিমিডিয়ার সাহায্যে ক্লাস নেয়া শুরু করি। বাতায়নে অনেক ভালো ভালো কনটেন্ট দেখে ভালো কনটেন্ট তৈরি করার আগ্রহ বাড়তে থাকে। বাতায়ন প্রেমী ও পরোপকারী শিক্ষকদের পরামর্শ পেতে থাকি। বাতায়নের মাধ্যমে অনলাইনে নানা প্রশিক্ষণ পেতে থাকি। এতে আমার কনটেন্ট তৈরির  দক্ষতার সাথে সাথে কনটেন্ট প্যাডাগজিক্যাল দক্ষতা অর্জনেও সফলতা পেতে থাকি। শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল কনটেন্টের ক্লাসের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকে এখনো। ২০১৫ সালে ভারতের চেন্নাই এর NITTTR থেকে উচ্চতর আইটেক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। ২০১৬ সালে বাতায়নের মাধ্যমে এডভান্সড আইসিটির প্রশিক্ষণ সম্পর্কে জানতে পারি এবং অনলাইলে Aptitude Test পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হয়ে প্রশিক্ষণটি গ্রহণ করি। বাতায়নের ব্যানারে আইসিটি বিষয়ক নানা কাজে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করি। প্রতিটি পরিশ্রমের ফল একে একে আসতে থাকে। ২০১৭ সালে শিক্ষক বাতায়নের জেলা অ্যাম্বাসেডর নিযুক্ত হই। বাতায়নের কারণে ডিজিটালি এগিয়ে থাকায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৭ এ জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হই২০১৮ সালে সপ্তাহের সেরা কনটেন্ট নির্মাতাব্রিটিশ কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ফুল অ্যাওয়ার্ড অর্জন করি। ২০১৮ সালে কনটেন্ট কম্পিটিশনে বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে ষষ্ঠ স্থান অর্জন করি। ২০১৯ সালে শিক্ষক বাতায়ন ও এটুআই কর্তৃক আনুষ্ঠানিক ভাবে সেরা কনটেন্ট নির্মাতার সনদ লাভ করি। শিক্ষক ও শিক্ষার্থিদের আইসিটি দক্ষতা বৃদ্ধিতে শিক্ষক বাতায়নে নিরসল ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও নিরসল প্রশিক্ষণের কারণে কিশোর বাতায়নে আমাদের প্রতিষ্ঠানের ৫ জন শিক্ষার্থী ডিজিটাল কনটেন্ট প্রতিযোগিতায় পুরষ্কৃত হয়। পুনরায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৯ এ জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নর্বাচিত হই। ২০২১ সালে কোভিড-১৯ চলাকালীন অনলাইন ক্লাস ও নানা কার্যক্রমের স্বীকৃতি হিসেবে শিক্ষক বাতায়ন কর্তৃক সেরা অনলাইন পারফর্মার নির্বাচিত হয়েছি এবং পুনরায় ব্রিটিশ কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ফুল অ্যাওয়ার্ড অর্জন করি। এছাড়াও জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বহুবার পুরষ্কৃত হই। এই সকল কাজের পিছনে অনুপ্রেরণার বাতিঘর শিক্ষক বাতায়ন।


শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য এখনো চলমান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- আইসিটি ক্লাব কার্যক্রম, ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরিতে প্রশিক্ষণ প্রদান, আইসিটি রিলেটেড প্রজেক্ট তৈরি করতে লজিস্টিক সার্পোট প্রদান, ভিডিও এডিটিং এন্ড নেটওয়ার্কিং প্রশিক্ষণ প্রদান, স্কাউটস এর দল গঠন ও স্কাউটস এ আইসিটি রিলেটেড কাজে প্রশিক্ষণ প্রদান, বৃক্ষরোপণ, ক্লিন ও গ্রীন ক্যাম্পাস বিনির্মাণে  সর্বাত্মক সমর্থন ও সহযোগিতা করা, সাঁতার ও সাইকেল চালানো শিখতে উদ্বুদ্ধ করা, শিক্ষার্থীদের কিশোর বাতায়নে সম্পৃক্ত করে এর ব্যবহার নিশ্চিত করণে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করা, সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ও জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে অংশগ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্লাবের মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা, শিক্ষার্থীদের ভাষা দক্ষতা উন্নয়নে ইংলিশ লেংগুয়েজ ক্লাব গঠনে উদ্বুদ্ধ করা ও সর্বাত্মক সহযোগিতা করা, বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিযোগিতামূলক কাজে দেশের যেকোন প্রান্তের শিক্ষকদের মেন্টরিং ও উদ্বুদ্ধ করা, শিক্ষা বিভাগের সকল নির্দেশনা অনুসরণ ও সৃজনশীল কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখা, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে শিক্ষকদের লজিস্টিক সার্পোট দেওয়া এবং বাতায়নের প্রয়োজনে সর্বাত্মক সার্পোট দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষক বাতায়ন থেকে শিখেছি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা, কাজ করার অদম্য ইচ্ছে এবং কঠোর পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই।

পলাশ কান্তি মজুমদার
ইন্সট্রাক্টর
CHANDPUR JANATA HIGH SCHOOL AND COLLEGE
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম
ইমেইলঃ sp.mazumder78@gmail.com
মন্তব্য করুন